হিলি স্থলবন্দরে পেয়াজের কেজি ২টাকা পেয়াজ আমদানি করে মাথায় হাত আমদানিকারকদের
হিলি প্রতিনিধি।।
২৯শে মার্চের পর পেয়াজ আমদানি বন্ধ হয়ে যাওয়ার খবরে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে বাড়তি পরিমানে পেয়াজ আমদানি করেন বন্দরের আমদানিকারকরা। কিন্তু আমদানি বাড়লেও ক্রেতা সংকট দেখা দিয়েছে। দীর্ঘদিনেও আমদানিকৃত পেয়াজ বিক্রি করতে না পেরে অতিরিক্ত গরমের কারনে পেয়াজে পচন ধরেছে। বাধ্য হয়ে খানিকটা কম দামে পেয়াজ বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন আমদানিকারকরা এতে করে লোকশানের মুখে পড়েছেন। খারাপ মানের পেয়াজগুলো ২/৩টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন কিছু পেয়াজ বিনামুল্যে দিচ্ছেন আবার কিছু পেয়াজ ফেলে দিচ্ছেন আর ভালোমানের পেয়াজ ১৩/১৫টাকা বিক্রি হচ্ছে।এদিকে কম দামে পেয়াজ কিনতে পেরে খুশি পাইকাড়সহ নিন্ম আয়ের মানুষজন। এদিকে পুর্বের পেয়াজ বিক্রি না হওয়ায় নতুন করে পেয়াজ আমদানি বন্ধ রেখেছেন তারা।
হিলিতে পেয়াজ কিনতে আসা নাজিম উদ্দিন বলেন, এইতো গুদাম থেকে পেয়াজ কিনলাম কমদামে ৫০টাকা বস্তা হিসেবে। এগুলো নিয়ে গিয়ে বেছে পরিষ্কার করে ভালোগুলো বের করে নিজেরা খাবো বাড়তি পেয়াজগুলো বিক্রি করবো। এতে করে বাড়তি লাভ হবে পেটের দায়ে সবকিছুই করতে হবে। তবে যেভাবে পেয়াজ পচতিছে তাতে করে মালিকদের তো লোকশান।
পেয়াজ কিনতে আসা আনন্দ বর্মন বলেন, আগে তো পেয়াজের দাম বেশী ছিল ২০/২২টাকা কেজি ছিল। এখন দাম কমে গেছে ১৩/১৫টাকা এতে করে পেয়াজ কিনতে আমাদের সুবিধা হয়েছে। তবে এখন খারাপ পেয়াজগুলো দাম দাম কমের কারনে এখান থেকে আমরা কম দামে কিনে নিয়ে গিয়ে এগুলো পরিষ্কার করে বাছাই করে ভালোগুলো ১০/১২টাকা কেজি দরে বিক্রি করি।
অপর পেয়াজ ক্রেতা শামিম হোসেন বলেন, আমরা এসব খারাপ পেয়াজগুলো ক্রয় করে বাসায় নিয়ে গিয়ে এগুলো বাছাই করে ভালো পেয়াজগুলো বের করি। এর পরে এগুলো রোদে শুকিয়ে বা ফ্যানে শুকিয়ে এগুলো আমরা আবার জয়পুরহাট, পাচবিবি, দিনাজপুরসহ বিভিন্ন হাটবাজারের মোকামগুলোতে বিক্রি করছি। এতে করে আমাদেরদুটাকা বাড়তি আয় হচ্ছে যা দিয়ে সংসার চলছে।
পেয়াজ কিনতে আসা বজলু শেখ বলেন, আমরা গরীব মানুষ বাজারে তো পেয়াজের দাম একটু বেশী ১৫টাকা বা তার বেশী। কিন্তু এখানে একটু দাগী পেয়াজ পাওয়া যাচ্ছে কম দামে যার কারনে আমরা এখানে এসব পেয়াজ কিনতে আসছি। খারাপ পেয়াজগুলো ১শ টাকা বস্তা করে বিক্রি হচ্ছে এগুলো আমরা নিয়ে গিয়ে বাছে ভালোগুলো খাচ্ছি।
হিলি স্থলবন্দরের পেয়াজ আমদানিকারক শাহরিয়ার আলম বলেন,সরকার কতৃক পুর্বঘোষনা অনুযায়ী ২৯শে মার্চের পরে পেয়াজ আমদানি বন্ধ হয়ে যাবে। বন্দর দিয়ে আর কোন পেয়াজ আমদানি হবেনা এমন খবরে ২৯শে মার্চের মধ্যে বন্দর দিয়ে পর্যাপ্ত পরিমানে পেয়াজ আমদানি করা হয়েছে। যা দেশের বাজারে রমজানে বাড়তি চাহীদার তুলনার চেয়ে অনেক বেশী। যার কারনে আমাদের অনেক পেয়াজ বিক্রি না হওয়ায় বন্দর থেকে খালাস করে নিজস্ব গুদামে নামিয়ে রাখতে হয়েছে। এর উপর সরকার নতুন করে ৫মে পর্যন্ত পেয়াজ আমদানির সময়সীমা বৃদ্ধি করেছে।
কিন্তু গত কয়েকদিনে পুর্বের আমদানিকৃত পেয়াজ বিক্রি না হওয়ায় এখনো নতুন করে পেয়াজ আমদানি বন্ধ রেখেছেন আমদানিকারকরা। পুর্বে এত পরিমান পেয়াজ আমদানি হয়েছে যে গত ৭দিনেও শুধুমাত্র ক্রেতা সংকটের কারনে এসব পেয়াজ বিক্রি সম্ভব হয়নি এখনো বেশ পরিমান পেয়াজ আমাদের গুদামে মজুদ রয়েছে। গতকয়েকদিন ধরে প্রচন্ড গরমের কারনে ইতোমধ্যেই মজুদকৃত পেয়াজে পচন ধরেছে পেয়াজ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ভালোমানের যে পেয়াজ সেটি আমরা ১৩/১৫টাকা বিক্রি করছি। আর যেগুলো খারাপ সেগুলো আমরা ২/৩টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি। আবার অনেক পেয়াজ পচে নষ্ট হয়ে যাওয়ায় সেগুলো ফেলে দিতে হচ্ছে। এসব পেয়াজ আমাদের বাড়তি দামে ক্রয় করা ছিল কিন্তু এখন এটা কমদামে বিক্রি করতে হচ্ছে এতে করে আমাদের প্রচুর টাকা লোকশান গুনতে হচ্ছে।
হিলি স্থলবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন বলেন, বন্দর দিয়ে মার্চ মাস জুড়েই পেয়াজের আমদানি অব্যাহত ছিল। সেসময় গড়ে প্রতিদিন ৩০ থেকে ৪০ট্রাক পেয়াজ আমদানি হতো। সর্বশেষ ২৯শে মার্চ বন্দর দিয়ে ৬৩টি ট্রাকে ১হাজার ৬৯০টন পেয়াজ আমদানি হয়েছিল। এর পর থেকে আজ অবধি বন্দর দিয়ে পেয়াজ আমদানি বন্ধ রয়েছে। তবে কি কারনে বন্দর দিয়ে পেয়াজ আমদানি বন্ধ এটি ব্যবসায়ীরা বলতে পারবেন এটি আমরা সঠিক জানিনা।