সর্বজনীন পেনশন স্কিম নিয়ে যে বার্তা তামিমের
দেশের নাগরিকদের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে চার ক্যাটাগরিতে সর্বজনীন পেনশন স্কিম চালু করেছে বর্তমান সরকার। এই স্কিম চালুর প্রথম দিনই ব্যাপক সাড়া মিলেছে। প্রথম দিনে ৮ হাজারের বেশি গ্রাহক নিবন্ধন করেছেন। এর সঙ্গে এক হাজার ৭০০ জন আবেদনের পুরো প্রক্রিয়া শেষ করে এরই মধ্যে চাঁদা পরিশোধ করেন।
রোববার (২০ আগস্ট) মুঠোফোনভিত্তিক আর্থিক সেবাদান প্রতিষ্ঠান নগদের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে প্রকাশিত একটি ভিডিওতে এই স্কিম নিয়ে বার্তা দিয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবাল। এক মিনিট ৫৯ সেকেন্ডের সেই ভিডিও বার্তায় সর্বজনীন পেনশন স্কিমের বিভিন্ন বিষয় নিয়েও আলোকপাত করেন দেশের অন্যতম সেরা এই ওপেনার। এ সময় নগদের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর এ মিশুকও তামিমের সঙ্গে ছিলেন।
ভিডিওতে তামিম বলেন, গত ১৭ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী আমাদের সবার জন্য পেনশন স্কিমটা শুরু করেছেন। এই স্কিমের মাধ্যমে আমাদের অনেকের ভবিষ্যৎ নিশ্চিত হবে। আমরা যে যেই পেশাতেই থাকি না কেন, অবসরের পর আমাদের সবার কী হবে, সেটি নিয়ে একটা মাথাব্যথা থাকে। তবে এই পেনশন স্কিম আমাদের সেই দুশ্চিন্তা দূর করবে।
সদ্য সাবেক এই অধিনায়ক বলেন, আমাদের দেশকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য এটা একটা মাইলফলক। উন্নত রাষ্ট্র হওয়ার যেই স্বপ্ন আমরা দেখি, পেনশন স্কিমের মাধ্যমে সেই পথে আরও এক ধাপ অগ্রসর হয়েছি। আপনাদের জানিয়ে রাখি, এই বছর যারা নগদের মাধ্যমে এই পেনশন স্কিমে টাকা জমা দেবেন, এর মধ্যে কিছু কাস্টমার লাভসহ সম্পূর্ণ টাকা আপনারা পরবর্তী বছর ফেরত পেয়ে যাবেন।
উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) সকাল ১০টায় আনুষ্ঠানিকভাবে এই পেনশন কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। চারটি স্কিমে ব্যক্তির ৬০ বছর পূর্ণ হলে মিলবে এই সুবিধা।
স্কিম চারটি হলো- প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য ‘প্রবাস’, বেসরকারি কর্মচারী-প্রতিষ্ঠানের জন্য ‘প্রগতি’, স্বকর্ম ও অ-প্রাতিষ্ঠানিক কর্মীর জন্য ‘সুরক্ষা’ এবং স্বল্প আয়ের ব্যক্তিদের জন্য ‘সমতা’।
এসব স্কিমে অংশ নিতে পেনশন কর্তৃপক্ষের ওয়েবসাইটে (www.upension.gov.bd) প্রবেশ করে পেনশনার হিসেবে নিবন্ধন করতে হবে। নিবন্ধন করার জন্য জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, জন্ম তারিখ, মোবাইল নম্বর এবং ইমেইলে আইডিসহ বিস্তারিত তথ্য দিতে হবে।
এ ছাড়া এসব পেনশন স্কিমে অংশ নিতে সুবিধাভোগীকে মাসিক ভিত্তিতে চাঁদা দিতে হবে। মাসিক চাঁদা ধরা হয়েছে সর্বনিম্ন এক হাজার টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা। পেনশন সুবিধা পেতে কমপক্ষে ১০ বছর চাঁদা দিতে হবে।
পাস হওয়া ‘সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা বিল-২০২৩’ অনুযায়ী, ১৮ বছর থেকে ৫০ বছর বয়সী সব নাগরিক নির্ধারিত হারে চাঁদা পরিশোধ করে ৬০ বছর পূর্তির পর আজীবন পেনশন সুবিধা ভোগ করতে পারবে। বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশি কর্মীরা এই কর্মসূচিতে অংশ নিতে পারবেন। এ ছাড়া বিশেষ বিবেচনায় ৫০ বছরের বেশি বয়সীরাও নিরবচ্ছিন্ন ১০ বছর চাঁদা পরিশোধ করে পেনশন সুবিধা ভোগ করতে পারবেন। আজীবন বলতে পেনশনারের বয়স ৭৫ বছর পর্যন্ত বিবেচনা করা হয়েছে। তবে পেনশনে থাকাকালীন ৭৫ বছর পূর্ণ হওয়ার আগে কেউ মারা গেলে তার নমিনি মাসিক পেনশন প্রাপ্য হবেন। এ ছাড়া চাঁদাদাতা কমপক্ষে ১০ বছর চাঁদা দেওয়ার আগে মারা গেলে তার জমা করা অর্থ মুনাফাসহ নমিনিকে ফেরত দেওয়া হবে।
এর আগে, সব নাগরিককে পেনশনের আওতায় আনতে গত ২৪ জানুয়ারি সংসদে ‘সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা বিল-২০২৩’ পাস হয়।
এফআর/অননিউজ