স্বামীকে না পেয়ে স্ত্রী ও দুই শিশুকে থানায় আটকে মামলা দিলেন ওসি!
অনলাইন ডেস্ক।।
কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলায় তুচ্ছ ঘটনা কেন্দ্র করে মারামারির ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তিকে না পেয়ে তার স্ত্রী ও দুই শিশুকে থানায় আটকিয়ে রেখে মামলা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ঈদগাঁও থানার ওসির বিরুদ্ধে।
সোমবার (২০ মার্চ) সকালে উপজেলার জালালাবাদ ইউনিয়নের ফরাজীপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ইতোমধ্যে এ বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, গত সোমবার ওই ইউনিয়নের ফরাজীপাড়া এলাকায় প্রতিবেশী মৃত নজীর আহমেদের ছেলে শাহজাহান ও মৃত আবু শামার ছেলে হারুন অর রশীদের মধ্যে নলকূপের পানি চলাচল নিয়ে বাকবিতণ্ডা হয়। এ সময় শাহাজাহান হারুন অর রশীদকে নখ কাঁটার যন্ত্র দিয়ে আঘাত করলে শাহজাহান আহত হন। ঘটনার পর পরই কোনো অভিযোগ ছাড়াই ঈদগাঁও থানার এসআই গিয়াস উদ্দিন ফোর্স নিয়ে বিকেলে শাহজাহানের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় শাহজাহানকে না পেয়ে তার স্ত্রী ফরিদা ইয়াসমিন, দুগ্ধজাত এক শিশু এবং দুই বছরের এক শিশুকে থানায় নিয়ে গিয়ে আটকিয়ে রাখেন।
এদিকে থানার হাজতে মা ও দুই শিশুকে আটকিয়ে রাখার ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে গেলে তোলপাড় শুরু হয়। একপর্যায়ে ওসি আইনগতভাবে বাঁচার জন্য ভুক্তভোগী হারুন অর রশীদের স্বজনদের থানায় ডেকে নিয়ে নাটকীয় কায়দায় মামলা রেকর্ড করে আদালতে প্রেরণ করেন বলেও জানান স্থানীয়রা।
ঈদগাঁও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জালালাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইমরুল হাসান রাশেদ জানান, ঘটনাটি মীমাংসাযোগ্য। পুলিশ কোনো অভিযোগ ছাড়াই অতিরঞ্জিত করে স্ত্রী ও নিষ্পাপ দুই শিশুকে বেআইনিভাবে থানায় নিয়ে যায়। এটি অমানবিক নিষ্ঠুরতা।
এ বিষয়ে এসআই গিয়াস উদ্দিন জানান, মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্ত শাহজাহানের স্ত্রীকে আটক করে আনা হয়েছে। পরে ভুক্তভোগী হারুন অর রশীদের পরিবার মামলা করলে সে মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়।
এ বিষয়ে ঈদগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. গোলাম কবির জানান, ওই ঘটনায় বাদী মামলা করেছেন। তাই মামলার আসামিদের আটক করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
কক্সবাজার পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুল ইসলাম জানান, ওসি আমাকে জানিয়েছেন মারামারির সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ভুক্তভোগীকে আশঙ্কাজনক অবস্থা দেখতে পায়। এ ঘটনা কেন্দ্র করে ভুক্তভোগীর আত্মীয়স্বজনরা অভিযুক্ত হারুন ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ হয়ে যায়। এ সময় জনরোষ থেকে বাঁচাতে অভিযুক্ত ব্যক্তির স্ত্রী ও বাচ্চাদের থানায় নিয়ে যাওয়া হয় বলে জানিয়েছেন ঈদগাঁও থানার ওসি।
ফরহাদ/অননিউজ