জয়পুরহাটে এক সেনা সদস্যকে হত্যার উদ্দেশ্যে লাঠিপেটা করার ঘটনায় করা মামলায় জয়পুরহাট সদর উপজেলার আমদই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি)চেয়ারম্যানসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় র্যাব ও পুলিশের পৃথক অভিযানে তাঁদের দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত ওই দুই ব্যক্তি হলেন আমদই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান শাহানুর আলম সাবু (৫০) ও মীরগ্রামের বাসিন্দা মো. আবদুল ওহাব (৫২)।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, সেনাসদস্য রুহুল আমিনের বাড়ি আমদই ইউপির মীরগ্রামে। তিনি ছুটিতে বাড়িতে এসে প্রতিবেশী আবদুল ওহাবের সঙ্গে জমিজমা নিয়ে রুহুল আমিনের বিরোধ চলছিলো।
গতকাল বুধবার বেলা একটার দিকে চৌমুহনী বাজারের ওয়াহেদ আলীর দোকানের পেছনে রুহুল আমিন ও ওহাবের মধ্যে তর্কবির্তক ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
ওই ঘটনার এক ঘণ্টা পর আবার সেখানেই তাঁদের দুজনের মধ্যে মীমাংসাও হয়। ওই দিন বিকেল সাড়ে চারটায় স্থানীয় ইউপি সদস্য হাফিজুর রহমান মুঠোফোনে কল করে সেনাসদস্য রুহুল আমিনকে চৌমুহনী বাজারের তাঁর ব্যক্তিগত কার্যালয়ে আসতে বলেন। এরপর রুহুল আমিন তাঁর স্বজনদের নিয়ে ইউপি সদস্য হাফিজুর রহমানের ব্যক্তিগত কার্যালয়ে যান, সেখানে ইউপি চেয়ারম্যান শাহানুর আলম একটি ফাঁকা আপসনামায় স্বাক্ষর করতে রুহুল আমিনকে চাপ দেন। রুহুল আমিন ফাঁকা আপসনামায় স্বাক্ষর করেননি, এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ইউপি চেয়ারম্যান গ্রাম পুলিশের কাছ থেকে বেতের লাঠি কেড়ে নিয়ে সেনাসদস্য রুহুল আমিনকে বেধড়ক পেটাতে শুরু করেন, একপর্যায়ে রুহুল আমিন অজ্ঞান হয়ে পরলে সেখান থেকে স্বজনেরা রুহুল আমিনকে উদ্ধার করে বগুড়ার সিএমএইচে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যান।
পরে ইউপি চেয়ারম্যানসহ চারজনের বিরুদ্ধে নির্যাতিত সেনাসদস্য রুহুল আমিনের চাচা মো. মাহফুজুল হক বাদী হয়ে সদর থানায় একটি মামলা করেন।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জয়পুরহাট র্যাব ক্যাম্পের সদস্যরা জয়পুরহাট শহরের ধানমন্ডি এলাকা থেকে মামলার অন্যতম আসামি ইউপি চেয়ারম্যান শাহানুর আলমকে গ্রেপ্তার করে থানায় হস্তান্তর করেন।
এ মামলার আরেক আসামি ওহাবকে তাঁর বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
মামলার বাদী মাহফুজুল হক বলেন, ‘ইউপি চেয়ারম্যান আমার ভাতিজা রুহুল আমিনকে লাঠিপেটা করেছেন। সে গুরুতর আহত হয়ে বগুড়ার সিএমএইচে ভর্তি রয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে আমাকে মামলার বাদী করা হয়েছে।
জয়পুরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম আলমগীর জাহান বলেন, সেনাসদস্যকে লাঠিপেটার ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যানসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
পুলিশ ও র্যাব অভিযান চালিয়ে দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে।