কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা সরকারি কলেজ পাড়ার বাড়িতে সামরিক ট্রাইব্যুনালে ফাঁসির দÐপ্রাপ্ত দেলোয়ার হোসেনের স্বজনেরা ৪৫ বছর পর জানল ফাঁসির দিন।
ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত দেলোয়ার হোসেনের স্বজনরা জানান, বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর এক তেজোদ্দীপ্ত ও মেধাবী অফিসার কর্পোরাল দেলোয়ার হোসেন। অমায়িক
ব্যক্তিত্বসুলভ আচরণের মাধ্যমে যিনি নিজ পরিবার, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব গুনগ্রাহী ও কর্মক্ষেত্রের কলিগদের হৃদয়-মনে জায়গা করে নিয়েছিলেন। ৭৫’ই আগষ্ট
স্বপরিবারে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নৃশংসভাবে হত্যার পর ক্ষমতার ধারাবাহিক পালাবদলের ক্যু-পাল্টা ক্যু’র পটপরিক্রমায় ক্ষমতা লিপ্সু জেনারেল
জিয়াউর রহমান তার ক্ষমতা নিরঙ্কুশ রাখতে তার অনুগতদের মাধ্যমে মানবতা বিরোধী সামরিক ট্রাইব্যুনাল গঠন করে অসংখ্য সেনা ও বিমান বাহিনীর
কর্মকর্তাসহ জওয়ানদের ক্যাঙ্গারু ট্রায়ালে মৃত্যুদন্ড ধার্য ও কার্যকর করে।
নির্বিচারে এই জঘন্যতম হত্যাকান্ডের শিকার হওয়া ব্যক্তি বা তাদের পরিবারের সদস্যরা জানতো না কি অপরাধে এই নিকৃষ্ট মৃত্যুদন্ড। অপরাপর আর সবার মতো
কর্পোরাল দেলোয়ার হোসেনও জানতেন না, তাঁর কি অপরাধ। ১৯৭৭ সালের অক্টোবর মাসজুড়ে সংঘটিত নারকীয় হত্যাযজ্ঞের অনেক পরে ছোট্ট একটা টেলিগ্রাম
মারফত তার পরিবার অবগত হয়েছিলাম সামরিক ট্রাইব্যুনালে কর্পোরাল দেলোয়ার হোসেনের সাজা কার্যকর হয়েছে। কিন্তু কার্যকর হওয়া সেই সাজা কি তারা
জানতো না। ফাঁসির দÐপ্রাপ্ত দেলোয়ার হোসেনের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম তার দ্#ু৩৯;টি অবুঝ ও মাছুম শিশু সন্তান (মনিরুল হাসান শিশির ও মেহেদী হাসান
সুমন)কে সাথে নিয়ে সেনা ও বিমান বাহিনীর সদর দপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে নিরলস প্রচেষ্টা ও তদ্বির করেও তার স্বামীর প্রকৃত পরিনতি সম্পর্কে
কিছুই জানতে পারেনি। এ সময়ের মধ্যে ঘৃণিত ও জঘন্যতর হত্যাকান্ড বিষয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের নানা তথ্য-
উপাত্ত পর্যালোচনা ও অনুসন্ধানের দীর্ঘ পটপরিক্রমায় অবশেষে ৪৫ বছর পর স¤প্রতি নিশ্চিত হয়েছে ১৯৭৭ সালের ৩০শে অক্টোবর কর্পোরাল দেলোয়ার
হোসেনকে কুমিল্লা কারাগারের অভ্যন্তরে ফাঁসিকাষ্ঠে ঝুলিয়ে হত্যা করা হয়েছে। বিচার বহির্ভূত এই হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত কুচক্রী কুশিলবদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্র
যথাযথ ও দৃষ্টান্তমূলক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করবে এমন প্রত্যাশা তার পরিবারের।
ফাঁসির দÐপ্রাপ্ত দেলোয়ার হোসেনের বড় ছেলে ও ভেড়ামারা সরকারি কলেজ পাড়ার মনিরুল হাসান শিশির বলেন, তথাকথিত সেনা বিদ্রোহের নামে প্রহসনের
বিচার করে অসংখ্য সেনা ও বিমানবাহিনীর কর্মকর্তাসহ জওয়ানদের মৃত্যুদÐ ধার্য ও কার্যকর করে। ইউটিউবে সাংবাদিক অ্যান্থনি মাসকারেনহাসের ১৩ খÐের
বাংলাদেশ রক্তের ঋণ বই দেখি। সেখান থেকে জেনে গুগলে অনুসন্ধান করে ফাঁসি কার্যকরের তালিকায় বাবার নাম পাই। জানতে পারি ৩০ অক্টোবর আমার বাবার
ফাঁসি হয়।