পুর্বের আমদানিকৃত পিঁয়াজ বিক্রি না হওয়ায় লোকশানের আশংকায় আমদানি না করায় টানা ১২ দিন বন্ধের পর আবারো দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে পিঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে। সরবরাহ স্বাভাবিক থাকায় পিঁয়াজের দাম কমতির দিকে রয়েছে এতে করে স্বস্তিতে রয়েছে নিন্ম আয়ের মানুষজন।
সোমবার দুপুরে ভারত থেকে পিঁয়াজবাহী ট্রাক প্রবেশের মধ্য দিয়ে বন্দর দিয়ে আবারো পিঁয়াজ আমদানি শুরু হয়। এপর্যন্ত ৩টি ট্রাকে ৭৮টন পিঁয়াজ আমদানি হয়েছে।
হিলি বাজারে পিঁয়াজ কিনতে আসা আমিনুল ইসলাম বলেন, রমজানে সবপণ্যের দাম যখন উদ্ধমুখি তখন পিঁয়াজের দামে বেশ স্বস্তি রয়েছে। প্রতিবছর রমজানে পিঁয়াজের বাজারে আগুন লাগলেও এবারের সেই অবস্থা নেই। হিলি বাজারে রমজানের আগেও পিঁয়াজ ২০টাকা কিনতে হয়েছিল সেখানে রমজান শুরুর পর দাম আরো কমে বর্তমানে ১৬টাকা কেজি দরে কিনতে পারছি। এতে করে রমজানে অন্যান্য পণ্যের বাড়তি ব্যায়ভার মেটাতে কষ্ট হলেও পিঁয়াজ নিয়ে স্বস্তিতে রয়েছি। আমরা চাহীদা মত পিঁয়াজ কিনতে পারছি এমন দাম থাকলে আমাদের মতো মানুষদের সুবিধা।
হিলি বাজারের পিঁয়াজ বিক্রেতা শাকিল খান বলেন, রমজানের পুর্বে বন্দর দিয়ে পর্যাপ্ত পরিমানে পিঁয়াজ আমদানি হওয়ায় গতকয়েকদিন পিঁয়াজ আমদানি বন্ধ থাকলেও বাজারে পিঁয়াজের পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে। এর কারনে পিঁয়াজের দাম পুর্বের মতোই স্বাভাবিক রয়েছে কিন্তু পিঁয়াজের ক্রেতা সংকট দেখা দিয়েছে পিঁয়াজের বিক্রি তেমন নেই বললেই চলে। বর্তমানে ভারতীয় পিঁয়াজ ১৬টাকা কেজি দরে আর দেশীয় পিঁয়াজ ২০টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
হিলি স্থলবন্দর আমদানি রফতানিকারক গ্রæপের সভাপতি হারুন ঊর রশীদ বলেন, সরকারি ঘোষনা মোতাবেক ২৯মার্চ পিঁয়াজের ইমপোর্ট বন্ধ হয়ে যাবে এর পরে আর পিঁয়াজ আমদানি হবেনা। এই খবরে বন্দরের আমদানিকারকগন যার যতটুকু ইমপোর্ট পারমিট নেওয়া ছিল ও এলসি খোলা ছিল সেগুলোর বিপরীতে পিঁয়াজ আমদানি বাড়িয়ে দেন। এতে করে বন্দর দিয়ে পিঁয়াজের বাড়তি আমদানি হতে থাকে শেষ দিন ২৯মার্চ প্রচুর পরিমানে পিঁয়াজ আমদানি হয়। এতে করে দেশের বাজারে চাহীদার তুলনায় পণ্যটির সরবরাহ বেড়ে যায়। পরবর্তীতে রমজানে পিঁয়াজের সরবরাহ ও দাম নাগালের মধ্যে রাখতে ৫ মে পর্যন্ত পিঁয়াজের ইমপোর্ট পারমিট বাড়ানোর সিন্ধান্ত নেই। এতে করে আবারো বন্দর দিয়ে পিঁয়াজ আমদানি শুরু হবে এমন খবরে পিঁয়াজের বাজারে ধ্বস নেমে যায়। এমন অবস্থা যে পিঁয়াজের ক্রেতা সংকট দেখা দেয়। যার কারনে আমদানিকারকদের গুদামে পিঁয়াজ মজুদ করে রাখতে হয়। এর উপর অতিরিক্ত গরমের কারনে পিঁয়াজ পচে নষ্ট হয়ে যায়। কিছু পচা পিঁয়াজ ২টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে পারলেও অধিকাংশই ফেলে দিতে হচ্ছে আবার বিনামুল্যে মানুষকে দেওয়া হচ্ছে। পুর্বের ২৭টাকার মত পড়তার পিঁয়াজ ক্রেতা না থাকায় ১৩/১৫টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে হয়েছে। এতে করে পিঁয়াজ আমদানি করে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হন আমদানিকারকরা। কিন্তু এতদিন পিঁয়াজ মজুদ থাকার কারনে কেউ আমদানি করেননি লোকশানের আশংকায় আমদানি বন্ধ রেখেছিলেন। এছাড়া বিভিন্ন মোকামে পিঁয়াজের বকেয়া টাকা পাওনা রয়েছে যেগুলোতে পিঁয়াজ না দিলে টাকা পাওয়া যাবেনা। তাই আবারো আমদানিকারকরা পিঁয়াজের এলসি খুলেছেন যার কারনে বন্দর দিয়ে আজ থেকে আবারো পিঁয়াজ আমদানি শুরু করেছেন আমদানিকারকরা। এতে করে রমজানে পিঁয়াজের দাম বাড়বেনা আশাকরছি রমজান মাসে পিঁয়াজের দাম সাধারন মানুষের নাগালের মধ্যেই থাকবে।
হিলি স্থলবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন বলেন, বন্দর দিয়ে সর্বশেষ গত ২৯শে মার্চ একদিনেই ৬৩টি ট্রাকে ১হাজার ৬৯০ মেট্রিকটন পিঁয়াজ আমদানি হয়েছিল। যদিও এর পর থেকে বন্দর দিয়ে সম্পুর্নরুপে পিঁয়াজ আমদানি বন্ধ ছিল। ১২দিন বন্ধের পর আজ আবারো বন্দর দিয়ে ভারত থেকে পিঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে।