দিনাজপুরের হিলিতে কালভার্টের মাঝখানে ঢালাই ভেঙ্গে পড়ায় মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে সেই কালভার্টটি । বিকল্প কোন সড়ক না থাকায় সেই কালভার্টের উপর বাশের চাটাই দিয়ে চরম ঝুকি নিয়ে চলাচল করছে শত শত গ্রামবাসী। এতে করে যেকোন সময় ওই স্থানে ভ্যান রিক্সা পড়ে গিয়ে দুর্ঘটনার আশংকা করছেন অনেকে, অবিলম্বে কালভার্টটি নির্মানের দাবী জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
হিলির বোয়ালদাড় ইউনিয়নের খাট্টাউছনা বাজার থেকে জাংগই গ্রামে যাওয়ার একমাত্র সড়কটির মাঝপথের সড়ক সংলগ্ন গ্রাম খাটেচড়া গ্রাম। সেই গ্রাম থেকে বাহির হয়ে প্রধান সড়কে ওঠার সংযোগস্থল হিসেবে স্থাপিত কালভার্টি ঢালাই ভেঙে পড়ে শুধুমাত্র রড বাহির হয়ে বেহাল অবস্থায় পরিনত হয়েছে। খাটেচড়া গ্রামে বসবাসরত কয়েকশ পরিবারের মানুষজনকে গ্রাম থেকে স্থানীয় হাটবাজারসহ উপজেলা সদরসহ বিভিন্নস্থানে যাওয়ার প্রধান সড়ক এটি। গ্রামবাসী ভাঙা কালভার্টের উপর বাঁশের চাটাই দিয়ে কোনরকম করে যাতায়াত করছে।
খাটেচড়া গ্রামের আব্দুল লতিফ ও ইসমাইল হোসেন জানান, আমাদের খাটেচড়া গ্রামের মানুষজনের যাতায়াতের একমাত্র রাস্তাই এটি। এছাড়া গ্রাম থেকে বাহির হয়ে শহরে যাওয়ার আর কোন বিকল্প সড়ক নেই যে ওই রাস্তা দিয়ে বাহির হবো হাট বাজারসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাজ করবো। বিকল্প সড়ক না থাকায় বাধ্য হয়ে ওই ভাঙা কালভার্টের উপর দিয়ে প্রতিদিন মোটর সাইকেল, বাইসাইকেল, ভ্যান রিক্সা নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। এতে করে ওই পথ দিয়ে চলাচলকারীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। দিনের বেলা যাই হোক কোনরকম চলাফেরা করতে পারলেও রাতের বেলায় এই কালভার্টের উপর দিয়ে চলাচল করা অসম্ভব হয়ে উঠেছে। অনেকে ভাঙা অংশ দেখতে না পেয়ে ছোটবড় দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। এছাড়া অসুস্থ্য রোগী পরিবহনের জন্য আরো চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়।বর্ষার দিনে এই দুর্ভোগ আরও চরমে পৌছে যায়। দীর্ঘ দিন থেকেই কালভার্টের এমন অবস্থার কারণে আমাদের চরম ঝুকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে যার কারনে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। তাই এলাকাবাসীর দুর্ভোগ লাঘোবে কালভার্টটি ঠিক করাসহ আমাদের গ্রামে প্রবেশের এই কাঁচা সড়কটি পাকা করণের দাবি জানাচ্ছি।
বোয়ালদাড় ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সভাপতি ও আসন্ন ইউপি নির্বাচনে নৌকা প্রতিকের মনোনয়ন প্রত্যাশী ছদরুল ইসলাম জানান, প্রায় দশ বছর আগে ওই স্থানে কালভার্টটি নির্মাণ করা হয়েছে। আজ প্রায় এক বছর আগে থেকে এর ঢালাই ঝরে পড়া শুরু হয়। পরবর্তীতে গ্রামবাসী নিজেরা চলাচলের জন্য ভাঙা কালভার্টের উপর বাঁশের চাটাই দিয়ে কোন রকম করে চলাচল করছে। এতে করে গ্রামবাসীর দুর্ভোগ যেমন বাড়ছে তেমনি ঝুঁকিও বাড়ছে।তাই কালভার্টটি যেন দ্রুত সময়ের মধ্যে সংস্কার করা হয় জন্য ইতিমধ্যে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কে অবগত করা হয়েছে। তিনি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নতুন কালভার্ট তৈরি করে দিবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।
বোয়ালদাড় ইউপি চেয়ারম্যান মেফতাহুল জান্নাত বলেন, আমার ইউনিয়নের খাট্টাউছনা বাজার থেকে খাটেচড়া গ্রামে যাওয়ার প্রধান সড়কের কালভার্টটি ভেঙে গিয়েছে।বর্তমানে কোন বরাদ্দ না থাকায় আপাতত সেটি মেরামতের জন্য কোন কাজ করতে পারছি না। তবে বরাদ্দ আসলে সেখানে একটি নতুন কালভার্ট নির্মাণ করা হবে।
হাকিমপুর উপজেলা চেয়ারম্যান হারুন উর রশিদ জানান, বোয়ালদাড় ইউনিয়নের খাটেচড়া গ্রামের কালভার্ট ভেঙে পড়ার বিষয়টি আমাকে অবহিত করেছে। ওই গ্রামের মানুষের চলাচলের প্রধান সড়ক এটি, কালভার্টটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ায় মানুষজনকে খুব দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। আমি বিষয়টি জানার পরে ইতোমধ্যেই উপজেলা প্রকৌশলীকে এডিপির অর্থায়ন থেকে নতুন করে কালভার্টটি নির্মাণের জন্য বলে দিয়েছি। আশা করছি খুব দ্রুতই সেখানে নতুন কালভার্ট নির্মানের কাজ শুরু হবে। এতে করে ওই গ্রামের মানুষের যে দুর্ভোগ সেটি লাঘব হবে।
আহসানুজ্জামান সোহেল/অননিউজ24