নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে বিয়ের দাবিতে অবস্থান নেয়া রোকসানা আক্তারকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলার প্রধান আসামি মনিরসহ দুই জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব সদস্যরা।
শনিবার (২৩ জুলাই) দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজীনগরে র্যাব ১১ এর সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র্যাব ১১ এর অধিনায়ক লে. কর্ণেল তানভীর মাহমুদ পাশা।
গত ১৮ই জুলাই সোনারগাঁয়ের সাদিপুর ইউনিয়নের হিনানপুর দেওয়ান বাড়িতে বিয়ের দাবিতে অবস্থান নেয়া এক সন্তানের জননী স্বামী পরিত্যক্তা রোকসানা আক্তারকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ২০ জুলাই নিহতের ছোট ভাই মোঃ এনামুল হক বাদি হয়ে সোনারগাঁ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
২২ জুলাই রাতে অভিযান চালিয়ে মামলার প্রধান আসামি সোনারগাঁওয়ের বাইশটেকীর মৃত রাইজউদ্দিন ওরফে রাজু মিয়ার ছেলে মো. মনির হোসেন ও মো. আমির হোসেনকে মুন্সীগঞ্জ জেলার গজারিয়া থানার ভবেরচর এলাকা হতে গ্রেফতার করে র্যাব।
প্রাথমিক অনুসন্ধান ও গ্রেফতারকৃত আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ভিকটিম রোকসানা আক্তারের স্বামীর সাথে তার বিগত ৭-৮ বছর পূর্বে নিয়ম মোতাবেক বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। তারপর থেকে ভিকটিম তার একমাত্র ছেলেকে নিয়ে ছোট ভাই মো.এনামুল হকের বাড়িতে বসবাস করে আসছিল। সে জীবিকার জন্য উপজেলার সাদিপুর ইউনিয়নের হিনানপুর গ্রামের দেওয়ান বাড়িতে জামদানী শাড়ী তৈরির কাজ করতেন। সেই সুবাদে উক্ত বাড়ীর মৃত রাজু মিয়ার ছেলে মনির হোসেন (৪৫) এর সঙ্গে ভিকটিম রোকসানা বেগম (৩২) এর দীর্ঘদিনের বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক গড়ে উঠে। একপর্যায়ে ভিকটিম বিয়ের ব্যাপারে মনির হোসেনকে চাপ দিলে আসামি মনির তার মেয়েকে বিয়ে দেয়ার পর বিয়ে করবে বলে আশ্বাস দেয়।
গত ১৫ জুলাই মনিরের মেয়ের বিয়ে হলে, ভিকটিম গত ১৮ জুলাই বিয়ের দাবিতে মনিরের বাড়িতে অবস্থান নেয়। এসময় মনিরের বাড়ির লোকজন তাকে একাধিকবার বাড়ির বাইরে টেনে হিঁচড়ে বের করে দেয়। ভিকটিম তার অনড় থাকায় মনির হোসেন, তার ভাই গোলজার, খোকন ওরফে খোকা, ছেলে রানা, মনিরের স্ত্রীসহ অন্যান্য আসামিরা ভিকটিমকে লোহার পাইপ, লাঠিসোঠা দিয়ে পিটিয়ে মারাক্তকভাবে রক্তাক্ত করে আহত করে। মুমূর্ষ অবস্থায় ভিকটিমকে মনির হোসেন ও তার সহযোগীরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক ভিকটিমকে মৃত ঘোষনা করেন। ভিকটিমের মৃত্যুর সংবাদ জানার পর মনির ও তার সহযোগীরা লাশ রেখেই হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যায়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামিরা এ হত্যাকান্ডের কথা স্বীকার করেছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। এ হত্যা মামলার অধিকতর তদন্তের জন্য গ্রেফতারকৃত আসামিদের তদন্তকারী কর্মকর্তার নিকট হস্তান্তর কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। হত্যাকান্ডে সাথে জড়িত অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।