আগামী ২০ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিতব্য সোনাগাজী পৌরসভা নির্বাচনকে ঘিরে জমে উঠেছে নির্বাচনি প্রচারণা। বিএনপি বিহীন নির্বাচনি মাঠে প্রার্থীদের বিরামহীন প্রচারণায় ভোটারদের মাঝে উৎসবের আমেজ দেখা দিয়েছে। সকাল-সন্ধ্যা গণসংযোগে গিয়ে ভোটারদেন মন জয়ে মরিয়া হয়ে উঠেছে প্রার্থীরা। মেয়র পদে ৪জন ও সংরক্ষিত সাধারণ ওয়ার্ডে নারী কাউন্সিলর পদে ৪জন এবং সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ২৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। দুপুর ২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত মাইকের আওয়াজে সরগরম থাকে পৌর এলাকা।
নৌকা প্রতিককে জেতাতে আ.লীগ ও সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীরা একাট্রা হয়ে মাঠে নেমেছেন। নির্বাচনি প্রচারণার অংশ হিসেবে বুধবার বিকাল তিনটায় ক্ষমতাসীন দল আ.লীগ মনোনীত নৌকা প্রতিকের প্রার্থী অ্যাডভেকেট রফিকুল ইসলাম খোকনের সমর্থনে মিছিল সমাবেশ করা হয়েছে। উপজেলা আ.লীগ ও সহযোগি সংগঠনের উদ্যোগে আয়েজিত একটি মিছিল উপজেলা আ.লীগ কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হয়ে মিছিলটি পৌর শহরের প্রধান প্রধান সড়কগুলো প্রদক্ষিণ শেষে জিরোপয়েন্টে (শূন্য রেখায়) সমাবেশে মিলিত হয়। উপজেলা আ.লীগের সভাপতি অধ্যাপক মফিজুল হকের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক, চরচান্দিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন মিলনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেলা আ.লীগের দফতর সম্পাদক, ফেনী সদর উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শহীদ উল্যাহ খোন্দকার, প্রচার সম্পাদক, আমিরাবাদ ইউপি চেয়ারম্যান জহিরুল আলম জহির, মেয়র প্রার্থী, বর্তমান মেয়র, উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম খোকন, উপজেলা আ.লীগের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন বাহার, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান জোবেদা নাহার মিলি, পৌর আ.লীগের সভাপতি সেলিম পাটোয়ারী, সাধারণ সম্পাদক আবু তৈয়ব বাবুল, উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক, চরদরবেশ ইউপি চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম ভূট্টো, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ফারুক হোসেন ও উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আবদুল মোতালেব চৌধুরী রবিন প্রমুখ।
এসময় বক্তারা বলেন, সোনাগাজীতে আ.লীগ সরকারের আমলে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। শতভাগ বিদ্যুতায়ন করা হয়েছে। এ ছাড়াও শান্তি, সম্প্রীতি ও সহবস্থানের রাজনীতি প্রতিষ্ঠায় আ.লীগ নেতাদের ভূমিকা অপরিসিম ছিল। আ.লীগ সরকারের আমলে সোনাগাজী পৌরসভাকে প্রথম শ্রেণিতে উন্নীত করা হয়েছে। সোনাগাজী পৌরসভায় সড়ক বাতি, ড্রেনেজ, বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ সহ রাস্তাঘাটের ব্যাপক উন্নয়ন করা হয়েছে। এরপরও বিএনপি জামায়াতের এক শ্রেনির লোক আছে আ.লীগ সরকারের এসব তাদের চোখে পড়েনা। তারা সব সময় গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকে। তাই আগামি নির্বাচনে যাতে ষড়যন্ত্রকারীরা কোন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হতে না পারে সেজন্য আ.লীগের সকল নেতাকর্মীকে সজাগ থাকতে হবে। আগামী পৌরসভা নির্বাচনে যাতে কোন ষড়যন্ত্রকারী শেখ হাসিনার নৌকা প্রতিকের প্রার্থীর ক্ষতি করতে না পারে, সে ব্যাপারে সবাইকে অতন্দ্র প্রহরী হিসেবে জাগ্রত থাকতে হবে। সকল বিভেদ ভুলে নৌকার পক্ষে সবাই মাঠে থাকার ঘোষণা দিয়ে বলেন, আ.লীগ প্রার্থী অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম খোকনের গলায় জয়ের মালা পরিয়ে ঘরে ফিরতে হবে। নৌকা প্রতিকের জয়ের মাধ্যমে ষড়যন্ত্রকারীদের দাঁতভাঙা জবাব দেয়ার ঘোষণাও দেন তারা। অন্যদিকে সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি জানিয়ে বুধবার সকালে নিউ ফুড গার্ডেন রেস্টুরেন্টে এক সংবাদ সম্মেলেন করেন মোবাইল ফোন প্রতিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু নাছের। তিনি বলেন বুধবার পর্যন্ত বড় ধরণের কোন অঘটন না ঘটলেও পৌর নাগরিকরা সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে সংশয়ে আছে। ইতোমধ্যে কেন্দ্র দখলের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে আ.লীগের নেতাকর্মীরা। নিজেকে আওয়ামী পরিবারের সদস্য দাবি করে তিনি বলেন ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা তার সমর্থকদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। তাই তিনি নির্বাচন কমিশনের কাছে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি জানান। সর্বশক্তি নিয়ে মাঠে থাকার ঘোষণাও দেন তিনি।
অপরদিকে ভোটারদের আতঙ্ক কাটিয়ে ভোট কেন্দ্রে যেতে সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে পুলিশ সুপার খোন্দকার নূরুন্নবীর নেতৃত্বে বুধবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত র্যাব ও পুলিশ সদস্যরা ভোটেকেন্দ্র পরিদর্শণ করেছেন। সোনাগাজী মডেল থানার ওসি সাজেদুল ইসলাম বলেন সকল প্রার্থী শান্তিপূর্ণভাবে সমান তালে প্রচারণা চালাচ্ছে। সকল ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা এডাতে পুলিশ প্রস্তুত রয়েছে। সোনাগাজী পৌরসভায় মোট ভোটার ১৫ হাজার ৯৮৫জন। এর মধ্যে নারী ভোটার ৭হাজার ৮৫৮ এবং পুরুষ ভোটার ৮ হাজার ১২৭ জন। উক্ত নির্বাচনে আ.লীগের একক প্রার্থী অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম খোকন ছাড়াও আরো তিন জন প্রার্থী মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন ইসলামী আন্দোলনের হাত পাখা প্রতিকের হাফেজ হিজবুল্লাহ, স্বতন্ত্র মোবাইল প্রতিকে আবু নাছের এবং জগ প্রতিকে শেখ সেলিম।
আহসানুজ্জামান সোহেল/অননিউজ24