ফেনীর সোনাগাজীতে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে আবুল হাশেম (৫৫) নামে এক বিএনপি কর্মীকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। সে চরদরবেশ ইউনিয়নের দক্ষিণ পশ্চিম চরদরবেশ গ্রামের হাদা ব্যপারী কোনার আব্দুর শুক্কুরের ছেলে এবং বিএনপির একজন সক্রিয় কর্মী ছিলেন।
মঙ্গলবার (২২এপ্রিল) ভোর ৬টায় চরচান্দিয়া ইউনিয়নের ওলামা বাজার-সওদগর হাট সড়কের সাজেদা ফাউন্ডেশন সংলগ্ন সড়কের ওপর রশি দিয়ে মোটরসাইকেল থেকে ফেলে মুখোশ পরা দুর্বৃত্তরা এ ঘটনা ঘটায়। এলাকাবাসী, নিহতের পরিবার ও পুলিশ জানায়, জমির বিরোধ নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে খুন হওয়া আবুল হোসেন গংদের সাথে একই গ্রামের আমির হোসেন ননা গংদের দ্বন্দ্ব চলছে। উভয় পরিবারের দ্বন্দ্বে ২০২১ সালের ৩১ মে ভোর ছয়টায় আমির হোসেন ননা মিয়ার ভাই কৃষক বেলাল হোসেনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ওই ঘটনায় আমির হোসেন ননা মিয়া বাদী হয়ে হাশেম সহ দশজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করলে হাসেম সহ অপর আসামীরা গ্রেফতার হন। দীর্ঘদিন কারাভোগের পর তারা জামিনে মুক্তি পেয়ে এলাকায় ফিরেন। জুলাই আন্দোলনে ফেনীর একটি হত্যা মামলায় আমির হোসেন ননা মিয়াকে আসামি করা হয়। ওই মামলায় নানা মিয়া আদালত থেকে জামিন নেন। এ ঘটনায় হাসেম গংকে দায়ী করেন ননা মিয়া। এ নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধ বাড়তে থাকে। মঙ্গলবার ভোর ছয়টার দিকে হাশেম মোটরসাইকেল যোগে সোনাগাজী পৌর শহর থেকে বাড়ির দিকে যাচ্ছিলেন। উল্লেখিত ঘটনাস্থলে গেলে পূর্ব থেকে ওঁৎপেতে থাকা ১০-১৫জন সশস্ত্র দুর্বৃত্ত সড়কের ওপর রশি ফেলে হাশেমের মোটরসাইকেলের গতিরোধ করলে হাশেম পড়ে যান। এসময় দুর্বৃত্তরা এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হাশেমকে গুরুতর জখম করেন। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, সেখান থেকে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে এবং পরবর্তীতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের দাউদকান্দি নামক স্থানে এ্যাম্বুলেন্সের মধ্যে হাশেম মারা যান। সোনাগাজী মডেল থানার ওসি মো.বায়েজীদ আকন জানান, হত্যা রহস্য উদঘাটনে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে। সোনাগাজী উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক ও সাবেক পৌর মেয়র জামাল উদ্দিন সেন্টু বলেন, হাশেম বিএনপির একজন সক্রিয় কর্মী ছিলেন। শুনেছি জমি সংক্রান্ত বিরোধে তাকে দুর্বৃত্তরা নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করেছে। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যম খুনিদের চিহ্নিত করা হোক।

মাসু/অননিউজ২৪