৬ ডিসেম্বর কুড়িগ্রাম পাকিস্তানী হানাদার মুক্ত দিবস। ১৯৭১’র এদিনে বাংলার দামাল ছেলেরা সশস্ত্র মুক্তি সংগ্রামের মাধ্যমে পাক সেনাদের হটিয়ে কুড়িগ্রামকে হানাদার মুক্ত করে। স্বাধীনতা যুদ্ধের চুড়ান্ত বিজয় অর্জিত না হলেও এ অঞ্চলে সেদিন উদিত হয় স্বাধীন বাংলার পতাকা।
মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে ৬ ও ১১ নম্বর সেক্টরের অধীনে ছিল গোটা কুড়িগ্রাম অঞ্চল। শুধুমাত্র ব্রহ্মপুত্র নদ দ্বারা বিচ্ছিন্ন রৌমারী ছিল মুক্তাঞ্চল। সেখানেই চলত মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ। নভেম্বরের প্রথম থেকেই মিত্র বাহিনীর সাড়াশী আক্রমন তীব্র হতে থাকে। একে একে পতন হতে থাকে পাক সেনাদের শক্ত ঘাঁটিগুলো। মুক্ত হয় জেলার ভুরুঙ্গামারী, নাগেশ্বরী, চিলমারী, উলিপুরসহ বিভিন্ন এলাকা। এরপর পাকসেনারা শক্ত ঘাঁটি গড়ে তোলে কুড়িগ্রাম শহরে। কুড়িগ্রামকে মুক্ত করতে মিত্র বাহিনীর বিমান হামলায় বেসামাল হয়ে পড়ে পাক সেনারা। ৫ ডিসেম্বর থেকে মিত্র বাহিনীর সাড়াশী আক্রমণে পিছু হটতে শুরু করে তারা। এরপর আসে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ ৬ ডিসেম্বর। কুড়িগ্রাম হয় হানাদার মুক্ত।
সেদিনের সেই মুক্তির কথা মনে পড়লে এখনও আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন বীর মুক্তিযোদ্ধারা। স্মৃতিচারণ করেন তাদের অনুভুতিগুলো। কোম্পানী কমান্ডার আব্দুল হাই বীর প্রতীকের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা ৬ ডিসেম্বর বিকেল ৪ টায় শহরে প্রবেশ করে নতুন শহরস্থ ওভারহেড পানির ট্যাংকসহ বিভিন্ন স্থাপনার ওপর স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করে। মুক্তিযোদ্ধাদের স্বাগত জানাতে হাজারও মুক্তিকামী মানুষ মিলিত হয় বিজয় মিছিলে।
দেশ স্বাধীন হয়েছে এদেশের বীর মুক্তিযোদ্ধারাও পেয়েছেন তাদের সম্মান। এখন পরবর্তী প্রজন্মের কাছে এদেশের স্বাধীনতা অক্ষুন্ন রাখার আহবান জানান বীর প্রতীক আব্দুল হাই সরকার।
দিবসটি উপলক্ষে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট সহ বিভিন্ন সংগঠন বিজয় র্যালি সহ স্বাধীনতার বিজয় স্তম্ভে পুষ্পমাল্য অর্পন ও আলোচনাসভা সহ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।