মোহাম্মদ রফিক বাংলা সংগীতের একটি নতুন নাম, যিনি তার অনন্য লোকসংগীত এবং আধুনিক সুরের মিশ্রণে শ্রোতাদের মন জয় করেছেন। কয়েক বছর ধরে পরিশ্রম করে তিনি বেশ কয়েকটি অ্যালবাম এবং একক গান প্রকাশ করেছেন, যা শ্রোতাদের কাছে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে। রফিকের সংগীত হল বাংলা লোকসংগীতের ঐতিহ্যবাহী সুর এবং আধুনিক রিদমের একটি সুন্দর সংমিশ্রণ। তার সুরে পুরনো দিনের যন্ত্র যেমন দোতারা ও একতারা ব্যবহার করা হয়, আর এর সাথে থাকে আধুনিক বিট যা নতুনত্ব আনে।
ছোটবেলায় রফিক লালন শাহের লোকগান থেকে অনুপ্রেরণা পেয়েছেন, যার সুর ও লিরিক্স তার সংগীতে অনেক প্রভাব ফেলেছে। এছাড়াও, রবি শঙ্করের শাস্ত্রীয় সঙ্গীত এবং এ.আর. রহমানের আধুনিক কাজগুলো তার সংগীতের ওপর গভীর প্রভাব ফেলেছে। তিনি পশ্চিমা সংগীত শিল্পী বব ডিলান এবং লিওনার্ড কোহেনের মতো শিল্পীদের কাছ থেকেও প্রভাবিত হন, বিশেষ করে তাদের গল্প বলার কৌশল তার গান লেখায় প্রতিফলিত হয়।
রফিকের গান লেখার প্রক্রিয়া খুবই ব্যক্তিগত। তিনি সাধারণত কোনো আবেগময় অভিজ্ঞতা থেকে একটি সুর বা লিরিক্স দিয়ে শুরু করেন এবং তারপর তা সংগীতের সম্পূর্ণ আকার দেন। তার গানগুলোতে প্রায়শই ভালোবাসা, হারানোর বেদনা এবং মানব জীবনের অনুভূতি ফুটে ওঠে। তার প্রতিটি গানে তিনি তার জীবনের অভিজ্ঞতা ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে অন্তর্ভুক্ত করেন, যা শ্রোতাদের হৃদয়ে দাগ কাটে।
রফিক বেশ কিছু জনপ্রিয় গান প্রকাশ করেছেন, যেমন "সন্ধ্যা পাখি", "হৃদয়টা সঁপে দিলাম", এবং "হৃদয়ে গোপনে"। তার সংগীত যাত্রায় শোহান আসলাম সোনু এবং খোরশেদ রাজ্জের সঙ্গে সহযোগিতা গানকে আরও সমৃদ্ধ করেছে। লাইভ পারফরম্যান্সেও রফিকের দক্ষতা অসাধারণ। তার পারফরম্যান্সগুলোতে শ্রোতাদের সঙ্গে গভীর সংযোগ স্থাপন করার ক্ষমতা রয়েছে, যা তার লাইভ শোগুলোর একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য।
আগামী দিনে রফিক তার সংগীতে আরও নতুনত্ব আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি এমন কিছু সংগীত তৈরি করতে চান, যা সাংস্কৃতিক ও ভাষার বাধা পেরিয়ে সব শ্রোতাদের কাছে পৌঁছাবে।
মোহাম্মদ রফিকের সংগীত জীবন শুরুতে নানা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে। তার প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল নিজের সংগীতকে একটি বৃহত্তর প্ল্যাটফর্মে নিয়ে আসা। লোকসংগীত ও আধুনিক উপাদানের মিশ্রণ তৈরি করেও তিনি প্রাথমিকভাবে বেশিরভাগ শ্রোতার কাছে পৌঁছাতে পারেননি। তার জন্য আরেকটি চ্যালেঞ্জ ছিল সংগীতের স্বকীয়তা বজায় রাখা। বাংলা ফোক সুরে নতুনত্ব আনতে গিয়ে সুর এবং কথার গভীরতা বজায় রাখা সবসময় সহজ ছিল না। তবুও, রফিক সেই চ্যালেঞ্জগুলো কাটিয়ে উঠতে পেরেছেন।
রফিক ভবিষ্যতে আরও নতুন ধরনের সংগীত তৈরি করতে চান, যা শুধু বাংলা সংস্কৃতির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না, বরং আন্তর্জাতিক শ্রোতাদের কাছেও পৌঁছাবে। তার ভবিষ্যৎ প্রকল্পগুলো আরও সৃজনশীল এবং অনন্য হবে বলে তিনি আশা করছেন।
সূত্রঃ বিডি24লাইভ
একে/অননিউজ24