দেশের বাজারে চালের মুল্য নিয়ন্ত্রনে রাখতে আমদানি শুল্ক কমানোয় ও বেসরকারী পর্যায়ে চাল আমদানির অনুমতি দেওয়ায় অনুমোদন প্রাপ্ত আমদানিকারকগন চাল আমদনি করছেন এতে করে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে চাল আমদানি অব্যাহত রয়েছে।
দীর্ঘদিন বন্ধের পর গত শনিবার থেকে বন্দর দিয়ে পুনরায় চাল আমদানি শুরু হয়। এদিন থেকে শুরু করে গতকাল সোমবার পর্যন্ত গত তিন দিনে বন্দর দিয়ে ১০টি ট্রাকে ৩৩৫টন চাল আমদানি হয়েছে। এর আগে চালের আমদানি শুল্ক বাড়তি থাকায় গত বছরের ৩১ অক্টোবর থেকে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে চাল আমদানি বন্ধ ছিল।
হিলি স্থলবন্দরের চাল আমদানিকারক শহিদুল ইসলাম বলেন, দেশীয় কৃষকের উৎপাদিত ধানের ন্যায্যমুল্য নিশ্চিতে সরকার চাল আমদানিতে শুল্ক ৬২.৫ভাগ নির্ধারন করায় পড়তা না থাকায় দীর্ঘদিন ধরে ভারত থেকে চাল আমদানি বন্ধ ছিল। সম্প্রতি দেশের বাজারে দেশীয় চালের সরবরাহ কমায় দাম উদ্ধমুখি হলে চালের আমদানি শুল্ক ৬২.৫ভাগ থেকে কমিয়ে ২৫ভাগ নির্ধারন করেছে সরকার। সেই সাথে বেসরকারি পর্যায়ে সারাদেশের বেশ কয়েকজন আমদানিকারককে কয়েকলাখ টন চাল আমদানির অনুমতি দিয়েছে সরকার। এর মধ্যে হিলি স্থলবন্দরের কয়েকজন আমদানিকারক চাল আমদানির অনুমতি পেয়েছেন। ইতোমধ্যেই আমদানিকারকরা চাল আমদানির অনুমতি পেয়ে এলসি খুলে ভারত থেকে চাল আমদানি শুরু করেছেন। বর্তমানে ভারত থেকে আতপ চাল ৩শ মার্কিন ডলার মুল্যে ও সিদ্ধ চাল ৪শ থেকে ৪শ ২০ মার্কিন ডলার মুল্যে আমদানি করা হচ্ছে। প্রতি কেজি চালে শুল্কবাবদ ১০টাকার মতো পরিশোধ করতে হচ্ছে। স্বর্না জাতের চাল আমদানি করে শুল্ক পরিশোধ করে পড়তা ৪৭টাকা আর বাজারে দেশীয় স্বর্না চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৫টাকা দরে। তাতে করে শুল্ক পরিশোধ করে আমদানিকৃত চালের দাম দেশীয় চালের চেয়ে বেশি পড়ায় বন্দর দিয়ে সেইভাবে চাল আমদানি হচ্ছেনা। সেই সাথে সরকারের চাল আমদানির অনুমতি দেওয়ার খবরে ভারতীয় ব্যবসায়ীরা চালের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। এছাড়া আমাদের দেশে ডলারের মুল্য নিয়ন্ত্রনে নেই প্রতিনিয়ত দাম বাড়ছে উঠানামা করছে। এখন যে দামে এলসি খোলা হচ্ছে বিল পরিশোধের সময় ডলার রেট বাড়তি হয়ে যাওয়ায় লোকশান গুনতে হচ্ছে এটিও চাল আমদানি কমের একটি কারন। এছাড়া ব্যাংকে এলসির মার্জিন কমিয়ে দিয়েছে পুর্বে ১০ভাগ মার্জিনে এলসি দিলেও বর্তমানে ৫০ থেকে ৭০ভাগ মার্জিনে এলসি দেওয়ায় অনুমোদন পেলেও চাল আমদানি করতে আগ্রহ দেখাচ্ছেননা আমদানিকারকরা। বর্তমানে চালের আমদানি শুল্ক ২৫ভাগ আরোপ রয়েছে সেটি থেকে আরো কিছুটা যদি শুল্ক কমানো হয় তাহলে চাল আমদানিতে পড়তা যেমন হবে তেমনি চালের আমদানি বাড়বে বলেও দাবী তার।
হিলি স্থলবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন বলেন, দীর্ঘদিন বন্ধের পর গত ২৩ শে জুলাই শনিবার থেকে বন্দর দিয়ে পুনরায় চাল আমদানি শুরু হয়। কিন্তু চাল আমদানি শুরু হলেও আমদানির গতি তেমন একটা নেই। বন্দর দিয়ে মাত্র ২ থেকে ৪ট্রাক করে চাল আমদানি হচ্ছে। গত শনিবার বন্দর দিয়ে ২টি ট্রাকে ৭৪টন সিদ্ধ চাল ও ১ট্রাকে ৩৪টন আতপ চাল আমদানি হয়েছে। রবিবার বন্দর দিয়ে রবিবার বন্দর দিয়ে ৪টি ট্রাকে ১০৮টন সিদ্ধ চাল ও ২টি ট্রাকে ৭৯টন আতপ চাল আমদানি হয়েছে। এছাড়া গতকাল সোমবার বন্দর দিয়ে মাত্র ১টি ট্রাকে ৪০টন চাল আমদানি হয়েছে। চালের আমদানি বাড়লে বন্দর থেকে সরকারের রাজস্ব আহরন যেমন বাড়বে তেমনি বন্দর কতৃপক্ষের দৈনন্দিন আয় বাড়বে। সেই সাথে বন্দরে কর্মরত শ্রমিকদের আয় বাড়বে বলেও জানান তিনি।