বিশ্বের সবচেয়ে বেশি মাংস ভোক্তা দেশ লাতিন আমেরিকার আর্জেন্টিনা এবং উরুগুয়ে। বিভিন্ন কাটিংয়ের মাংস এবং সসেজ দিয়ে তৈরি একধরনের খাবারের নাম ‘আসাদো’। যা আর্জেন্টিনায় খুবই জনপ্রিয়। বিশ্বকাপ খেলতে লিওনেল মেসিরা কোনো দেশে যাবেন আর সঙ্গে ‘আসাদো’ থাকবে না, তা কী করে হয়!
সুতরাং, আসাদো তৈরি করা এবং নিয়মিত মেসিদের খাবারের মেন্যুতে এই খাবার পরিবেশন করার আর্জেন্টিনা থেকে ২০০০ পাউন্ড (প্রায় ৯০০ কেজি) মাংস আনা হচ্ছে কাতারে। শুধু আর্জেন্টিনার ফুটবলারদের জন্যই নয়, একই মেন্যু এবং একই ধরনের খাবারের জন্য উরুগুয়ে থেকেও ২০০০ পাউন্ড মাংস আনা হচ্ছে কাতারে লুইস সুয়ারেজদের ক্যাম্পে। ইএসপিএন জানিয়েছে এ সংবাদ।
দুই দল মিলে শুধু ৪০০০ পাউন্ড (১৮০০ কেজি) মাংস আনানোই নয়, সঙ্গে নিজ নিজ দেশ থেকে রাঁধুনি (শেফ), রন্ধনপ্রনালির যাবতীয় অনুসঙ্গও আনিয়ে নিচ্ছে দোহায়। বিশ্বকাপজুড়ে দোহায় বসেই ঘরের খাবারের স্বাদ উপভোগ করবেন মেসি-সুয়ারেজরা।
উরুগুয়ে ফুটবল ফেডারেশন দেশটির ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব মিট (আইএনএসি) -এর সঙ্গে একটি চুক্তিতে উপণীত হয়েছে যে, তারা কাতারে তাদের দেশের ফুটবলারদের জন্য মাংস সরবরাহ করবে।
উরুগুয়ে ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি ইগনাসিও আলোনসো বলেন, ‘জাতীয় দলের সঙ্গে একজন সেরা পুষ্টিবীদকে রাখা হয়েছে। উরুগুয়ে ফুটবল ফেডারেশন হচ্ছে আমাদের দেশের ঐতিহাসিক ব্র্যান্ড অ্যাম্বসেডর। তারা বিদেশের মাটিতে খাবার হিসেবে গ্রহণ করবে দেশের আরেকটি পরিচয়সূচক (অ্যাম্বাসেডর) খাবার ‘উরুগুইয়ান মাং’কে। যা বিশ্বের সেরা মাংস হিসেবে পরিচিত।’
‘আসাদো’ দুই দেশেই জনপ্রিয় একটি খাবার। এই খাবারটি তৈরি করা হয়, মাংসকে বিভিন্নভাবে কেটে এর সঙ্গে সসেজ মিশিয়ে গ্রিলের মত করে রান্নার মাধ্যমে। এর আগের বিশ্বকাপগুলোতেও আর্জেন্টিনা এবং পর্তুগাল দল যখন খেলতে গিয়েছিলো, সঙ্গে করে ‘আসাদো’ তৈরির উপকরণ নিয়ে গিয়েছিলো।
উরুগুয়ের ইনস্টিটিউট অব মিট-এর (আইএনএসি) প্রেসিডেন্ট কনরাডো ফেরবার বলেন, ‘দ্য মেট (এক ধরনের বিশেষ চা) এবং দ্য আসাদো এবং ফুটবল একসঙ্গেই চলে উরুগুয়েতে। এগুলোই আমাদের সংস্কৃতির অংশ। আমরা পণ্যের মান নিশ্চিত করতে চাই সব সময়। আর বিশ্বকাপ তো এমন একটা সময়, যখন এটা নিশ্চিত করার সেরা সময়।’
আর্জেন্টিনা কোচ লিওনেল স্কালোনিও তাদের খাবার ‘আসাদো’ নিয়ে কথা বলেছেন। তিনি জানান, এই একটি খাবার পুরো দলকে কিভাবে একতাবদ্ধ রাখে। তিনি বলেন, ‘আমার সেরা (ফেবারিট) খাবারই হলো আসাদো। কিন্তু সেটা প্রিয় অবস্থা যেন কাতারে এসে আরো বেশি। এটা যেন আমাদের দলের মধ্যে একতা তৈরিতে দারুণ এক পরিবেশ সৃষ্টি করে। এবং দলের মধ্যে একটার রসায়ন সৃষ্টি করে।’
‘আসাদো গ্রহণ করার সময় আমরা নানা বিচ্ছিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলি। হাসি, রিলাক্স থাকি এবং একে অপরের সঙ্গে এভাবে সম্পর্কটা দৃঢ় করি। এসবের জন্য হয় স্পেশালি মাংস প্রয়োজন নেই। এমনিতেই আমরা এসব করতে পছন্দ করি। কিন্তু আসাদো আমাদের মধ্যে ভিন্ন একটা পরিবেশ তৈরি করে দেয়।’