কুমিল্লা থেকে প্রকাশিত দেশের প্রাচীন সংবাদপত্র ‘আমোদ’ তার নিরবচ্ছিন্ন প্রকাশনার ৬৯ বছরে পদার্পণ করেছে। ১৯৫৫ সালের ৫ মে কুমিল্লায় মোহাম্মদ ফজলে রাব্বী ‘আমোদ’ পত্রিকার প্রকাশনা শুরু করেন।
পত্রিকাটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, আমোদ ছিল পূর্ব পাকিস্তানের প্রথম ক্রীড়া সাপ্তাহিক। পরে তা সাধারণ সংবাদপত্রে পরিণত হয়। প্রথম সংখ্যাটির মূল্য ছিল এক আনা। বয়সের দিক দিয়ে সংবাদ, ইত্তেফাক ও অবজারভারের পরে ‘আমোদ’র অবস্থান।
১৯৯৪ সালের ২৮ নভেম্বর আমোদ সম্পাদক মোহাম্মদ ফজলে রাব্বী মৃত্যুবরণ করেন। এরপর আমোদ প্রকাশনার দায়িত্ব নেন তার সহধর্মিনী শামসুননাহার রাব্বী। ২০২১ সালের ২৫ জুন শামসুননাহার মারা যান। বর্তমানে তাদের ছেলে বাকীন রাব্বী সম্পাদনার দায়িত্বে রয়েছেন।
আঞ্চলিক সংবাদপত্র হিসেবে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখায় আমোদ তার যোগ্য স্বীকৃতিও পেয়েছে। জাতিসংঘের সংস্থা ইউনেস্কো এশিয়ার পাঁচটি সেরা আঞ্চলিক পত্রিকার একটি হিসেবে ‘আমোদ’কে স্বীকৃতি দিয়েছে।
কুমিল্লার প্রবীণ সাংবাদিক খায়রুল আহসান মানিক বলেন, ‘বৃহত্তর কুমিল্লা তথা কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চাঁদপুর এবং তার আশপাশের এলাকায় এখন যে সংবাদপত্রের বিকাশ দেখা যায় তার উৎস ‘আমোদ’। এ অঞ্চলে যারা সাহিত্যসেবী হিসেবে সুপরিচিত তারাও আমোদ-এ লিখে হাত পাকিয়েছেন। প্রথম দিকে বৃহত্তর নোয়াখালী ও সিলেটে আমোদ-এর সার্কুলেশন ছিল। গত ৬৭ বছর কুমিল্লা ও আমোদ হাত ধরাধরি করে চলেছে। আমোদ কুমিল্লার শিক্ষা ও সংস্কৃতিতে ব্যপক অবদান রেখেছে।’
লেখক ও গবেষক আহসানুল কবীর বলেন, ‘আমোদ একটা ইতিহাস। শুধু খেলাধুলার সংবাদ প্রকাশ করার মধ্যে দিয়ে বর্তমানে পূর্ণাঙ্গ সংবাদ মাধ্যম সাপ্তাহিক আমোদ।’
প্রাচীন সাপ্তাহিকটির বর্তমান সম্পাদক বাকীন রাব্বী বলেন, ‘প্রতিটি মানুষ সকালে ঘুম থেকে উঠে বলে— একটি নতুন দিনের জীবন পেলাম। তেমনি আমরা প্রতি বৃহস্পতিবার সকালে আমোদ পত্রিকা ছাপা হওয়ার পর হাফ ছেড়ে বলি— আরেকটি সপ্তাহ পত্রিকা প্রকাশ করতে পারলাম। পেশা ও নেশার সঙ্গে সংবাদপত্র প্রকাশনা আমাদের কাছে ইবাদতের মতো। মানুষের ভালোবাসার কারণে এ দীর্ঘ সময়ের পথ পাড়ি দিতে পেরেছি।’