ফেনীর সোনাগাজীতে এই প্রথম কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে বাণিজ্যিকভাবে ভুট্টা চাষ শুরু করেছে কৃষকরা। করোনা মহামারি ক্ষতি পুষিয়ে ওঠার আগেই রাশিয়া ইউক্রেণ যুদ্ধের কারণে বৈশ্বিক খাদ্য এবং অর্থনৈতিক মন্দার কারণে খাদ্য সংকট নিয়ে উদ্বিগ্ন বিশ্ববাসী। খাদ্য সংকট মোকাবেলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা মতে বাংলাদেশে নবউদ্যোমে চাষবাসে উঠে পড়ে লেগেছে বাংলার দামাল কৃষকরা। তেমনি সোনাগাজী কৃষি অফিসের সার্বিক সহযোগিতায় চরচান্দিয়া ইউনিয়নের সোনাগাজী ডাঙি খালের উপকন্ঠে পূর্ববড়ধলী মৌজায় প্রায় তিনহাজার একর এক ফসলি জমি বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে ভুট্টা চাষের আওতায় এনেছেন কৃষকরা। সাতটি সমিতির অধীনস্থ ১৪২জন কৃষক প্রথমবার ভুট্টা চাষ শুরু করেছেন। ইতোমধ্যে কৃষকরা প্রায় দুই কোটি ৬৭ লাখ টাকা ব্যয়ও করেছেন। গবাদি পশু ও দোপায়ে দৈত্যদের অনিষ্ঠ থেকে কাঙ্খিত ফসল রক্ষা করতে প্রায় ১২ লাখ টাকা ব্যয়ে তারকাটার সীমানা প্রাচীরও দিয়েছেন তারা। শ্রমিকদের কোটি টাকার মজুরী, আধুনিক প্রযুক্তির ড্রোন দিয়ে সার ও কিটনাশক ছিটিয়ে অঙ্কিরিত ভুট্টার ছারার পরিচর্যা করে চলেছেন। দিনরাত সমান তালে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে প্রযুক্তি নির্ভর কৃষিকে প্রতিষ্ঠিত করতে নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন কৃষকরা।
কাঙ্খিত ফসল ভুট্টার জন্য হুমকি হচ্ছে বড় ফেনী নদী ও সোনাগাজী ডাঙি খালের লবণাক্ত পানি। লবণাক্ত পানির চোঁয়া পেলেই নিমিষে ধ্বংস হয়ে যাবে কৃষকদের স্বপ্নের ভুট্টা।
তাই কৃষকরা লবণাক্ত পানির প্রবেশ ঠেকাতে এবং মিঠা পানি ধরে রাখতে সোনাগাজী ডাঙি খালে অস্থায়ী বাঁধ দিয়েছেন। যে বাঁধের পানি আটকিয়ে বা ধরে রেখে ভুট্টা চাষে সেচ দিতে হবে। তাহলেই কৃষকদের কাঙ্খিত ফসল ঘরে তুলতে পারবে। অর্জিত হবে ভুট্টার বাম্পার ফলন।
কৃষকদের দাবি নদীর লবণাক্ত পানি প্রবেশ করিয়ে অবৈধভাবে মাছ শিকারে ব্যর্থ একটি ভূমিদস্যু চক্র কৃষকদের স্বপ্নের ভূট্টা ধ্বংস করতে সাংবাদিকদের ভুল তথ্য দিয়ে গণমাধ্যমে বিভ্রান্তিকর সংবাদ প্রকাশ করে চলেছেন।
যাতে করে প্রশাসন, কৃষক ও সাধারণ মানুষদের মাঝে বিস্ময় দেখা দিয়েছে। স্থানীয় কৃষক নেতা মো. শাহজাহান বলেন, কৃষক বাঁচলে, দেশ বাঁচবে, দেশ বাঁচলে, মানুষ বাঁচবে। সাতটি সমিতির অধীনে ১৪২ জন কৃষক বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে সোনাগাজীতে ভুট্টা চাষ শুরু করেছে। তাই মিঠা পানি ধরে রেখে কৃষকদের বাঁচানোর দাবি জানিয়েছেন তিনি।
অপর কৃষক নেতা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ইতোমধ্যে কৃষকদের পক্ষ থেকে পাউবো কর্তৃপক্ষ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা, সহকারি কমিশনার (ভূমি) বরাবর লিখিত আবেদন জানানো হয়েছে। প্রতি ২০ দিন পরপর মোট ৬০ দিন মিঠা পানির সেচ দিয়ে তিন হাজার একর জমির ভুট্টার স্বপ্নের ফলন ঘরে তুলে অস্থায়ী বাঁধ তারা ফের কেটে দেবেন। ওই এলাকায় কখনো বরো চাষ হয়না। সুতরাং বরোচাষে বিঘ্ন ঘটার কোন আশংকা নেই।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামরুল হাসান বলেন, ভুট্টা চাষীদের পক্ষ থেকে একটি লিখিত আবেদন পেয়েছি। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখছি।
প্রধান সম্পাদক: হুমায়ুন কবির রনি
মোবাইল: ০১৭১৬-৫৩০৫১৪
ইমেইল: onnews24@gmail.com
www.onnews24.com