শারদীয় দুর্গাপুজার বন্ধ শেষে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পেয়াজ আমদানি অব্যাহত থাকায় আরেকদফা পেয়াজের দাম পাইকারিতে (ট্রাকসেল) কমেছে কেজি প্রতি ১ থেকে ২টাকা। একদিন আগেও বন্দরে প্রতি কেজি পেয়াজ প্রকারভেদে ৩৬টাকা থেকে ৩৮টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও বর্তমানে তা কমে ৩৫ টাকা থেকে ৩৬টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এদিকে পেয়াজ আমদানি করে ক্রেতা সংকটের কারনে বিক্রি না হওয়ায় পেয়াজ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। এদিকে পেয়াজের দাম কমায় খুশি বন্দরে পেয়াজ কিনতে আসা পাইকারগন।
হিলি স্থলবন্দরে পেয়াজ কিনতে আসা আইয়ুব আলী বলেন, পুজার বন্ধের আগে পেয়াজের যে দাম ছিল বন্ধের পরে সেই পেয়াজের দাম কেজি প্রতি ১২টাকার উপরে কমেছে। এতে করে আমাদের মতো পাইকারদের সুবিধা হয়েছে আগের চেয়ে ক্যাশ কম লাগছে। কিন্তু পুজার বন্ধের আগে আমরা যেসব স্থানে পেয়াজ সাপ্লাই দেয় সেখানে এখনো পর্যাপ্ত পরিমানে পেয়াজ রয়েছে যা বাড়তি দামের।
যার কারনে ওই সব পার্টিরা পেয়াজ এখন কম দামে বিক্রি করায় লোকশানের মুখে পড়েছেন। এতে করে মোকামগুলোতে পেয়াজের নতুন করে কোন ওর্ডার দিচ্ছেনা। এতে করে আমরা যে আগে ৫/৭ট্রাক পেয়াজ পাঠাতাম এখন সেখানে ১/২ট্রাক ওর্ডার মিলছেনা।
হিলি স্থলবন্দরের পেয়াজ ব্যবসায়ী মিরাজুল ইসলাম ও রবিউল ইসলাম বলেন, হঠাৎ করে বাজারে দেশীয় পেয়াজের সরবরাহ কমে যাওয়ায় দাম উদ্ধমুখি হয়ে যায়। একইভাবে ভারতে অতিবৃষ্টি ও বন্যার কারনে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার কারনে সরবরাহ কমায় দাম উদ্ধমুখি হয়ে যায়। এতে করে দেশের চাহীদা মেটাতে বাড়তি দামে ভারত থেকে পেয়াজ আমদানির কারনে দেশের বাজারে পেয়াজের দাম বাড়তে থাকে।
দেশে পেয়াজের চাহীদা মেটাতে ও পুজার বন্ধের সময় সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে পুজার বন্ধের আগের দিন বন্দর দিয়ে ১ হাজার ১৪৪টন পেয়াজ আমদানি করা হয়। কিন্তু বন্ধের পুর্বেই দেশের বিভিন্ন মোকামে পেয়াজ পর্যাপ্ত থাকায় চাহীদা না থাকায় সেই পেয়াজ বিক্রি না হয়ে আমদানিকারকদের গুদামে মজুদ রয়েছে। এর উপর পুজার বন্ধ শেষে ১৭ অক্টোবর থেকে বন্দর দিয়ে পুনরায় পেয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে।
পেয়াজের বাজার নিয়ন্ত্রনে সরকার আমদানি শুল্ক প্রত্যাহার করে নিয়েছে এতে করে কম শুল্কে পেয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে। এতে করে কেজি প্রতি ২টাকার মতো শুল্ক দিতে হতো সেটি আর লাগছেনা। তবে পেয়াজ আমদানি হলেও কি হবে কোন মোকামেই পেয়াজের চাহীদা নেই যার কারনে পেয়াজ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন আমদানিকারকরা। ক্রেতা না থাকায় পুর্বের পেয়াজের পাশাপাশি নতুন করে আমদানিকৃত পেয়াজগুলো তাদের গুদামে নামিয়ে রাখছেন। বন্দরের সব আমদানিকারকদের ঘরেই পেয়াজ মজুদ রয়েছে।
অতিরিক্ত গরমের কারনে পেয়াজ পচে নষ্ট হওয়ার কারনে মান খারাপ হওয়ায় কম দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। এছাড়া দেশীয় পেয়াজের দাম আগের চেয়ে কমে যাওয়ায় ও সরবরাহ ভালো হওয়ায় আমদানিকৃত পেয়াজের চাহীদা কমায় দাম কমছে। এছাড়া ভারতের পাশাপাশি মায়ানমার থেকে প্রচুর পরিমানে পেয়াজ আসছে যার প্রভাব পড়ছে দামের উপরে।
হিলি স্থলবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন বলেন, পুজার ৬দিন বন্ধ শেষে ১৭ অক্টোর থেকে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পুনরায় পেয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে। এদিন বন্দর দিয়ে ১৭টি ট্রাকে ৪৭৪টন পেয়াজ আমদানি হয়েছে। সোমবার বন্দর দিয়ে ১৩টি ট্রাকে ৩৫৫টনপেয়াজ আমদানি হয়েছে। পেয়াজ যেহেতু কাচামাল তাই দ্রুত খালাস করে তা আমাদানিকারকদের নিকট সরবরাহ করতে বন্দর কতৃপক্ষ সবধরনের ব্যবস্থা নিয়েছে।