ফেনীর সোনাগাজীতে ভুয়া খতিয়ান ও দলিল সুজনের অভিযোগে এক পৌর কাউন্সিলর সহ ৭জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মঙ্গলবার উপজেলার চরচান্দিয়া ইউনিয়নের ওসমান গণির ছেলে আবদুল হালিম বাদী হয়ে ফেনীর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কামরুল হাসানের আদালতে হাজীর হয়ে এ মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে ফেনীর পিবিআই'র পুলিশ সুপারকে আগামী ২০ দিনের মধ্যে সরেজমিনে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের আদেশ দিয়েছেন। মামলার আসামিরা হলেন-জমি ক্রেতা মো. বেলায়েত হোসেন, বিক্রেতা চরসাহাভিকারী গ্রামের ওজি উল্যাহর স্ত্রী মনজা বেগম, পৌর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি, পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ইমাম উদ্দিন ভূঞা, তার ভাই দলিল লেখক নাজিম উদ্দিন ভূঞা, ওজি উল্যাহর ছেলে মো. মানিক, মানিকের ছেলে ইমাম হোসেন ও চরচান্দিয়া গ্রামের আরিফুল ইসলাম বাবর।
ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিক ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, সরকার কর্তৃক বাতিলকৃত ৩৪৭ নাম্বার আর.এস.খতিয়ান সৃজন করে আসামিরা পরস্পর যোগসাজসে প্রতারণার মাধ্যমে নিজেরা ক্রেতা, বিক্রেতা, স্বাক্ষী ও সনাক্তকারী সেজে চরদরবেশ ইউনিয়নের দক্ষিণ চরদবেশ মৌজার পাঁচ একর ৪০ শতক জমির জাল দলিল সৃজন করেন। গত ৩০ জানুয়ারি মতিগঞ্জ সাব রেজিস্ট্রি অফিসে গিয়ে আসামিরা প্রতারণার মাধ্যমে দলিলটি সৃজন করেন। বিষয়টি জানতে পেরে ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিক আবদুল হালিম দলিলের সহি মুহুরী নকল সংগ্রহ করে আসামিদের শাস্তি দাবি করে মামলাটি দায়ের করেন। আবদুল হালিম অভিযোগ করেন, বহু বছর পূর্বে সরকার বাহাদুর আর.এস.৩৪৭ নং খতিয়ান বাতিল করে ২০০০-২০০৪ সাল পর্যন্ত চরসাহাভিকারী গ্রামের মতিলাল দাশ, মিনতি রানী দাশ, নিরালা বালা দাশ, সুকমার দাশ, কাজল রানী দাশ, ধীরেন্দ্র কুমার দাশ ও জয়দেব দাশের নামে পাঁচ একর ৪০ শতক জমি বন্দোবস্ত দেন। বন্দোবস্তকৃত ভূমির বর্তমান বাজার মূল্য প্রায়ে দেড় কোটি টাকা। সরকার থেকে কবুলিয়ত ও বন্দোবস্তীয় নথি পেয়ে ভূমি মালিকরা দীর্ঘ দিন ভোগ দখলে থেকে চরচান্দিয়া গ্রামের বাদী আবদুল হালিমের নিকট ২০২১ সালে পৃথক পৃথক দলিলে অপ্রত্যাহারযোগ্য পাওয়ার অব অ্যাটর্নি প্রদান করে দখল বুঝিয়ে দেন। তিনি জমিগুলো ভোগ দখলে থেকে বর্তমানে তরমুজ চাষ করেছেন। কিন্তু হঠাৎ করে আসামিরা পরস্পর যোগসাজসে জালজালিয়াতি ও প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে মাত্র ৩২ লাখ টাকায় জমিগুলো ক্রয়-বিক্রয় করেন।
বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাড. মেজবাহ উদ্দিন খান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।