নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে বারদী ইউনিয়নের শান্তিরবাজার এলাকা থেকে পাশ্ববর্তী আড়াইহাজার উপজেলায় সার পাচারকালে ১শ বস্তা সার ১০ কার্টুন কীটনাশক উদ্ধার করেছে এলাকাবাসী। সোমবার রাতে উপজেলার বারদী ইউনিয়নের চেঙ্গাকান্দি এলাকায় থেকে উদ্ধার করা হয়। এসময় ট্রলার চালক ইসমাইল ও হেলপার জয়নালকে আটক করে।
মঙ্গলবার (১ফেব্রুয়ারি) সকালে সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী অফিসার তৌহিদ এলাহী ও বারদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লায়ন মাহবুবুর রহমান বাবুল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সত্যতা পান।
জানা যায়, উপজেলার বারদী ইউনিয়নে নাসিরউদ্দিন ভূঁইয়র মালিকানাধীন ‘মেসার্স ভূঁইয়া টেডার্স’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে সরকারিভাবে সারের ডিলার নিয়োগ দেওয়া হয়। নাসিরউদ্দিন ওই ইউনিয়নের কৃষকের চাহিদা অনুযায়ী সার সংগ্রহ করেন। সার সংগ্রহ করা হলেও স্থানীয় কৃষকরা তার দোকান থেকে চাহিদা মতো সার পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে সপ্তাহে তিন চার দফায় তার দোকানে সার আসলেও এ সার উধাও হয়ে যায়। এ নিয়ে কৃষকদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়। কৃষকরা সার উধাও হওয়ার রহস্য উদঘাটন করতে তৎপর হয়ে পড়েন। গত সোমবার রাতে সারের ডিলার নাসিরউদ্দিন ভূঁইয়ার দোকান থেকে ১শ বস্তার সার ও ১০ কার্টুন কিটনাশাক ট্রলারে উঠানোর সময় কৃষকরা দেখতে পান। পরবর্তীতে স্থানীয় ইউপি সদস্য ইসমাইল হোসেন সরকারকে অবগত করে ট্রলারটি আড়াইহাজার উপজেলার কালাপাহাড়িয়া যাওয়ার পথে অর্ধ শতাধিক কৃষক একত্রিত হয়ে চেঙ্গাকান্দি এলাকায় ট্রলারসহ দুজনকে আটক করে। ঘটনার পর রাতেই বারদী ইউনিয়ন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা রিয়াদ হাসান ঘটনাস্থলে গিয়ে সারগুলো তার জিম্মায় নেন।
চেঙ্গাকান্দি গ্রামের কৃষক জাকির হোসেন জানান, নাসিরের দোকানে সার আনতে গেলে সার পাওয়া যায় না। মাঝে মধ্যে খারাপ ব্যবহার করে। সারের অভাবে আমাদের ইরি ধান গাছ মরে যাচ্ছে। এ সার অন্য জায়গায় এভাবে রাতের অন্ধকারে পাঁচার করে দিলে আমরা সার তো পাবোই না।
বারদী ইউনিয়ন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা রিয়াদ হাসান জানান, এ ইউনিয়নের ডিলার শুধুমাত্র এ ইউনিয়নের কৃষকের সার ও কিটনাশকের চাহিদা পুরন করবেন। এ সার পাশ্ববর্তী কোন ইউনিয়নের কৃষকের কাছে বিক্রি করতে পারবেন না। এ সার যেহেতু অন্য উপজেলার যাচ্ছে সেহেতু এটাকে পাচার বলা হবে। এটা অন্যায়। কোনভাবেই এমন কাজ করা যাবে না। দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় কৃষকদের সার না পাওয়ার অভিযোগ আমাদের কাছে রয়েছে।
বারদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লায়ন মাহবুবুর রহমান বাবুল বলেন, কৃষক বাঁচলে দেশ বাচবে এ স্লোগান প্রধানমন্ত্রী। এ কৃষকের ফসল বাঁচাতে হলে সঠিক সময়ে তাদের কাছে সার ও কিটনাশক পৌঁছাতে হবে। আমি চেয়ারম্যান হওয়ার পর থেকেই এ এলাকার কৃষকরা সার পাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন। এভাবে অন্য উপজেলায় সার পাঠালে কৃষকরা সার পাবেন কিভাবে?। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনের কাছে দাবি করছি।
অভিযুক্ত নাসিরউদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমার বিরুদ্ধে যারা বক্তব্য দিয়েছে এগুলো আমার লেবার না। এ সার আমার দোকান থেকে যায়নি।
সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী অফিসার তৌহিদ এলাহী বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ঘটনা সত্যতা পেয়েছি। সার গুলো জব্দ করে উপজেলা নেওয়া হয়েছে। এ পাচারের সঙ্গে জড়িত ডিলারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রধান সম্পাদক: হুমায়ুন কবির রনি
মোবাইল: ০১৭১৬-৫৩০৫১৪
ইমেইল: onnews24@gmail.com
www.onnews24.com