দিনাজপুরের হিলিতে ঠান্ডা গরম আবহাওয়ার কারনে হঠাৎ করেই জ্বর, ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। এসব রোগে বেশী আক্রান্ত হচ্ছেন শিশু ও বয়স্করা, চিকিৎসা নিতে ভিড় করছেন হাসপাতালে। রোগীদের চাপে চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন হাসপাতাল কতৃপক্ষ নিরাপদ পানি পানের পরামর্শ তাদের।
দিনাজপুরের সীমান্তবর্তী এলাকা হিলিতে গত একসপ্তাহ ধরেই বিরাজ করছে বৈরি আবহাওয়া দিনে প্রচন্ড গরম আবার রাতে ঠান্ডা, আবার মাঝে মাঝে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। আবহাওয়ার পরিবর্তনজনিত এমন কারনে হঠাৎ করেই বেড়েছে জ্বর, ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া রোগীর সংখ্যা। বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন শিশু ও বয়স্করা, চিকিৎসা নিতে হাসপাতালে ভিড় করছেন রোগীরা। গত একসপ্তাহ ধরে গড়ে প্রতিদিন ৫০ থেকে ৬০জন করে এসংক্রান্ত রোগী ভর্তি হচ্ছেন হাসপাতালে, সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সরা।
হাসপাতালে শিশু নিয়ে আসা পপি আকতার বলেন, আমার মেয়েয় নিউমোনিয়া হওয়ায় মেয়েকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছি গত সাতদিন ধরে। হঠাৎ করে আমার মেয়ে খাওয়া দাওয়া ছেড়ে দেয়, কান্নাকাটি করে, খেলাধুলা করছিলনা শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে অবস্থা খুব বেশী খারাপ হচ্ছিল। পরে হাসপাতালে নিয়ে এসে ভর্তি করি তখন চিকিৎসকার দেখে বলে যে নিউমোনিয়া হয়েছে। এখন চিকিৎসা করায় বাচ্চা মোটামুটি অনেকটা সুস্থ্য রয়েছে, খেলাধুলা করছে। দিনে প্রচন্ড গরম, আবার রাতে ঠান্ডা এর মাঝে বৃষ্টিপাত হচ্ছে এই কারনে এমনটি হতে পারে।
হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা নাজমা বেগম বলেন, হঠাৎ করে পাতলা পায়খানা শুরু হয়, এর সাথে পেটব্যাথা, টয়লেটে যেতে যেতে শরীর অত্যান্ত দুর্বল হয়ে পড়ে বাধ্য হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। হঠাৎ করে গরম ঠান্ডা এমন বিরুপ আবহাওয়ার কারনে এই অবস্থা হয়েছে।হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা শেরেগুল ইসলাম বলেন, আমার গত কয়েকদিন ধরে পাতলা পায়খানা জ্বর যার কারনে আমার অবস্থা খুব খারাপ হয়ে গেছিল বাধ্য হয়ে এখন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি।
হাসপাতালে দায়ীত্বরত নার্স নির্মলা কিসপট্টা বলেন, হাসপাতালে রোগীর চাপ এতো বেশী যে চিকিৎসা দিতে আমাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। এখনই গরম এখনই ঠান্ডা, তারপরে খাওয়া দাওয়াতে অনেকের সমস্যা হচ্ছে সেজন্য ডায়রিয়া, জ্বর, শিশুদের নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেশী হচ্ছে। তাদের চিকিৎসা দিতে গিয়ে আমরা নিজেরাও অনেক সময় অসুস্থ্য হয়ে যাচ্ছি। গড়ে প্রতিদিন ৫৫ থেকে ৬০জন রোগী এই সমস্ত রোগ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন।
হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা.তৌহিদ আল হাসান বলেন, হঠাৎ করেই হিলিতে জ্বরের রোগীর সংখ্যা বেড়ে গিয়েছিল। এর মুল কারন হলো আবহাওয়ার পরিবর্তন হচ্ছে, হঠাৎ করে প্রচন্ড গরম, তারপরে আবার বৃষ্টি হচ্ছে এতে করে ছোট শিশুরা বেশী করে আক্রান্ত হচ্ছেন। তাদের মাঝেই কিছু কিছু শিশুর নিউমোনিয়া লক্ষ্য করা যাচ্ছে কিন্তু সেভাবে ছড়ায়নি তবে জ্বর বেশী ছিল। আর ডায়রিয়ার প্রকোপটা হঠাৎ করে গরমের কারনে বেরে গেছে। আমরা এটি রোধে মানুষের মাঝে জনসচেতনতা বাড়াতে কাজ করছি, কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে নির্দেশ দিয়েছি যারা সেবাগ্রহিতা আসছে তাদের নিরাপদ পানি পান করেন, পানি ফুটিয়ে পান করেন এসব পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
আহসানুজ্জামান সোহেল/অননিউজ24।।
প্রধান সম্পাদক: হুমায়ুন কবির রনি
মোবাইল: ০১৭১৬-৫৩০৫১৪
ইমেইল: onnews24@gmail.com
www.onnews24.com