আশ্রয়হীন, ঠিকানাহীন মানুষ ও তাদের বদলে যাওয়া জীবনের ঘটনা নিয়ে নির্মিত ধারাবাহিক তথ্যচিত্র ‘বদলে যাওয়া বাংলাদেশ’ পার করলো ৫০ তম পর্ব।
অনুষ্ঠানটি একুশে টেলিভিশনে রাত ৮ টায় প্রচার হবে ১৩ নভেম্বর ২০২২ তারিখে। এ বছর ২০ মে থেকে সুনামগঞ্জের মানুষ ও জীবনমান বদলে যাওয়া কথা নিয়ে যাত্রা শুরু করে ‘বদলে যাওয়া বাংলাদেশ’। ইতোমধ্যে টিম পা রেখেছে ১৬ জেলার প্রতিটি উপজেলায়। টেলিভিশনে প্রচারের পর একুশে টেলিভিশনের ইউটিউব চ্যানেল এবং ফেসবুক পেইজে প্রতিটি পর্ব আপলোড করা হয়।
তথ্যচিত্রটি বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন স্তরের প্রতিষ্ঠান, প্রশাসন এবং সাধারণ দর্শকের কাছে vগ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। ৬ সদস্যের একটি টিম দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল ঘুরে অত্যাধুনিক ক্যামেরায়
ধারণ করছে ভূমিহীন-গৃহহীন, ঠিকানাহীন ভাসমান মানুষের জীবনযাত্রা। আধুনিক মান নিশ্চিতে চিত্র ধারণে ব্যবহার করা হয়েছে ড্রোন, ফোর কে কোয়ালিটি ক্যামেরা এবং অত্যাধুনিক সরঞ্জাম।
প্রতি সপ্তাহে ২ টি পর্ব প্রচার চ্যালেঞ্জিং এবং কষ্টসাধ্য। তবুও নিয়মিত অনুষ্ঠানটি সম্প্রচার অব্যহত আছে। এ বিষয়ে সহযোগিতা করছে প্রশাসন।
কোন পুর্ব প্রস্তুতি কিংবা আয়োজন ছাড়াই তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্তে বদলে যাওয়া বাংলাদেশ টিম পৌঁছে যায় নির্ধারিত আশ্রয়ন প্রকল্পে। তুলে আনে প্রকৃত ভূমিহীন-গৃহহীন সুবিধাবঞ্চিত মানুষের কথা। উন্নয়নের সুফলভোগীরা নিজেদের মুখেই তুলে ধরেন তাদের জীবনের কথা। দেশের প্রতিটি অঞ্চলে ভাষা ও সংস্কৃতির বৈচিত্র আছে। মানুষের জীবনযাপন ব্যবস্থা এবং জনপদের ভিন্নতাও আছে।
দর্শকদের জন্য ভাষা ও সংস্কৃতি সহজ করতে তথ্যচিত্রে ব্যবহার করা হয়েছে সাব টাইটেল। ২০ মে থেকে এ পর্যন্ত দেশের ১৬ জেলা সম্পন্ন করে খুলনা ও সাতক্ষীরা অঞ্চলে শুটিংয়ে ব্যস্ত আছে বদলে যাওয়াবাংলাদেশ টিম। পর্যায়ক্রমে ৬৪ জেলায় ঘুরে দর্শকদের সামনে তুলে ধরা হবে অসহায় মানুষের কথা।
মধ্যম আয়ের দেশ হওয়া স্বত্তে¡ও দেশের বিশাল জনগোষ্ঠী নামহীন, গোত্রহীন, পরিচয়হীন এবং ঠিকানাহীন অবস্থায় ভাসমান জীবনযাপন করছে। আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন কিংবা সমাজের মূলধারার
উন্নয়ন থেকে বিচ্ছিন্ন ও সুবিধাবঞ্চিত পরিবারগুলোকে পুনর্বাসনের মাধ্যমে নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ সরকার।
২ শতক জমির মালিকানা, একটি পাকা বাড়ির দলিল, নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ-সুপেয় পানি সহ আধুনিক নগর সুবিধা দেওয়া হয়েছে ছিন্নমূল জনগোষ্ঠীকে। আশ্রয়নে বেড়ে ওঠা নতুন প্রজন্ম দারিদ্রতার
জীর্ণতা পেছনে ফেলে একদিন এই পরিচয় নিয়েই এগিয়ে আসবে সমাজের মূলধারায়। একদিন সম্ভাবনার হাতছানি এবং মাথার ওপর নিরাপদ ছায়ার সাহসেই দেশের সুনাগরিক হয়ে উঠবে এই
প্রজন্ম। যাদের একসময় দুর্যোগের ত্রাণের জন্য হাত পাততে হতো, ভিক্ষা করে চলতো সংসার কিংবা পরনির্ভরশীলতায় যে মানুষগুলোকে হারিয়ে যেতে হয়েছিলো সমাজ থেকে, সেই সব মানুষ ও
পরিবারকে সমাজে প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে নাগরিক মর্যাদা প্রদান করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল।
দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল ঘুরে প্রশাসনের দক্ষতা ও একনিষ্ঠতায় সম্পন্ন করা মানবিক উদ্যোগের বাস্তবায়ন দেখা গেছে। কিছু অসঙ্গতি চোখে পড়লেও তা নগন্য। পরবর্তিতে সংশোধনযোগ্য। প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্প হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ।
দেশের টেলিভিশন শিল্পে ‘বদলে যাওয়া বাংলাদেশ’র মতো ধারাবাহিক তথ্যচিত্র এটিই প্রথম। ৫০ তম পর্বে দর্শকদের জন্য রয়েছে গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার মানুষের জীবনমান ও অসহায়
ছিন্নমূল পরিবারের প্রাপ্তির কথা। ঘুরে দাঁড়ানোর নেপথ্যের কথা। ‘বদলে যাওয়া বাংলাদেশ’ তথ্যচিত্রটি নির্মাণ করেছেন বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা
কমিটির সদস্য ও একুশে টেলিভিশনের পরিচালক রবিউল হাসান অভী। উপস্থাপনায় আকবর হোসেন সুমন। গ্রন্থনায় আকবর হোসেন সুমন, দিপু সিকদার এবং মানিক শিকদার। চিত্রগ্রহণ ও
ড্রোন পরিচালনায় ফারুক হোসেন তানভীর ও আলী আহমেদ রুবেল। সম্পাদনায় শ্যাম সুন্দর নন্দী। গ্রাফিক্স সুজিৎ হালদার। তথ্যপ্রযুক্তি সহায়তায় আরিফুল ইসলাম ইমন ওমর ফারুক।
ব্যবস্থাপনায় আশরাফুল ইসলাম। সার্বিক সহায়তা ও পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সিনিয়র সচিব তোফাজ্জল হোসেন এবং সিনিয়র সচিবের একান্ত সচিব কায়ছারুল ইসলাম। এছাড়া জেলা প্রশাসক, স্থানীয় প্রশাসন এবং একুশে টেলিভিশনের জেলা প্রতিনিধিরা বদলে যাওয়া বাংলাদেশ তথ্যচিত্রের অংশীদার।