গত এক বছরে মাদক উদ্ধারে সারাদেশে প্রথম হয়েছে কুমিল্লা জেলা পুলিশ। পুলিশ সপ্তাহ ২০২৩ উপলক্ষ্যে ২০২২ সালের পরিসংখ্যানে এই তথ্য জানানো হয়েছে। এছাড়া চোরাচালান পণ্য এবং অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারেও কুমিল্লা জেলা পুলিশ তৃতীয় অবস্থান অধিকার করেছে। দেশ সেরা এই অর্জনে পুরষ্কার ও সম্মাননা পেয়েছে কুমিল্লা জেলা পুলিশ। ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ, পুলিশ আছে জনতার পাশে’- এই প্রতিপাদ্যে গত ৩ জানুয়ারি রাজধানী ঢাকার রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে ৬ দিন ব্যাপি পুলিশ সপ্তাহের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসময় উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব আবদুল্লাহ আল মামুন, আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনসহ অন্যান্যরা।
কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) খন্দকার আশফাকুজ্জামান বলেন, ২০২২ সালে কুমিল্লা জেলায় ১৮টি থানা ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশের মাধ্যমে মোট ২হাজার ১২৯টি মাদকের মামলা দায়ের করা হয়েছে। সাধারণ ডায়েরি হয়েছে ১৩ টি। এসব মামলায় মোট গ্রেপ্তারকৃত আসামির সংখ্যা ২ হাজার ৬শ ১ জন। মোট ১৮ কোটি ৭৮ লাখ ২৫ হাজার ৮৭০ টাকার মাদক উদ্ধার করা হয়েছে।
জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, জেলার থানা পুলিশ ও গোয়েন্দা পুলিশের অভিযানে বিপুল পরিমানে গাঁজা, ইয়াবা, ফেন্সিডিল, ইস্কাপ সিরাপসহ নানান ধরনের মাদক দ্রব্য উদ্ধার করা হয়। এক বছরে ৮ হাজার ৬ শ ৯৯ কেজি ৬৩ গ্রাম গাঁজা উদ্ধার করা হয়েছে। ২১ হাজার ৫৫ বোতল ফেন্সিডিল উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া ১ লাখ ২১ হাজার ৫২৯ পিস ইয়াবা আটক করা হয়েছে। এছাড়া বিদেশি মদ বিয়ার, বিভিন্ন ধরনের নেশাজাতীয় সিরাপও আটক করা হয়।
অপরাধ বিশ্লেষক ও কুমিল্লা আদলতের আইনজীবী এএমএম মইন বলেন, যেহেতু আমাদের জেলাটি ভারত সীমান্তবর্তী এলাকা। কুমিল্লা থেকে ঢাকা ও চট্টগ্রামের মাঝামাঝি হওয়ায় কুমিল্লা মাদকের ট্রানজিট হিসেবেও কাজ করে। যে কারণে মামলাও বেশি। স্থানীয়রা শুধু আসামি না, দেশের বিভিন্ন জেলার মাদক ব্যবসায়িরাও এসব মামলার আসামি।
তিনি আরো বলেন, মাদক মামলা বডি রিকভারি না হলে আইনের ফাঁকফোকড় দিয়ে বেরিয়ে যায় আসামিরা। যারা আটক হচ্ছে তারা বেশির ভাগই বাহক। আসল ব্যবসায়ি ধরা কম পড়ে। পুলিশ মামলার গুলো সঠিক ভাবে তদন্ত করে মূল পর্যন্ত যাওয়া উচিত । তবে কুমিল্লা জেলা পুলিশের মাদক উদ্ধারে যে অর্জন- তা কুমিল্লায় মাদক নির্মূলে স্মারক হিসেবে থাকবে।
কুমিল্লা মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ইমরুল হাসান বলেন, পুলিশ তাদের সাধ্যমত চেষ্টা করে। আমরাও চেষ্টা করি মাদক উদ্ধার করে। পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে তারা মাদক উদ্ধারে চেষ্টা করছে।
কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) খন্দকার আশফাকুজ্জামান বলেন, কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশনায় কুমিল্লার প্রতিটি থানা ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশ প্রতিনিয়ত মাদক উদ্ধারে কাজ করছে। সারা দেশে আমাদের এই অর্জনে আমরা খুশি। কুমিল্লা ভারত সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়া মাদক সম্পর্কিত তৎপরতা বেশি, তবে আমরা সবসময় মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করি।