ভালোবাসা। কাটাতারের বেড়া বা এপার বাংলা- ওপার বাংলা, কোনটাই বোঝে না! তার প্রমাণ দিলো ভারতীয় তরুণী রিয়া বালা। টানা তিনদিন বাংলাদেশে থেকে স্বামীর দেখা না পেয়ে নিজ দেশে ফেরত যায়। অবশেষে আবার বাংলাদেশে এসে ঠাই পেলো সেই স্বামীর ঘরে।
ঘটনাটি ঘটেছে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ার উপজেলার দেবনগর ইউনিয়নের শিবচন্ডী এলাকায়। ভারতীয় তরুণী রিয়া বালা ভারতের বর্ধমান জেলার অম্বিকা কালনা এলাকার শ্যামল কান্তি বালার মেয়ে। আর বিটু রায় পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ার উপজেলার দেবনগর ইউনিয়নের শিবচন্ডী এলাকার অখিল চন্দ্র রায়ের ছেলে।
জানা গেছে, ভারতীয় তরুণী রিয়া বালা ও বাংলাদেশি যুবক বিটু রায়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তাদের প্রথম পরিচয় হয় বন্ধুত্বের। এর পর সেই বন্ধুত্ব ছড়ায় প্রেমে। দীর্ঘ প্রেমের সম্পর্কের মাঝে ভারতে বিয়েও করেন তারা। তবে একসময় দুই দেশের কাটাতারে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হলে স্বামীর খোঁজে বাংলাদেশে আসেন রিয়া বালা। স্বামীর দেখা না পেয়ে হতাশা নিয়ে নিজ দেশে ফিরে গিয়ে আবারো বাংলাদেশে আসলে অবশেষে সেই স্বামীর ঘরে ঠাই হয় এই তরুণীর। আর এই খবরে মুহূর্তে বিটু রায়ের বাড়িতে ভিড় জমাতে শুরু করে স্থানীয়রা। তবে এমন ঘটনায় অবাক স্থানীয়রা।
তবে প্রেমের সম্পর্কের এমন পরীক্ষায় সফলতা পেয়ে খুশি এই দম্পত্তি।
রিয়া বালা জানান, যে উদ্দেশ্যে বাংলাদেশে আসা, সেই উদ্দেশ্য সফল হয়েছে। আমি আমার স্বামীর সংসারে অবস্থান করছি। এদিকে বিটু রায় জানান, প্রেমের সম্পর্কের পর এমন ঘটনায় পরিবারের সম্মতিতে আদালতে বিয়ে করেছি।
এদিকে পারিবারিক ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘ প্রেমের সম্পর্কের পর বিটু পাসপোর্ট ভিসায় ভারতে গিয়ে ২১ সেপ্টেম্বর জলপাইগুড়ি জেলার রাজগঞ্জ থানার শিকারপুর এলাকায় তাকে বিয়ে করে। এর মাঝে তারা টানা একমাস ভারতে সংসার জীবন শুরু করে। এর মাঝে নিজ দেশে ফেরত এসে বিটু যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়ায় স্বামীর খোঁজে ২৯ নভেম্বর প্রথম বাংলাদেশে এসে তিনদিন ধরে বিটুর বাড়িতে অবস্থান করে হতাশ হয়ে ভারতে চলে যায়। এর মাঝে ৬ ডিসেম্বর (বুধবার) আবারো বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের ইমিগ্রেসনে রিয়া বালা আসলে প্রশাসনের উপস্থিতে তাকে বিটুর পরিবারের সদস্যদের হাতে তুলে দেয়া হয়।
বিটুর বাবা অখিল চন্দ্র রায় জানান, যেহেতু ওই মেয়ে আমার বাড়ির উদ্দেশ্যে আসে। তাই প্রশাসন আমাকে জানালে আমি তাকে গ্রহণ করি। এখন থেকে আমার বৌমা আমাদের সাথে থাকবে। সকলে তাদের জন্য দোয়া করবেন।
এদিকে দেবনগড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সলেমান আলী জানান, আমরা বিষয়টি জানার পর প্রশাসনসহ মেয়েটির সাথে কথা বলেছি। মেয়েটি প্রমের টানে সেচ্ছায় বাংলাদেশে এসেছে। তাই তাকে ছেলের পরিবারের হাতে তুলে দিয়ে তাদের উপর নজর রেখেছি। যেকোন সমস্যায় আমরা তাদের পাশে আছি।
জানা গেছে, একবছরের ভিসার মেয়াদ নিয়ে আসা এই নববধূ ২য় বারের মত বাংলাদেশে আসার পর তাকে বৃহস্পতিবার আদালতে নিয়ে বিটুর সাথে নতুন করে এফিডেফিটে বিয়ে দেয়া হয়।