হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টানদের সঙ্গে মুসলমানদের সম্পর্ক হবে মানবিক- সোনাগাজীতে ড. মাওলানা এনায়েত উল্লাহ আব্বাসী

জাবেদ হোসাইন মামুন, সোনাগাজী (ফেনী) প্রতিনিধি, ২২ডিসেম্বর

ড. মাওলানা এনায়েত উল্লাহ আব্বাসী বলেছেন, হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টানদের সঙ্গে মুসলমানদের সম্পর্ক হবে মানবিক। মাথায় টুপি ও গাগড়ি দিয়ে মন্দিরে গিয়ে মূর্তি পূজায় শামিল হওয়া নয়। হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টানদের প্রতি আমাদের সহমর্মিতা থাকবে। কিন্তু তাদের মূর্তি পাহারা দেওয়া আমাদের কাজ নয়। তাদের মূর্তি পাহারা দিবে রাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। মুসলমানদের মূর্তিপূজা থেকে দূরে রাখতে হযরত ইব্রাহিম আ. মূর্তি ভেঙে দিয়েছিলেন। কিন্তু আজকে ভোটের রাজনীতিতে এসে আমরা সেই মূর্তি পাহারার নামে কতইনা নাটক করছি।

হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টানেরা তাদের ধর্ম পালন করবেন, সেটা ত্দের স্বাধীনতা। তাদের নিরাপত্তা দিবে রাষ্ট্র। আমরা মুসলমানেরা তাদের পূজায় যাবোনা, মূর্তিও ভাঙবোনা। তারা তাদের ধর্ম পালন করুক। আমাদের কোন আপত্তি নাই।

স্বাধীনতার ৫৪ বছরেও কি ভারতকে আপন করতে পেরেছেন। তারা সীমান্তে মানুষ মারে, বাংলাদেশের মানুষদের জিম্মি করে। তাদের আধিপত্য বাদের বিরুদ্ধে কথা বললে তাকে বাঁচতে দেননা। সর্বশেষ বাংলাদেশের অকুতোভয় দুঃসাহসী সৈনিক ইনকিলাব মঞ্চের আহবায়ক শহীদ শরীফ ওসমান হাদীকে যারা খুন করেছে তাদেরকে আশ্রয় দিয়েছেন। এটা থেকেও মুসলমানদের শিক্ষা নিতে হবে। দুই-চারটা ভোট আর নগদ টাকার জন্য আমাদের ঈমান নষ্ট করতেছি। রাজনীতি করা তোষ না। রাজনীতি একটি আদর্শের ওপর রাজনীতি করতে হবে। কোরআন ও সুন্নাহর মাধ্যমে রাজনীতি করতে হবে। তাহলেই ইসলামি রাষ্ট্র কায়েম করা যাবে। আমরা রাজনীতি করতে নিষেধ করছিনা।

আপনি জানেন একটি বিষয় হারাম, সেটি হারাম জেনে যদি আপনি ভক্ষণ করেন তাহলে আপনি জেনেশুনে হারাম ভক্ষণ করলেন। ভোটের হিসাব পশ্চিমাদের তৈরি একটি প্রক্রিয়া। আর এ অোটের জন্য আপনারা হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টানদের মন্দিরে দৌড়াদৌড়ি করবেন এটা হতে পারেনা।

সোনাগাজী মারকাযুল কোরআন হিফয মাদরাসর হাফেজদের গাগড়ি প্রদান অনুষ্ঠানে ২২ডিসেম্বর সোমবার বিকালে সোনাগাজী সকারি মোহাম্মদ ছাবের মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি আরো বলেন, হযরত মুহাম্মদ সা. এর আদেশ, নিষেধ এবং বিধিনিষেধ অনুসরণের নামই হচ্ছে ইসলাম। আজ থেকে দেড় হাজার বছর পূর্বে রাসুল সা. মহান আল্লাহর হুকুমকেই পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠিত করে গেছেন। তিনি যে বিধিনিষেধ আমাদের জন্য রেখে গেছেন সেটিই হচ্ছে ইসলাম। আজকে কিন্তু আমরা রাসুল সা. এর সেই আদর্শ থেকে দূরে সরে গেছি। আমাদের বাংলাদেশিদের উচিৎ ইসলাম শিখতে হলে ফিলিস্তিন যেতে হবে। কারণ বিগত ৮০ বছর ধরে ফিলিস্তিনের লক্ষ লক্ষ মুসলমান জীবন দিলেও পবিত্র বায়তুল মাকদাসের চাবি ইহুদিদের হাতে তুলে দেননি। তারা কোথায় আর আমরা কোথায়।

ফ্যাসিস্ট আ.লীগ সরকারের বাংলাদেশের কিছু আলেমকে কম দামে কেনা হয়েছিল। তারা সরকারে কাছে বিক্রি হয়ে সরকারের দালালিতে ব্যস্ত থাকায় এদেশের মুসলামনদের ওপর পতিত সরকার এমন নির্যাতন করতে পেরেছিলেন। ইসলামে গানবাজনা করা হারাম। বাউলরা বা যারা গানবাজনা করেন তাদের আমরা বাধা দেইনা। তারা তাদের গানবাজনা করুন। আমাদের কোন সমস্যা নাই। কিন্তু বাক-স্বাধীনতার নামে মহান আল্লাহর শানে বেয়াদবী করবেন।,সেটা কোন মুসলমান মেনে নেবেনা। যা খুশি যা বলা মানে বাক স্বাধীনতা নয়। মহান আল্লাহর শানে বেয়াদবির কারণে আমরা বাউল শিল্পী আবুলের ফাঁসি চাই। ইসলাম একটি পরিপূর্ণ জীবন বিধান। কিন্তু ইসলামের নামে সুফিবাদের কোন স্থান নাই।

ইসলাম গ্রহন করার পর অন্য ধর্মে ভালো কিছু থাকলেও ইসলামের জন্য গ্রহণ করা যাবেনা। আমাদের দেশের মৌলভী সাহেবেরা ভোটের জন্য কল্যাণকর রাষ্ট চায়। কিন্তু আমরা চাই ইসলামি রাষ্ট্র। আমরা সবাই ওষুধ খাই, কিন্তু মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুদের যেমন দাম নাই, তেমনি হযরত মুসা, ঈসা নবীদের যামানার বিধানেরও মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ সা. এর জীবন বিধান কেয়ামত পর্যন্ত শেষ হবেনা।

মারকাযুল কোরআন হিফয মাদরাসার মুহতামিম হাফেজ মাও. বেলায়েত হোসেনের সভাপতিত্বে উক্ত অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন সোনাগাজী ইসলামিয়া কামিল মাদরাসার আরবী অধ্যাক মাও. আবুল কাসেম।

আরো দেখুনঃ