প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করে যে মিলিটারি ডিক্টেটর ক্ষমতায় এসেছিল, তারাও এ দেশে একাত্তরের মতোই গণহত্যা চালিয়েছিল। আমাদের সেনা অফিসারদের একের পর এক হত্যা করা হয়েছে। আমাদের অসংখ্য নেতাকর্মীর ওপর নির্যাতন চালিয়েছে এবং এরপরে নির্বাচনী প্রহসন, দল গঠন, দল ভাঙন। নানান ধরনের খেলা ২১টি বছর আমাদের ওপর চলেছে।
সোমবার (২৫ মার্চ) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ‘স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২৪’ প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
বক্তব্যের শুরুতেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মার্চ আমাদের স্বাধীনতার মাস। এই মাসেই তিনি জন্ম নেন। আবার এই মাসেই তিনি সেই ঐতিহাসিক সাতই মার্চের ভাষণ দিয়েছিলেন। যা বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতার চেতনায় উদ্বুদ্ধ করেছিল এবং যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবিলা করে আমাদের মুক্তিযুদ্ধে বিজয় এনে দিয়েছিল।
তিনি বলেন, যে জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে এ দেশের মানুষ মুক্তিযুদ্ধে বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছিল, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর সেই স্লোগান নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। জাতির পিতার হত্যাকারীদের বিচার হবে না, এমন আইন করে হত্যাকারীদের পুরস্কৃত করা হয়েছিল বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিয়ে। মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতাকারীদের ক্ষমতায় বসানো হয়েছিল। তখন বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও স্বাধীনতার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের সম্পূর্ণ উল্টোপথে যাত্রা শুরু করে। যেই জাতি যুদ্ধ করে বিজয় অর্জন করেছে, সেই বিজয়ের কথা মাথা উঁচু করে তারা বলতে পারেনি, এমন একটা পরিবেশ তখন বিরাজমান ছিল।
অনুষ্ঠানে জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ১০ বিশিষ্টজনের হাতে দেশের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় বেসামরিক সম্মাননা ‘স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২৪’ তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এ বছর স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলেন—স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে কাজী আব্দুস সাত্তার, বীর মুক্তিযোদ্ধা ফ্লাইট সার্জেন্ট মো. ফজলুল হক (মরণোত্তর) ও বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদ আবু নঈম মো. নজিব উদ্দীন খাঁন (খুররম) (মরণোত্তর), বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে ড. মোবারক আহমদ খান, চিকিৎসাবিদ্যায় ডা. হরিশংকর দাশ, সংস্কৃতিতে মোহাম্মদ রফিকউজ্জামান, ক্রীড়ায় ফিরোজা খাতুন, সমাজ বা জনসেবায় অরন্য চিরান, বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ডা. মোল্লা ওবায়েদুল্লাহ বাকী ও এসএম আব্রাহাম লিংকন।
পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রত্যেককে পাঁচ লাখ টাকা, ১৮ ক্যারেটের ৫০ গ্রাম ওজনের স্বর্ণের পদক, পদকের একটি রেপ্লিকা ও একটি সম্মাননাপত্র দেওয়া হয়।
২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে সরকার ১৯৭৭ সাল থেকে প্রতি বছর স্বাধীনতা পুরস্কার দিয়ে আসছে। এটি দেশের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় বেসামরিক সম্মাননা।
সূত্র : আরটিভি অনলাইন
এফআর/অননিউজ