সোনাগাজীতে কাদিয়ানি মসজিদ নিয়ে উত্তেজনা, ডিসি ও এসপিকে স্মারকলিপি
জাবেদ হোসাইন মামুন, সোনাগাজী (ফেনী) প্রতিনিধি।।
ফেনীর সোনাগাজীতে আহমদিয়া মুসলিম জামায়াত নিয়ন্ত্রিত কাদিযানি মসজিদ নিয়ে উত্তেজনা চলছে।
এ ঘটনায় বুধবার দুপুরে খতমে নবুওত সংরক্ষণ কমিটির উদ্যোগে ফেনীর ডিসি ও এসপিকে স্মারকলিপি দেয়া হয়েছে। ফেনীর জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম ও হাবিবুর রহমানের হাতে এ স্মারকলিপি তুলে দেন।
এসময় উপস্থিতত ছিলেন খতমে নবুওত সংরক্ষণ কমিটির আহবায়ক মাওলানা শিবির আহমদ, উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা মো. মোস্তফা, পৌর জামায়াতের আমির মাওলানা কালিমুল্লাহ, সোনাগাজী কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা ইব্রাহিম খলিল, ওসমানিয়া আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুল হাকিম, উপজেলা ইসলামী আন্দোলনের সেকেটারী হাফেজ মাওলানা হিজবুল্লাহ বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের উপজেলা সভাপতি মুফতি আব্দুর রহমান, জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের উপজেলা সভাপতি মুফতি হাসান উল্লাহ ও রাঘবপুর মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা শহীদুল্লাহ মমতা ম্যাম প্রমূখ। পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, উপজেলার বগাদানা ইউনিয়নের ভূঞা বাড়ির শাহ আলম ভূঞার নেতৃত্বে সাতটি পরিবার গোলাম আহমদ কাদিয়ানি অনুসারি হিসেবে দীর্ঘ দিন যাবৎ তাদের আক্বিদায় ধর্মীয় কাজ সম্পাদন করে আসছেন।
তারা বাড়ির সামনে “মসজিদে নূর সৈয়দ” নামে ১০ শতক জমি মসজিদের নামে দান করেছেন। ওই জমির একাংশে একটি টিন শেড মসজিদ ঘর নির্মাণ কাজ শুরু করেন। গত ২৯ নভেম্বর রাত সাতটার দিকে ১৫-২০জন অজ্ঞাত দুর্বৃত্ত ওই মসজিদে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করেন। এ ঘটনায় কাদিয়ানি অনুসারি শাহেদ আলম বাদী হয়ে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে সোনাগাজী মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এতে এলাকায় চরম উত্তেজনা দেখা দেয়। হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সোনাগাজী উপজেলা সেক্রেটারি মুফতি মাও, নিজাম উদ্দিন বলেন, হেফাজতে ইসলামের ১৩ দফা দাবির মধ্যে একটি দাবি হচ্ছে কাদিয়ানিদের কাফের ঘোষণা করে নিষিদ্ধ করা।
কিন্তু পুরো উপজেলার মধ্যে দুটি পরিবার হঠাৎ করে সোনাগাজীতে মসজিদ নাম দিয়ে একটি ঘর তৈরী করে মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাতের শামিল করেছেন। সাংগঠনিকভাবে ৩০ নভেম্বর শনিবার বিকালে একটি সংক্ষিপ্ত সভা শেষে সোনাগাজী মডেল থানার ওসিকে বিষয়টি অবহিত করেন। আহমদিয়া মুসলিম জামায়াতের মাও. কুমিল্লা ও নোয়াখালী জোনের আঞ্চলিক শিক্ষক এসএম আসাদুজ্জামান রাজিব বলেন, আমরা কোরআন এবং হাদিসের আলোকেই নামাজ আদায় করি। আল্লাহ এবং শেষ নবী হিসেবে হযরত মুহাম্মদ সা. কে মেনে রাসুল সা. দেখানো পথ অনুসারে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করি। শেষ জামানার ইমাম হিসেবে গোলাম মুহাম্মদ কাদিয়ানির অনুসারি। দুর্বৃত্তরা না জেনে আমাদের নামাজ ঘরে হামলা-ভাঙচুর করেছেন। সারা দেশে ১২৫টির অধিক আহমদিয়া মুসলিম জামায়াতের মসজিদ রয়েছে। আমরা প্রশাসনের কাছে ন্যায় বিচার দাবি করছি। মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা বাদুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা শাহ আলম ভূঞা বলেন, দীর্ঘদিন যাবৎ জুমার নামাজ সহ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আমরা ঘরে আদায় করে আসছি। মসজিদের নিজস্ব জমিতে আমরা মসজিদ নির্মাণ করে শেষ পর্যায়ে নামাজের প্রস্তুতি নেওয়াতে দুর্বৃত্তরা রাতের আঁধারে অতর্কিত হামলা-ভাঙচুর চালিয়েছেন। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই। সোনাগাজী মডেল থানার ওসি মো. কামরুজ্জামান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।