হেমন্তের শিশির ভেজা ভোরে বিস্তীর্ণ মাঠে শীতের আগাম সবজি তুলতে ব্যস্ত কৃষক। সবুজ পাতার মাঝে সোনালী ফুল দেখে কৃষকের মুখে হাসি। বিষমুক্ত হওয়ায় এখানকার সবজির ব্যাপক চাহিদা। ফুলকপি ছাড়াও লাউ, পুঁইশাক ও লাল শাকসহ শীতের নানা রকম বিষমুক্ত সবজি বাজারজাত করেন তারা। নারায়ণগঞ্জ সোনারগাঁয়ে কীটনাশক এবং রাসায়নিক সার ছাড়াই চাষ করা হচ্ছে সবজি। বিষমুক্ত এসব সবজি কিনতে আসেন দূর-দূরান্তের ক্রেতা। এখান থেকে সবজি যায় চট্টগ্রাম ও ঢাকার রাজধানীর পাশের বাজারগুলোতে।
এসব সবজি উৎপাদনে ব্যবহার করা জৈব সার। এ ছাড়া কীটনাশকের পরিবর্তে জৈব বলাইনাশক কৌশল অবলম্বন করা হচ্ছে। সোনারগাঁ হাড়িয়া চক্রবর্তী পাড়া গ্রাম জুড়ে নিরাপদ এই সবজি চাষ করে লাভবান হচ্ছেন কৃষক।
কৃষক আব্দুল গাফফার বলেছেন, বিষমুক্ত ফুলকপি চাষ করে আমরা লাভবান হচ্ছি। আবর্জনা পঁচিয়ে আমরা নিজেরা সার তৈরি করি। ফুলকপির পাতাও সার তৈরি করতে ব্যবহার করা হয়।
কৃষাণী নাজমা আক্তার বলেন, জৈব বলাইনাশক কীটনাশক দিয়ে পরিবেশবান্ধব এবং নিরাপদ সবজি উৎপাদন করছি। চার থেকে পাঁচ বছর যাবৎ এ ভাবে চাষাবাদ করে আমরা লাভবান হচ্ছি।
এ সবজি বিষমুক্ত হওয়ায় দূর-দূরান্তের ক্রেতাদের মধ্যেও এর বেশ চাহিদা রয়েছে। তারা বলেছেন, এ ফুলকপি বিষমুক্ত হওয়ায় আমরা প্রতিদিন ঢাকা থেকে আসি এটি ক্রয় করতে। এর চাহিদা বেশি এবং দামও ভালো।
রাসায়নিক সার এবং কীটনাশক ব্যবহার না করায় উৎপাদন ব্যয় ২৫ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। সেই সঙ্গে বিষমুক্ত সবজির চাহিদাও বেশি।
সোনারগাঁ উপজেলার উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ অফিসার আবু নাসের বলেছেন, কৃষকেরা এ সবজি উৎপাদনে শুধু জৈব বলাইনাশক ব্যবহার করে থাকে। কীটনাশক ব্যবহার না করার ফলে এরা আর্থিকভাবেও লাভবান হয়। কারণ কীটনাশক ব্যবহার করলে উৎপাদন খরচ বেড়ে যায়।
উপজেলা কৃষি অফিসার আফরোজা সুলতানা বলেছেন, এখন নিরাপদ খাদ্যের দিকে মানুষের নজর এসেছে। সোনারগাঁ রবি মৌসুমে শীত কালীন সবজি আবাদ হবে ২২০০ হেঃ এর মধ্যে ফুলকফি ১৫০ হেঃ।
যদি ক্রেতারা জানতে পারে যে এখানে নিরাপদ সবজি পাওয়া যায়, অবশ্যই তারা একটু বেশি মূল্যে হলেও এটি সংগ্রহ করবে।