ফেনীর সোনাগাজীতে মালিকপক্ষের বিরুদ্ধে ভাড়াটিয়ার সাথে বনিবনা না হওয়ায় দীর্ঘ ৪০ বছরের চলমান একটি বেকারিতে রাতের আঁধারে তালা ঝুলিয়ে ও বালি ভরাট করার অভিযোগ উঠেছে । সোনাগাজী পৌর শহরের প্রধান সড়কের পাশে রোববার রাত দুইটার দিকে বাহার বেকারিতে এ ঘটনা ঘটে। মালিক পক্ষের এমন আচরণে ব্যবসায়ীদের মাঝে নয়া আতঙ্ক শুরু হয়েছে। এতে ব্যবসায়ীদের মাঝে চরম ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী, প্রত্যক্ষদর্শী ব্যবসায়ীরা, পুলিশ ও মালিকপক্ষ জানায়, ব্যবসায়ী বাহার উল্যাহ দীর্ঘ ৪০ বছর পূর্বে পৌর এলাকার চরগণেশ গ্রামের আবু তাহেরের কাছ থেকে সোনাগাজী বাজারের প্রধান সড়কের পাশে ঘরভাড়া নিয়ে পিছনের অংশে বেকারি ও সামনের অংশে কনফেকশনারি দিয়ে ব্যবসা করে আসছেন। তিনি নিয়মিত ভাড়াও পরিশোধ করে আসছেন। এ দিকে মালিক পক্ষ মৃত আবু তাহেরের ছেলে শহীদুল ইসলাম গং উক্ত জায়গায় মার্কেট নির্মাণের প্রস্তাব করলে ভাড়াটিয়া ব্যবসায়ী গত দুই বছরের করোনায় কয়েক লাখ টাকার ক্ষতির কথা জানিয়ে মালিক পক্ষের নিকট পুনরায় মার্কেট নির্মাণের পর পুরাতন ভাড়াটিয়া হিসেবে মার্কেটে একটি দোকানঘর ভাড়া চান। এতে মালিক পক্ষের সাথে ভাড়াটিয়া ব্যবসায়ী বাহার উল্যাহর মতবিরোধ দেখা দেয়। এক পর্যায়ে মালিক পক্ষে শহীদুল ইসলাম পৌরসভায় মেয়র বরাবর লিখিত আবেদন করেন। আবেদনের প্রক্ষিতে দীর্ঘ শুনানী শেষে পৌর মেয়র বিষয়টি মীমাংসার সার্থে লিখিত রায় প্রদান করেন। পৌরসভার রায়ে উল্লেখ ছিল ভাড়াটিয়াকে উচ্ছেদ করা হলে মালিক পক্ষ ভাড়াটিয়াকে ক্ষতিপূরণ বাবদ পাঁচ লাখ টাকা প্রদান করতে হবে। অন্যথায় নতুন মার্কেট নির্মাণ করা হলে পুরাতন ভাড়াটিয়া হিসেবে তাকে একটি দোকানঘর দিতে হবে। এর বিনিময়ে ব্যবসায়ী বাহার উল্যাহ মালিক পক্ষকে অগ্রিম ২০লাখ টাকা জামানত দিতে হবে। পৌর মেয়রের রায়কে উপেক্ষা করে মালিক পক্ষ স্থানীয় মাস্তানদের ম্যানেজ করে রাতের আঁধারে বেকারিতে তালা এবং বালি ভরাট করে বেকারি ও কনফেকশনারিটি বন্ধ করে দেন। ব্যবসায়ী বাহার উল্যাহ বেকারি ও দোকানে বিপুল পরিমাণ আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন বলে জানিয়েছেন।
তিনি আরো বলেন, ৪০ বছর ধরে আধুনিক বিস্কিট তৈরির কারখানা, প্রায় ১৫ লাখ টাকা খুদ্র ব্যবসায়ীদের কাছে বকেয়া, বিগত দুই বছরে করোনা মহামারিতে কয়েক লাখ টাকার ক্ষতি এবং মালিক পক্ষের কাছে তিনি জামানত বাবদ ১০লাখ টাকা পাওনা রয়েছেন। এসব বিষয়ে সমজোতা না করে মালিক পক্ষ জোরপূর্বক রাতের আঁধারে এমন কান্ড ঘটিয়েছেন। এ ব্যপারে জায়গার মালিক পক্ষ শহীদুল ইসলাম বলেন, ভাড়াটিয়ার সাথে চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পর তাকে বারবার ঘর ছেড়ে দেয়ার জন্য বলা হলেও তিনি ঘর ছেড়ে না দেয়ায় তারা এমন কান্ড ঘটিয়েছেন।
সোনাগাজী মডেল থানার ওসি মুহাম্মদ খালেদ দাইয়্যান বলেন, বিষয়টি তিনি শুনেছেন তবে এ ব্যপারে লিখিত কোন অভিযোগ পাননি। অভিযোগ পেলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।