ঢাকার সেন্ট্রাল হাসপাতালের দুই চিকিৎসককে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে সারাদেশের গাইনি চিকিৎসকরা দুদিন ব্যক্তিগত চেম্বারে রোগী দেখা ও অস্ত্রোপচার বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাদের সঙ্গে একাত্মতা জানিয়েছে চিকিৎসকদের অন্যান্য সংগঠনগুলোও। ফলে এ সময় কার্যত দেশের বেশিরভাগ মানুষ চিকিৎসকদের ব্যক্তিগত চেম্বারে চিকিৎসা সেবা পাবেন না।
সোমবার (১৭ জুলাই) ও মঙ্গলবার সারাদেশের গাইনি চিকিৎসকরা কর্মবিরতিতে থাকবেন।
তবে, সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসকরা সেবা দেবেন বলে সংগঠনগুলোর তরফ থেকে জানানো হয়েছে।
এর আগে, শনিবার (১৫ জুলাই) সেন্ট্রাল হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. শাহজাদী মুস্তার্শিদা সুলতানা ও ডা. মুনা সাহাকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে গাইনি ও প্রসূতিবিদ চিকিৎসকদের সংগঠন অবস্টেট্রিক্যাল অ্যান্ড গাইনিকোলজিক্যাল সোসাইটি অব বাংলাদেশ এ কর্মসূচি ঘোষণা করে।
এ বিষয়ে সোসাইটি অব সার্জন, বাংলাদেশের সভাপতি এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম বলেন, সোমবার ও মঙ্গলবারের কর্মসূচিতে আমরা ওজিএসবির সঙ্গে একাত্মতা জানিয়েছি। এ সময় ব্যক্তিগত চেম্বারে রোগী দেখা বন্ধ রাখব। পাশাপাশি সেখানে কোনো ধরনের অস্ত্রোপচারও হবে না। এটা শুধু চেম্বারের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা চালু থাকবে, অস্ত্রোপচারও হবে।
বাংলাদেশ সোসাইটি অব মেডিসিনের মহাসচিব অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীর বলেছেন, সোসাইটির সদস্যরা ব্যক্তিগত চেম্বারে রোগী দেখা বন্ধ রাখবেন। তবে জরুরি পরিস্থিতিতে রোগী ফেরানো হবে না। আমরা কর্মসূচি পালন করব।
চিকিৎসক সংগঠনগুলার নেতারা জানিয়েছেন, অনেক চিকিৎসক বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিক বা ডায়াগনস্টিক সেন্টারেও রোগী দেখেন। সেসব চেম্বার বন্ধ থাকলে বেসরকারি হাসপাতালেও চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হবে।
এখন পর্যন্ত সোসাইটি অব সার্জনস, বাংলাদেশ; বাংলাদেশ সোসাইটি অব মেডিসিন, বাংলাদেশ চক্ষু চিকিৎসক সমিতি; মেডিকেল অনকোলজি সোসাইটি অব বাংলাদেশ; বাংলাদেশ সোসাইটি অব অ্যানেস্থিসিওলজিস্টস ক্রিটিক্যাল কেয়ার অ্যান্ড পেইন ফিজিশিয়ান্স; অ্যাসোসিয়েশন ফর দি স্টাডি অব লিভার ডিজিজেস বাংলাদেশ; বাংলাদেশ কার্ডিয়াক সোসাইটি; সোসাইটি অব অটোলারিঙ্গোলজিস্ট অ্যান্ড হেড নেক সার্জনস অব বাংলাদেশ, সোসাইটি ফর মেডিকেল ভাইরোলজিস্টস, বাংলাদেশ; বাংলাদেশ একাডেমি অব প্যাথলজি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হেপাটোলজি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন একাত্মতা জানিয়েছে ওজিএসবির কর্মসূচির সঙ্গে।
এর আগে, প্রসব ব্যথা ওঠায় গত ৯ জুন রাত ১২টা ৫০ মিনিটে সেন্ট্রাল হাসপাতালে ডা. সংযুক্তা সাহার অধীনে ভর্তি করা হয় মাহবুবা রহমান আঁখিকে। কিন্তু ডা. সংযুক্তা সাহার বদলে ওই নারীর ডেলিভারি করতে যান ডা. মিলি।
এ সময় ডা. মিলি ওই প্রসূতির পেট কাটতে গিয়ে মূত্রনালি ও মলদ্বার কেটে ফেলেন। সঙ্গে সঙ্গে প্রচণ্ড রক্তক্ষরণ হয়ে রোগী জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। অজ্ঞান অবস্থায় সিজার করে বাচ্চা বের করা হয়। এতে বাচ্চার হার্টবিট কমে গেলে তাকে আইসিইউতে নেওয়া হয়। কিছুক্ষণ পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নবজাতককে মৃত ঘোষণা করে।
এ অব্স্থায় স্বামী ইয়াকুব আলী সেন্ট্রাল হাসপাতালের কোনো সহযোগিতা না পেয়ে পরে তার স্ত্রীকে ল্যাবএইড হাসপাতালে ভর্তি করান।
এরপর রোববার (১৮ জুন) দুপুরে রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান মাহবুবা রহমান আঁখি।
এফআর/অননিউজ
প্রধান সম্পাদক: হুমায়ুন কবির রনি
মোবাইল: ০১৭১৬-৫৩০৫১৪
ইমেইল: onnews24@gmail.com
www.onnews24.com