হিলি স্থলবন্দরে একদিনের ব্যবধানে পেয়াজের দাম বেড়েছে কেজিতে ২ থেকে ৩ টাকা
সালাহউদ্দিন বকুল,হিলি প্রতিনিধি।।
কয়েকদিন কমতির পরে আবারো আমদানি কমের অজুহাতে মাত্র একদিনের ব্যবধানে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরে পাইকারীতে পেয়াজের দাম বেড়েছে কেজিতে ২ থেকে ৩টাকা করে। একদিন আগেও প্রতিকেজি পেয়াজ ২৩ থেকে ২৪ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও বর্তমানে তা বেড়ে ২৫ টাকা থেকে ২৭টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এদিকে দাম বাড়ায় বিপাকে পড়েছেন বন্দরে পেয়াজ কিনতে আসা পাইকাররা।
হিলি স্থলবন্দর কার্যালয় সুত্রে জানা গেছে, বেশ কিছুদিন ধরে বন্দর দিয়ে ইন্দোর ও নাসিক জাতের পেয়াজ আমদানি হলেও সম্প্রতি বন্দর দিয়ে নাসিক জাতের পেয়াজের আমদানি বন্ধ হয়ে শুধুমাত্র ইন্দোর জাতের পেয়াজ আমদানি হচ্ছে এর সাথে সাউথের নতুন বেলোরি জাতের আমদানি হচ্ছে।বৃহস্পতিবার বন্দরে আমদানিকৃত ইন্দোর জাতের পেয়াজ পাইকারীতে (ট্রাকসেল) ২৫ থেকে ২৬ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে যা একদিন আগেও বন্দরে ২৩ থেকে ২৪টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছিল।আর নতুন সাউথের বেলোরি জাতের পেয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২৭ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
হিলি স্থলবন্দরে পেয়াজ কিনতে আসা পাইকার রফিকুল ইসলাম বলেন, গত ৪/৫দিন ধরে বন্দরে পেয়াজের দাম কম ছিল যার কারনে আমাদের পেয়াজ কিনে রাজধানী ঢাকা,চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন মোকামে পাঠাতে বেশ সুবিধা হয়েছিল। কিন্তু সপ্তাহের শেষ দিনে সেই দাম আবারো বাড়তে শুরু করেছে এতে করে আমরা পাইকাররা বিপাকে পড়ে গেছি। একদিন আগেও যে দামে বন্দর থেকে পেয়াজ ক্রয় করে মোকামে পাঠিয়েছি সেই দামের চেয়ে কেজি প্রতি ২ থেকে ৩টাকা করে বেড়ে গিয়েছি এখন যে দামে মোকামে বিক্রি করেছি সেই দামে বন্দরে কিনতে হচ্ছে। এতে করে লাভ তো দুরে থাকলে আসল উঠানোই সমস্যার মধ্যে পড়তে হবে।
হিলি স্থলবন্দরের পেয়াজ আমদানিকারক হারুন উর রশীদ ও পেয়াজ ব্যবসায়ী রবিউল ইসলাম বলেন, দেশের বাজারে পেয়াজের চাহীদাকে ঘিরে ও দাম নিয়ন্ত্রনে রাখতে বন্দর দিয়ে পেয়াজ আমদানি অব্যাহত রেখেছেন আমদানিকারকরা। কিন্তু গতকয়েকদিন ধরে অব্যাহতভাবে অতিরিক্ত গরমের কারনে আমদানিকৃত পেয়াজের মান কিছুটা খারাপ হওয়ার কারনে বাধ্য হয়ে কম দামে পেয়াজ বিক্রি করতে হতো যার কারনে পেয়াজ আমদানি করে লোকশান গুনতে হচ্ছিল। এছাড়াও বাজারে যে দেশীয় পেয়াজ ছিল ৪০টাকা সেটি কমে ৩৫টাকা হওয়ায় আমদানিকৃত পেয়াজের কিছুটা চাহীদা কমে গিয়েছিল। যে পেয়াজ একসপ্তাহ আগে ৩০ থেকে ৩২টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছিল সেই পেয়াজ কমতে কমতে ২৩ থেকে ২৪টাকায় নেমেছিল। এর ফলে অব্যাহতভাবে লোকশান থেকে বাচতে পেয়াজের আমদানি কিছুটা কমিয়েছেন আমদানিকারকরা। একইসাথে ভারতের মোকামে যে দামে পেয়াজ ক্রয় করা হতো সেখানে মোকাম দুদিন বন্ধ থাকায় সরবরাহ কমায় দাম কিছুটা আগের তুলনায় বেড়েছে। এছাড়া বৃহস্পতিবার সপ্তাহের শেষ দিন হওয়ায় ও শুক্রবার বন্দরের কার্যক্রম বন্ধের কারনে কোন পেয়াজ আমদানি হবেনা মর্মে দেশের বাজারে পণ্যটির চাহীদা কিছুটা বেড়েছে। এর ফলে চাহীধার তুলনায় পণ্যটির সরবরাহ কম থাকায় দাম কিছুটা বাড়তি রয়েছে। তবে আমদানি স্বাভাবিক হয়ে গেলে দাম আবারো কমে আসবে বলেও জানান তারা।
হিলি স্থলবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন বলেন, বন্দর দিয়ে পেয়াজের আমদানি অব্যাহত রয়েছে। তবে আমদানির পরিমান ওঠানামা করছে, আগের সপ্তাহের তুলনায় এই সপ্তাহের প্রথম থেকেই পেয়াজের আমদানি কিছুটা বাড়লেও শেষের দিকে আমদানি আবারো কমতে শুরু করেছে। প্রথম দিকে ২৫ থেকে ৩০ট্রাক করে পেয়াজ আমদানি হলেও বর্তমানে তা কমে ১৫ থেকে ২০ট্রাকে নেমেছে।আর পেয়াজ যেহেতু কাচামাল দ্রুত পচনশীল পণ্য তাই কাস্টমসের প্রক্রিয়া শেষে বন্দর থেকে দ্রত খালাস করতে সবধরনের ব্যবস্থা রেখেছে বন্দর কতৃপক্ষ। বন্দর দিয়ে ১১ সেপ্টেম্বর শনিবার থেকে ১৬ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার পর্যন্ত গত ৬দিনে ১২৮টি ট্রাকে ৩ হাজার ৪০৫টন পেয়াজ আমদানি হয়েছে।
আহসানুজ্জামান সোহেল/অননিউজ24।।