সোনারগাঁয়ে বিয়ের দাবিতে অনসন করা এক নারীকে পিটিয়ে হত্যা

নজরুল ইসলাম শুভ, সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ)।।

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে বিয়ের দাবিতে বাড়িতে অবস্থান নেওয়া স্বামী পরিত্যক্তা এক নারীকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে পরকীয়া প্রেমিক ও তার স্বজনদের বিরুদ্ধে। গতকাল সোমবার দুপুরে উপজেলার সাদিপুর ইউনিয়নের হিনানপুর দেওয়ান বাড়ি গ্রামের মনিরের বাড়িতে ওই নারীকে পিটিয়ে মারাক্তকভাবে আহত করার পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে সে মারা যায়।

নিহতের নাম রোকসানা আক্তার (৩৮)। পরে লাশ ঢামেকে রেখেই পরকীয়া প্রেমিক মনির হোসেন, তার স্ত্রী ও ছেলে রানা মোবাইল ফোন বন্ধ করে আত্মগোপনে চলে যায়। নিহত ওই নারীর লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফাঁড়ি ইনচার্জ বাচ্চু মিয়া। এ ঘটনায় সোনারগাঁ থানায় হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। এর আগে পিটিয়ে আহত করার ঘটনায় নিহতের মা শাফিয়া বেগম বাদি হয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।

তালতলা ফাঁড়ি পুলিশের উপ-পরিদর্শক(এসআই) মো. রাজু আহম্মেদ জানান, উপজেলার সাদিপুর ইউনিয়নের হিনানপুর দেওয়ান বাড়ি গ্রামের মৃত রাজু মিয়ার ছেলে মনির হোসেনের সঙ্গে বাইশটেকি গ্রামে মৃত মনু মিয়ার মেয়ে স্বামী পরিত্যক্তা রোকসানা আক্তারের পরকিয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। দীর্ঘদিন ধরে এ পরকিয়া সম্পর্কে বিয়ের প্রলোভনে একাধিকবার উভয়ের মধ্যে শারিরিক সম্পর্ক গড়ে উঠে। এবিষয়টি উভয়ের পরিবারসহ এলাকার লোকজন অবগত রয়েছেন। গতকাল সোমবার ভোরে প্রেমিক মনিরের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে অবস্থান নেয় রোকসানা ।

এসময় মনিরের বাড়ির লোকজন তাকে একাধিকবার বাড়ির বাইরে টেনে হেচড়ে বের করে দেয়। রোকসানার তার অবস্থানে অনড় থাকায় দুপরে মনির হোসেন, তার ভাই গোলজার, খোকন ওরফে খোকা, ছেলে রানা, মনিরের স্ত্রীসহ ৭-৮জনের একটি দল লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে মারাক্তকভাবে রক্তাক্ত করে আহত করে। মূমূর্ষ অবস্থায় রোকসানাকে মনির হোসেন, তার ছেলে রানা ও মনিরের স্ত্রী ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে নিয়ে যায়। পথে রোকসানার মৃত্যু হয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর জরুরি বিভাগের চিকিৎসক রোকসানাকে মৃত ঘোষনা করে। এ খবর পেয়ে মনির হোসেন ও তার পরিবারের লোকজন লাশ রেখেই মোবাইল বন্ধ করে হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যায়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দক্ষিণ বাইশটেকি গ্রামের একাধিক নারী পুরুষ জানিয়েছেন, মনির হোসেনের বাড়ির লোকজনের একাধিক বিয়ের রেওয়াজ রয়েছে। সকাল থেকে অবস্থান নেওয়া ওই নারীকে মনির হোসেন ও তার বাড়ির লোকজন একাধিকবার পিটিয়েছে। মূমূর্ষ অবস্থায় ঢাকা নিয়ে গেছে। পরে জানতে পারলাম সে মারা গেছে।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফাঁড়ি ইনচার্জ বাচ্চু মিয়া জানান, রোকসানা নামের এক নারীর লাশ মর্গে রাখা হয়েছে। যারা এ নারীকে হাসাপাতালে নিয়ে এসেছে তারা মৃত্যুর সংবাদ পাওয়ার পর হাসপাতাল থেকে পালিয়ে গেছে।

সোনারগাঁও থানার ওসি মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান জানান, এক নারীকে পিটিয়ে আহত করার ঘটনায় একটি অভিযোগ গ্রহন করা হয়েছে। ওই নারীর মৃত্যু হওয়ার কারনে মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তর হবে। হত্যার খবর শুনেছি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।

আরো দেখুনঃ