হিলিতে ভিজিএফের চাল বিতরনে অনিয়মের অভিযোগ ১০ কেজির পরিবর্তে দেওয়া হচ্ছে ৮ কেজি চাল

হিলি প্রতিনিধি

দিনাজপুরের হিলিতে উপজেলার খট্টামাধপাড়া ইউনিয়নে পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে গরীব অসহায় দুস্থ্য মানুষের মাঝে চাল বিতরনে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ১০ কেজি করে চাল বিতরনের কথা থাকলেও চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ৮ কেজি থেকে ৯ কেজি করে চাল দেওয়ার অভিযোগ। চাল কম দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে গরীব অসহায় দুস্থ্য উপকারভোগীরা। তবে অভিযোগ অস্বিকার করেছেন সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান। এবিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার।

শুক্রবার সরেজমিন হিলির খট্টামাধবপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, পবিত্র ঈদুর ফিতর উপলক্ষ্যে গরীব অসহায় দুস্থ্য মানুষদের মাঝে ভিজিএফের চাল বিতরন করা হচ্ছে। ট্যাগ অফিসারের উপস্থিতিতে চাল বিতরনের কথা থাকলেও সেখানে দেখা মেলেনি কোন ট্যাগ অফিসারের। কাটাতে চাল ওজন করে দেওয়ার পরিবর্তে দেওয়া হচ্ছে প্লাস্টিকের বালতিতে করে। এদিকে চাল পাওয়া কয়েকজনের চাল পুনরায় কাটায় ওজন করে সেগুলো ৮ কেজি থেকে ৯ কেজি করে পাওয়া যায়। পরে সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে তাদের বালতির চাল ওজন করে ৯ কেজি ৬শ গ্রাম করে পাওয়া যায়।

চাল পাওয়া সিরাজুল ইসলাম বলেন, আজ শুক্রবার সকালে আমি ও আমার ভাইরার পাওয়া দুটি কার্ডের চাল ইউনিয়ন পরিষদে তুলতে আসি। পরে চাল তুলে বাহিরে ওজন করে দেখি ১০ কেজি করে দেওয়ার কথা থাকলেও ৯ কেজি করে সর্বমোট ১৮ কেজি চাল হয়েছে। তারা চাল ওজন না করে বালতিতে করে চাল দিচ্ছে।

চাল পাওয়া সুমন বলেন, সরকার আমাদের জন্য ১০ কেজি করে চাল বরাদ্দ দিচ্ছে আর তারা ৮ কেজি করে চাল দিচ্ছে আমরা ২ কেজি করে চাল কেন কম নিব আমাদের ১০ কেজি করে চাল বুঝিয়ে দিক। আর তারা কাটা দিয়ে নই বালতিতে করে চাল দিচ্ছে আর মানুষের মুখ দেখে চাউল দিচ্ছে কারো বালতি ভরে দিচ্ছে কাউকে আবার কম দিচ্ছে। কোনটাতে ৮ কেজি করে হচ্ছে কোনটাতে সাড়ে ৮ কেজি ৯ কেজি এরকম ওজন হচ্ছে।

চাল পাওয়া ফরহাদুল ইসলাম বলেন, আজ চাল দিছে সেই চাল নিয়ে গিয়ে পার্শ্বে মেপে দেখি ৮ কেজি ওজন হয়েছে। যেখানে চালের ওজন ১০ কেজি হওয়ার কথা ছিল সেটি পুরন হয়নি। তারা তাদের ইচ্ছামত চাল দিচ্ছে জনগনের কোন দাম নেই এখানে তারা যা বলছে যা করছে তাই আমাদের শুনতে হচ্ছে তারা আমাদের কোন কথা শুনছেনা।

অপর চাল পাওয়া আরজেনা বেগম বলেন, ঈদ উপলক্ষ্যে চেয়ারম্যান চাল দিলো সেই চাল নিয়ে গিয়ে মেপে দেখি সাড়ে ৮ কেজি হয়েছে। চাল নিয়ে আসতে আসতে ওখানেই দেড় কেজি চাল নাই। চাল কম হলে আমরা গরীব মানুষ খাবো কিভাবে চলবো কিভাবে।

খট্টামাধবপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান কাওসার রহমান বলেন, পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে আমার ইউনিয়নে ৪ হাজার মানুষের মাঝে বিতরনের জন্য ৪০ মেট্রিকটন চাল বরাদ্দ পেয়েছি সেই অনুযায়ি চাল বিতরন করা হচ্ছে। তবে আমার এখানে চাল কম দেওয়ার কোন সুযোগ নেই আর ৮ কেজি সাড়ে ৮ কেজি হওয়ার সুযোগ নেই। যেহেতু চার হাজার মানুষকে চাল বিতরন করা হচ্ছে আর যেহেতু ঈদ চলে আসছে যার কারনে আমাদের হাতে সময় কম রয়েছে। সেই কারনে শুক্রবার ছুটির দিনেও চাল বিতরন কার্যক্রম চালাচ্ছি। হয়তোবা দুএকশো গ্রাম চাল কমবেশি থাকতে পারে কিন্তু আমরা চেষ্টা করতেছি ১০ কেজির যেন কম না হয়। এত মানুষকে চাল বিতরন করা হচ্ছে তার মধ্যে দুএকটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা থাকতেই পারে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

হাকিমপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নূর-এ আলম বলেন, ঈদ উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে প্রত্যেককে ১০ কেজি করে চাল দিবে এটাই নিয়ম। কিন্তু কেন চাল কম দেওয়া হচ্ছে এবিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

আরো দেখুনঃ