বাগমারা (রাজশাহী)।।
সৌদিতে অগ্নিকান্ডে নিহত রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার বারুইপাড়া গ্রামের রুবেল হোসাইন মোবাইল ফোনে প্রেম করে ভিডিও কনফারেন্সে বিয়ে করলেও সাক্ষাতে প্রিয়তমা স্ত্রীর মুখ দেখা হয়নি তার। স্বামীর অনাকাঙ্খিত মৃত্যু কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না রুবেলের নববিবাহিতা স্ত্রী মরিয়ম আক্তার। তিনি বলেন, তিন বছর আগে সৌদি আরব যান রুবেল। তারপর থেকেই মোবাইল ফোনে কথা বলতে বলতে রুবেলের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল তার। সেই প্রেম বাস্তবে রুপ দিতে চার মাস আগে ভিডিও কনফারেন্সে পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ে হয়। আর মাত্র এক মাস পর বাড়িতে এসে তাকে স্ত্রীর মর্যাদা দিয়ে ঘরে নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেই আশা আর পুরন হলনা তাদের। দীর্ঘদিন পর দৌদি আরব থেকে স্বামী রুবেল ফিরলেন বটে, তবে লাশ হয়ে।
বুধবার বাগমারা উপজেলার বারুইপাড়া গ্রামে রুবেল হোসাইনের কফিনবন্দি লাশ আনা হয়। গত ১৪ জুলাই সৌদি আরবের রিয়াদ থেকে প্রায় ৩৫০ কিলোমিটার দূরে মদিনা আল খলিল এলাকার একটি ফার্নিসার (সোফা) কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে বাংলাদেশের ৯ জন শ্রমিক নিহত হন। নিহতদের মধ্যে চারজনই রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় যোগীপাড়া ইউনিয়নের বারুইপাড়া ও বড় মাধাইমুড়ি কাতিলা গ্রামের বাসিন্দা। তারা হলেন- হামিরকুৎসা ইউনিয়নের বারুইপাড়া গ্রামের জফির উদ্দিনের ছেলে রুবেল হোসাইন,
একই গ্রামের জমির উদ্দিনের ছেলে মোহাম্মদ সাজেদুল ইসলাম, শাহাদৎ হোসাইনের ছেলে আরিফ হোসেন এবং বড় মাধাইমুড়ি কাতিলা গ্রামের আনিসুর রহমান সরদারের ছেলে ফিরোজ আলী সরদার। ঘটনার ২৬ দিন পর বুধবার সৌদি আরব থেকে মোহাম্মদ সাজেদুল ইসলাম, আরিফ হোসেন, রুবেল হোসাইন ও ফিরোজ আলী সরদারের কফিনবন্দি লাশ গ্রামে পৌঁছলে পরিবার ও স্বজনদের আহাজারিতে গ্রামের আকাশ-বাতাস ভারি হয়ে উঠে। গ্রামজুড়ে চলে শোকের মাতম।
বাগমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এএফএম আবু সয়িায়ান বলেন, গত মঙ্গলবার রাতে নিহত চার শ্রমিকের লাশ সৌদি আরব থেকে বিমানযোগে ঢাকা আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে পৌঁছে। সেখান থেকে সরকারি উদ্যোগে এ্যাম্বুলেন্সে করে তাদের লাশ নিজ গ্রামে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়। সব আয়োজন শেষে রাত ৮ টার দিকে পারিবারিক গোরস্থানে চার শ্রমিরে লাশের দাফন কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে বলে ইউএনও জানিয়েছেন।
এসকেডি/অননিউজ