দিনাজপুরের হিলিতে সড়কে কুড়িয়ে পাওয়া দুই লাখ টাকা পুলিশের নিকট জমা দিয়ে সততার এক অনন্য নজির স্থাপন করলেন হাফিজার রহমান(৫৭)নামের এক ভ্যান চালক। পরে পুলিশ টাকার প্রকৃত মালিক আবুল বাশারের নিকট সেই টাকা তুলে দিয়েছেন। টাকা ফেরত পেয়ে খুশি হয়ে টাকার মালিক তাকে ১০হাজার টাকা পুরস্কার হিসেবে প্রদান করেন। এদিকে টাকার প্রকৃত মালিক টাকা ফিরে পাওয়ায় খুশি ভ্যান চালক হাফিজার রহমান।
বুধবার দুপুরে হিলি স্থলবন্দরের চারমাথা মোড়ে ভ্যান চালিয়ে যাবার সময় সে সড়কে এক লাখ টাকার করে দুটি বান্ডিল কুড়িয়ে পান।ভ্যান চালক হাফিজার রহমান হিলির বড় জালালপর গ্রামের মৃত মোজাফ্ফর রহমানের ছেলে।
ভ্যানচালক হাফিজার রহমান বলেন, আমি টেম্পু স্টান্ড থেকে যাত্রী নামিয়ে ভ্যান নিয়ে হিলি স্থলবন্দরের চারমাথার দিকে আসছিলাম। এসময় চারমাথা মোড়ে আর্মি হোটেলের সামনে আসলে সড়কে ১হাজার টাকা নোটের দুই বান্ডিল টাকা কুড়িয়ে পায়। পরে আশেপাশের দোকানদারকে টাকা পাওয়ার বিষয়টি অবগত করি কিন্তু তারাও টাকার মালিকের সন্ধান দিতে পারেনি। পরে আমি বিষয়টি পুলিশকে অবহিত করি, পুলিশকে সেই দুই বান্ডিল টাকা ফেরত দিয়ে দেয়। পরে অবশ্য পুলিশ এর প্রকৃত মালিককে টাকা বুঝিয়ে দিয়েছে এতেই আমি খুশি।
টাকার মালিক সিআ্যন্ডএফ ব্যবসায়ী আবুল বাশার বলেন, আমদানিকৃত পণ্যের ডিউটি দিতে অফিস থেকে ব্যাগে করে ১৪লাখ টাকা নিয়ে সোনালি ব্যাংকে জমা দেওয়ার উদ্দেশ্যে যায়। ব্যাংকে টাকা জমা দিতে গিয়ে দেখি টাকার দুটি বান্ডিল অর্থাৎ ২লাখ টাকা নেই, তখন ধরেই নিয়েছিলাম টাকা আর হয়তোবা ফেরত পাবনা কারন কেউ টাকা পেলে আর ফেরত দিবেকি। এর পরে পথে কোথাও হয়তো ব্যাগ থেকে টাকা পরে গিয়েছে যা আমি বুঝতে পারিনি। এইভেবে সড়কের বিভিন্ন জায়গায় টাকার খোজ করতে থাকি কিন্তু কোথাও পাইনি। পরে শুনি এক ভ্যান চালক টাকা পেয়ে থানায় জমা দিয়েছে। পরে থানা থেকে উপযুক্ত প্রমান দিয়ে টাকাগুলি ফেরত নিয়েছি। সেই সাথে খুশি হয়ে সেই ভ্যানচালককে ১০হাজার টাকা পুরস্কৃত করেছি।
হাকিমপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খায়রুর বাশার বলেন, বুধবার দুপুরে হিলি স্থলবন্দরের চারমাথা মোড়ে টাকার বান্ডিল কুড়িয়ে পেয়ে হাফিজার রহমান নামের এক ভ্যানচালক পুলিশকে জানান। পরে এসআই বেলাল সহ পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে টাকার বান্ডিলসহ হাফিজার রহমানকে সসম্মানে থানায় নিয়ে আসে। টাকার বান্ডিল দুটিতে ১লাখ টাকা করে দুই লাখ টাকা ছিলো। পরে আমরা টাকার প্রকৃত মালিকের সন্ধান করতে থাকি, সে মোতাবেক ট্রাক প্রকৃত মালিক পেয়ে ও উপযুক্ত প্রমাণ সাপেক্ষে টাকার প্রকৃত মালিক সিআ্যন্ডএফ এজেন্ট ব্যবসায়ী আবুল বাশারের নিকট টাকাগুলো হস্তান্তর করা হয়। তিনি আরও বলেন, টাকাগুলো পেয়ে ভ্যান চালক হাফিজার রহমান অন্য কোনকিছু না করে টাকা ফেরত দিতে সরাসরি পুলিশকে ফোন দিয়েছেন যা একটি সততার নজির স্থাপন করেছেন যা সত্যিই প্রশংসার দাবীদার তিনি।
আহসানুজ্জামান সোহেল/অননিউজ24।।