ফেনীর সোনাগাজীতে বিএনপির বিক্ষোভে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় বিএনপি নেতা সহ ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার রাতে স্ব-স্ব বাড়ি হাট-বাজার থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলেন, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সৈয়দ আলম ভূঞা, আমিরাবাদ ইউনিয়ন যুবদল নেতা কেফায়েত উল্যাহ, পৌর ছাত্রদল নেতা গিয়াস উদ্দিন হৃদয়, যুবদল নেতা হালিম উল্যাহ, তার ভাই আবদুর রহমান ও যুবদল নেতা মো. রিপন। তাদেরকে বুধবার দুপুরে পুলিশের দায়ের করা পৃথক দুটি মামলায় আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়। পুলিশ ও দলীয় সূত্র জানায়, ২৯আগস্ট সোমবার বিকালে বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিক্ষোভ সমাবেশ চলাকালে নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। এতে দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ কমপক্ষে ১০ জন আহত হন। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রায় ৬০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি করে।
এ ঘটনায় সোনাগাজী মডেল থানার এসআই সৌরজিৎ বডুয়া ও মো. মাঈন উদ্দিন বাদী হয়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টুকে প্রধান আসামি করে দলটির ১৭৭ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় এজাহার নামীয় আসামিরা হলেন- বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবদুল আউয়াল মিন্টু, সোনাগাজী উপজেলা যুবদলের আহবায়ক খুরশিদ আলম ভূঁইয়া, সোনাগাজী পৌর যুবদলের আহবায়ক ইকবাল হোসেন, সদস্য সচিব মকসুদুর রহমান রাসেল হামিদি, উপজেলা বিএনপির প্রচার সম্পাদক মাসুদ উদ্দিন মিষ্টার, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক আবু বক্কর মারুফ, পৌর বিএনপি নেতা ও সাবেক পৌর কাউন্সিলর মো ইয়াছিন, জিসাসের কেন্দ্রীয় নেতা সেলিম রেজা, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম-আহবায়ক আজাদ হোসেন খোকন, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা মির্জা মো. আবদুল্লাহ তানিম, বিএনপি নেতা বকতিয়ার চৌধুরী, সাবেক মেম্বার ওমর ফারুক, নাছির উদ্দিন, সালাহ উদ্দিন, শহীদুল ইসলাম রানা, রিয়াদ, মো. মোস্তফা, সিরাজ উদ্দিন,
ফাহিম, মোতাহের হোসেন সাবধান, জাহিদুল আলম রুবেল, আবদুল মান্নান নয়ন, মো. মুসা, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা আলা উদ্দিন, মো. শামীম, সাদ্দাম হোসেন, মো. হান্নান, মো. নোমান, করিমুল হক, আবু তৈয়ব, সাজেদুল ইসলাম নিশান, বেলায়েত হোসেন, রফিকুজ্জামান চৌধুরী, মোশারফ হোসেন ভূট্টো, বেল্লাল হোসেন খান, দুলাল হোসেন, উপজেলা শ্রমিক দলের সভাপতি হুদা মিয়া, আশিকুল ইসলাম আশিক, মোস্তফা আল হোসাইন রুমন, মোরশেদ আলম, মো. রিপন, সবুজ, প্রকাশ পান ব্যপারী সবুজ, নূরুল হক গবি, শেখ ফরিদ, মেজবাহ উদ্দিন পিয়াস, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দিন সেন্টু, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সভাপতি, মো. গিয়াস উদ্দিন সহ ৪৭ জন। অজ্ঞাত নামা ১২০/১৩০জন। তালিকা ঘুরে ফিরে পৃথক দুই মামলায় একই আসামি। এদিকে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টুসহ বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহার ও দাগনভূঞায় মিন্টুর গাড়িবহরে হামলার প্রতিবাদে মঙ্গলবার রাতে পৌরশহরে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন যুবদল ও ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা।
বিএনপি নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার ও বাড়ি বাড়ি তল্লাশির ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আলা উদ্দিন গঠন। তিনি বলেন, ক্ষমতাসীন দলকে খুশি করতে পুলিশ জেলার বিভিন্ন উপজেলায় বিএনপির নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার ও হয়রানির অভিযান শুরু করেছে। গত দুই দিনে সোনাগাজী উপজেলা থেকে ৬ নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সহসভাপতি সৈয়দ আলম ভূঞার বিরুদ্ধে থানায় কোনো মামলা নেই। তিনি রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন। অবিলম্বে গ্রেপ্তার সব নেতা-কর্মীর নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন তিনি।