নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে অবস্থিত বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনে মাসব্যাপী লোকজ উৎসব জমে উঠেছে হয়েছে। এতে প্রতিদিন ক্রেতা দর্শনার্থীরা কারুশিল্পীদের তৈরি করা বিভিন্ন ধরনের কারুপণ্য কিনছেন। গ্রাম বাংলার হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যকে যুগ যুগ ধরে টিকিয়ে রাখতে ও বর্তমান প্রজন্মের কাছে পরিচিত করতে সরকার নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করছে। এ মেলা গ্রামবাংলার হারিয়ে যাওয়া অতীতের সাংস্কৃতিক ও ঐতিহ্য বহন করে। প্রতি বছরের মতো এবারও ১৮ জানুয়ারি মেলা শুরু হয়েছে চলবে ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।
মেলা প্রাঙ্গণে শুক্রবার ঘুরে দেখা যায়, রাজধানী ঢাকা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজারো দর্শনার্থীর আগমন ঘটছে। শিক্ষা সফর, বনভোজন, আনন্দ ভ্রমণ, ঘুরে আসি, পিকনিক ইত্যাদি বিভিন্ন ব্যানারে দলবেঁধে হাজার হাজার মানুষ যাচ্ছে। উৎসবের আমেজে মেতে উঠেছে লোক ও কারুশল্প ফাউন্ডেশন ভেতর ও বাইরের আশপাশের এলাকা।
জানা যায়, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের হারিয়ে যাওয়া লোকজ ও কারুশিল্পের ঐতিহ্যকে পুনরুদ্ধার, সংরক্ষণ, গবেষণা, প্রদর্শন এবং পুনরুজ্জীবিত করাই এ মেলার মূল উদ্দেশ্য। এই মেলায় পল্লী অঞ্চলের কারুশিল্পীদের প্রদর্শনীতে গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী শোলা শিল্প, শখের হাঁড়ি, নকশিকাঁথা, জামদানি শাড়ি, শতরঞ্জি, কাঠ, বেত ও বাঁশের কারুশিল্প, টেপাপুতুল, শীতলপাটি, তামা-কাঁসা পিতলের কারুপণ্য ও পাটের কারুশিল্পসহ হস্তশিল্পের নানা ধরণের আকর্ষণীয় সামগ্রীর সমাহার ঘটেছে। এছাড়াও নাগরদোলা, বায়োস্কোপ,পুতুল নাচসহ মনমাতানো বাহারি ধরনের বিনোদন রয়েছে। রয়েছে বাহারি রকমের খাবারের আয়োজন। এবারের মেলায় কারুশিল্পীদের প্রদর্শনীসহ ১০০ টি স্টল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। প্রতিদিন সকাল নয়টা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত লোকজ মেলা দর্শনার্থীদের জন্য খোলা থাকছে।
দর্শনার্থীদের বিনোদন জন্য রয়েছে মঞ্চ কাপানো নাচ, গান, বাউল সঙ্গীত। এটি আমাদের দেশের একমাত্র লোক ও কারুশিল্প মেলা লোকজ উৎসব। হারিয়ে যাওয়া লোক ও কারুশিল্পকে সুন্দর ভাবে এখানে উপস্থাপন করা হয়।
কারুশিল্পী সীমা রানী পাল জানান, মেলায় যখন অনেক দর্শণার্থী আসে তখন আমাদের অনেক ভালো লাগে, আবার বেচাকেনাও ভালো হয়।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মেলায় আসা দর্শনার্থী ও অংশগ্রহণকারীদের নিরাপত্তার জন্য সবরকমের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সিসি ক্যামেরার আওতায় মেলার নিরাপত্তা নিশ্চিতের কাজ করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন পরিচালক এস এম রেজাউল ইসলাম বলেন, আমরা আশা করছি, এবছরও এটা অত্যন্ত আনন্দঘনভাবে মেলা শেষ হবে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবারের মেলায় দর্শনার্থীও সমাগম বেশী বলে মনে করেন তিনি।