সিরাজগঞ্জ জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আলোচনায় যারা

নাজমুল হোসেন (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি

তফসিল ঘোষণার পরপরই সিরাজগঞ্জ জেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ পরিবার বেশ সরব। সিরাজগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে কারা প্রার্থী হচ্ছেন? ক্ষমতাসীন দল কাকে মনোনয়ন দিচ্ছে? এখন এ নিয়েই কৌতুহল সবখানে।

সদ্য ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ১৭ অক্টোবর সারা দেশের ন্যায় অনুষ্ঠিত হবে সিরাজগঞ্জ জেলা পরিষদ নির্বাচন। গত ২৩ আগস্ট নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ সময় ১৫ সেপ্টেম্বর। মনোনয়নপত্র বাছাই ১৮ সেপ্টেম্বর। প্রত্যাহারের শেষ সময় ২৫ সেপ্টেম্বর ও প্রতীক বরাদ্দ ২৬ সেপ্টেম্বর। এবার জেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হবে ইভিএমে। সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকরা এই নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করবেন।

এরই মধ্যে আগ্রহীরা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রে যোগাযোগ শুরু করেছেন। তবে এখনও অন্য কোনো দলের কারও নাম শোনা যাচ্ছে না। যদিও জেলা পরিষদে দলীয় মনোনয়ন ঠিক করবেন দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনা।

তফসিল ঘোষণার পরপরই আলোচনা চলছে কে হচ্ছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী। ইতোমধ্যে অনেকের নাম এসেছে এই তালিকায়। একাধিক ব্যক্তিই দলীয় সমর্থন চাইছেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদের জন্য। ইতোমধ্যে নিজ নিজ সমর্থন আদায়ের জন্য ঢাকায় কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছেন। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দলীয় কার্যালয় থেকে শুরু করে শহরের প্রতিটি চা-স্টলে বইতে শুরু করেছে নির্বাচনী হাওয়া। এই হাওয়া থেকে পিছিয়ে নেই গ্রাম-গঞ্জও। কে হচ্ছেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান?- এ নিয়ে চলছে গুঞ্জন। তবে এখন পর্যন্ত সরকারি দলের বাইরে অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের প্রার্থী কিংবা স্বতন্ত্র সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম শোনা যায়নি।

প্রার্থীদের তালিকায় আলোচনার রয়েছেন-সাবেক মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী,সাবেক সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান (বর্তমান প্রশাসক) বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল লতিফ বিশ্বাস, সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা কে এম হোসেন আলী হাসান, সাবেক সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু ইউসুফ সূর্য্য, বীর মুক্তিযোদ্ধা বিমল কুমার দাস, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহমান, সিরাজগঞ্জ-৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও শাহজাদপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি চয়ন ইসলাম এবং কেন্দ্রীয় মহিলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ড. জান্নাত আরা হেনরী।

জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন প্রত্যাশী কে এম হোসেন আলী হাসান বলেন, ‘আমি সারাজীবন বঙ্গবন্ধুর আদর্শে নিজেকে পরিচালিত করেছি। জীবনের সবটুকু সময় দলকে শক্তিশালী করতে নিবেদিত হয়ে কাজ করেছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা যদি আমাকে জেলা পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন দেয়। তবে দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে পারবো।’মনোনয়ন নিয়ে প্রায় একইরকম কথা বলেছেন অন্য প্রার্থীরাও।

তারা বলেন, স্থানীয় সরকার পর্যায়ের এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেলে এবং জয়ী হলে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন পরিকল্পনার অংশীদার হয়ে কাজ করব। এছাড়া বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা নির্মাণের অগ্রযাত্রাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাব।

তবে ভিন্নধর্মী কথা শোনালেন তৃণমূল ও কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে সফল নারী নেতৃত্ব কেন্দ্রীয় মহিলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ড. জান্নাত আরা হেনরী বলেন, ‘নারীর ক্ষমতায়ন হচ্ছে লিঙ্গ সমতার প্রতিচ্ছবি, যা একটি দেশের টেকসই উন্নয়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। রাজনীতিতে নারীর ৩৩ শতাংশ প্রতিনিধিত্ব থাকার কথা। সেই হিসাব বিবেচনায় আমি সমঅধিকারের জায়গা থেকে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন চেয়েছি। দলের মনোনয়ন পেলে এবং জয়ী হলে দেশের গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলোতে নারীর অধিকার আদায়ে কাজ করব।’
এছাড়াও তিনি বঙ্গবন্ধুকন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘ভিশন-২০৪১’র অগ্রযাত্রাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে নিজের মেধা ও যোগ্যতাকে কাজে লাগানোর প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।

উল্লেখ্য, জেলা পরিষদ আইন-২০০০ অনুযায়ী, সিটি করপোরেশন, উপজেলা, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, মেয়র এবং কাউন্সিলর বা সদস্যরা ভোট দিয়ে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ১৫ জন সদস্য ও পাঁচজন সংরক্ষিত সদস্য নির্বাচিত করে থাকেন। নির্বাচিত পরিষদের মেয়াদ হচ্ছে প্রথম সভার দিন থেকে পরবর্তী পাঁচ বছর।

আরো দেখুনঃ