ফেনীর সোনাগাজীতে ৩৫০ ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার গেজেট বাতিল ও ঘর বরাদ্দ বাতিলের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন সাবেক উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমাণ্ডার ও চরচান্দিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মফিজুল হক পাটোয়ারী। বুধবার দুপুরে সোনাগাজী প্রেসক্লাবের অস্থায়ী কার্যালয়ে তিনি এ সংবাদ সম্মেলন করেন। তিনি বলেন দেশেকে ভালোবেসে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে পরিবার পরিজন ছেড়ে মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ি। মুক্তিযুদ্ধ শেষে সোনাগাজী উপজেলায় লালমুক্তি বার্তায় ৪০০জন মুক্তিযোদ্ধার গেজেট প্রকাশিত হয়। পরবর্তীতে ফ্যাসিস্ট আ.লীগ সরকারের আমলে দফায় দফায় বেড়ে বর্তমানে ৬২১জন মুক্তিযোদ্ধার গেজেট প্রকাশিত হয়েছে। এরমধ্যে ৩৫০জনই ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা। যারা সরকার থেকে ভাতা ভোগ করছেন। সোনাগাজী উপজেলায় প্রায় ৮০জন মুক্তিযোদ্ধা বীর নিবাস ঘর পেয়েছেন। ঘর প্রাপ্তদের মধ্যে ২০জনই ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা। প্রতিমাসে এসব ভুয়া মুক্তিযোদ্ধারা রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে জনগণের ট্যাক্সের কোটি কোটি টাকা ভাতা নিচ্ছেন। যে টাকার মালিক রাষ্ট্রের জনগণ। প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা রাষ্ট্রের সব ধরণের সুবিধা ভোগ করলেও আমার আপত্তি থাকবেনা। কিন্তু ভুয়া মুক্তিযোদ্ধারা যখন এদেশের খেটে খাওয়া মানুষের ঘাম ঝরানো টাকার ভাতা ও ঘর পেয়ে থাকেন, তখন একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে খুব বেশি কষ্ট পাই। প্রায় এক বছর পূর্বে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের দায়ীত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা ফারুকী আজমের সঙ্গে সরাসরি সাক্ষাৎ করে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। কিন্তু অদ্যবধি পর্যন্ত সে অভিযোগের কোন তদন্ত হয়নি। তিনি আরো বলেন, গরু ছাগলের বাচ্ছা প্রস্রবের মত প্রতি কয়েক বছর পরপর মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে সাবেক উপজেলা কমাণ্ডার সৈয়দ নাসির উদ্দিন ও সাবেক জেলা কমাণ্ডার আবদুল মোতালেব সহ অসাধু ব্যক্তিরা ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা বাড়িয়েছেন এবং সরকারি গেজেট ভুক্ত হয়েছে। আমি চাই, সেনা গোয়েন্দাদের মাধ্যমে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা করা হোক। ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের গেজেট ও ঘর বরাদ্দ বাতিল করে রাষ্টীয় কোষাগারে ওই টাকা ফেরৎ নেওয়ার জন্য প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুসের নিকট দাবি জানাচ্ছি। ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে সরকার কোন ব্যবস্থা না নিলে তিনি হাইকোর্টে রিট সহ আইনি লড়াই চালিয়ে যাবেন বলে জানান। ২৪'র গণ-অভ্যুত্থানের পর ফ্যাসিস্ট আ.লীগ সরকারের চাপিয়ে দেয়া ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের গেজেট বর্তমান সরকারের আমলে থাকতে পারেনা। যদি ভুয়া মুক্তিযোদ্ধারা রাষ্ট্রীয় সুবিধা ভোগ করতেই থাকে তাহলে প্রকৃত শহীদ ও বীর মুক্তিযুদ্ধের আত্মা কষ্ট পাবে। সংবাদ সম্মেলনে বীর মুক্তিযোদ্ধা অবসরপ্রাপ্ত হাবিলদার আহসান উল্যাহ উপস্থিত ছিলেন।
jn