হিলি স্থলবন্দর দিয়ে একদিনেই ৫৮টন কাচামরিচ আমদানি
হিলি প্রতিনিধি।।
দেশে কাচামরিচের দাম নিয়ন্ত্রনে আমদানির অনুমতি দেওয়ায় দীর্ঘ ৯মাস বন্ধের পর দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে কাচামরিচ আমদানি শুরু হয়েছে। গতকাল প্রথম দিনেই বন্দর দিয়ে ৯টি ট্রাকে ৫৮টন কাচামরিচ আমদানি হয়েছে। প্রতিকেজি কাচামরিচ পাইকাড়িতে ১২০ থেকে ১৩০টাকা বিক্রি হয়েছে। এদিকে খুচরা বাজারে ৬০টাকা কমে প্রতি কেজি কাচামরিচ ১৬০টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। কাচামরিচের দাম কমায় খুশি নিন্ম আয়ের মানুষজনসহ বন্দরে কিনতে আসা পাইকারগনের।
হিলি বাজারে কাচামরিচ কিনতে আসা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, প্রতিদিনই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছিল কাচামরিচের দাম। কয়েকদিনের ব্যবধানে কাচামরিচ ২৫০টাকায় গিয়ে দাড়িয়েছিল। এতে করে আমাদের মতো মানুষদের কাচামরিচ কিনে খাওয়া অসম্ভব ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছিল বাধ্য হয়ে পরিমান কমিয়ে দিয়েছিলাম। অবশ্য ভারত থেকে কাচামরিচ আমদানির ফলে দাম কিছুটা কমতে শুরু করেছে ১৬০টাকায় নেমেছে। এতে করে আমাদের কিছুটা সুবিধা হয়েছে দাম আরো কমলে আামদের জন্য ভালো হয়।
হিলি বাজারের কাচামরিচ বিক্রেতা বিপ্লব শেখ বলেন,বন্দর দিয়ে বেশকিছুদিন ধরে কাচামরিচ আমদানি বন্ধ থাকার ফলে আমরা দেশীয় বিভিন্ন মোকাম থেকে কাচামরিচ সংগ্রহ করে বিক্রি করছিলাম। কিন্তু গতকয়েকদিন ধরে সরবরাহ কমায় দাম উদ্ধমুখি হয়ে গিয়েছিল। গতকাল আবারো বন্দর দিয়ে কাচামরিচ আমদানি শুরু হওয়ায় এর প্রভাব পড়েছে বাজারে। একদিনের ব্যবধানে কাচামরিচের দাম ৬০ টাকা কমে গিয়েছে। গতকাল ২২০টাকা কেজি কাচামরিচ বিক্রি হলেও আজ তা কমে ১৬০টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এদিকে দাম কমায় বিক্রিও বেড়েছে আগের তুলনায়।
হিলি স্থলবন্দরের কাচামরিচ আমদানিকারক আনোয়ার হোসেন বলেন, দেশীয় কাচামরিচের দাম কম থাকায় পড়তা না থাকায় বেশ কিছুদিন ধরেই ভারত থেকে কাচামরিচ আমদানি বন্ধ ছিল। কিন্তু সম্প্রতি কিছুদিন ধরে প্রচন্ড গরম, খরা ও অতিবৃষ্টির কারনে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মরিচের আবাদ নষ্ট হওয়ায় উৎপাদন ব্যাহত হয়। যার কারনে বাজারে কাচামরিচের সররবাহ কমে গিয়ে দাম উদ্ধমুখি হয়ে ২৫০টাকায় গিয়ে দাড়ায়। এমন অবস্থায় কাচামরিচ আমদানির উদ্যোগ নিলেও দেশীয় কৃষকের স্বার্থ বিবেচনা করে সরকার কাচামরিচ আমদানির অনুমতি আইপি প্রদান বন্ধ রাখায় সেটি সম্ভব হয়নি। বাজার নিয়ন্ত্রনে গত বৃহস্পতিবার কাচামরিচ আমদানির অনুমতি দেয় সরকার। হিলি স্থলবন্দরের দুজন আমদানিকারক দেড়হাজার টন কাচামরিচ আমদানির অনুমতি পায়। পরবর্তীতে আরো একজন আমদানিকারক এক হাজার টন কাচামরিচ আমদানির অনুমতি পায়। অনুমতি পাওয়ার সাথে সাথে এলসি খুলে গতকাল শনিবার থেকে বন্দর দিয়ে কাচামরিচ আমদানি শুরু হয়েছে। প্রতিটন কাচামরিচ ভারতের বিহার থেকে ১৫০ থেকে ২০০ মার্কিন ডলার মুল্যে আমদানি করা হচ্ছে। ৫শ মার্কিন ডলার মুল্য ধরে কাস্টমস শুল্কায়ন করায় প্রতি কেজিতে ২৮টাকা শুল্ক পরিশোধ করতে হচ্ছে। কাচামরিচ আমদানির ফলে ইতোমধ্যেই দেশের বাজারে দাম কমতে শুরু করেছে গতকাল আমদানিকৃত কাচামরিচ প্রকারভেদে ১২০ থেকে ১৩০টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। আমদানি অব্যাহত থাকলে দাম আরো কমবে বলেও জানান তিনি।
হিলি স্থলবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন বলেন,দীর্ঘ প্রায় ৯ মাস বন্ধের গতকাল শনিবার থেকে বন্দর দিয়ে ভারত থেকে কাচামরিচ আমদানি শুরু হয়েছে। এর আগে গতবছরের ১০ নভেম্বর সর্বশেষ ভারত থেকে কাচামরিচ আমদানি হয়েছিল। গতকাল বন্দর দিয়ে ৯টি ট্রাকে ৫৮টন কাচামরিচ আমদানি হয়েছে। আজ রবিবার বিকেল ৩টা পর্যন্ত ৬টি ট্রাকে ৪৪টন কাচামরিচ আমদানি হয়েছে। কাস্টমসের সকল প্রক্রিয়া সম্পুর্ন করে আমদানিকারকরা দ্রæত যেন কাচামরিচ খালাস করে নিতে পারেন এজন্য বন্দর কতৃপক্ষ সবধরনের ব্যবস্থা গ্রহন করে রেখেছে। এছাড়া কাচামরিচ আমদানির ফলে সরকারের রাজস্ব আহরন যেমন বেড়েছে তেমনি বন্দর কতৃপক্ষের দৈনন্দিন আয় বেড়েছে।