কুসিক উপনির্বাচনে কুমিল্লা মহানগরীর ৩নং ওয়ার্ডের রেইসকোর্স এলাকায় ‘বাস’ প্রতীকের প্রচারণাকালে ঘড়ি প্রতীকের কর্মীদের পরিকল্পিত সন্ত্রাসী হামলা ও ‘বাস’ প্রতীকের ৩ কর্মীকে আহত করার প্রতিবাদে সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন স্থানীয় কাউন্সিলর সরকার মাহমুদ জাভেদ।
এসময় তিনি ঘড়ি প্রতীকের প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কুকে একজন চিহ্নিত দূর্নীতিবাজ ও সন্ত্রাসের পৃষ্টপোষক উল্লেখ করে সাংবাদিক সম্মেলনে অভিযোগ করেন। জাভেদ বলেন, পুরো কুমিল্লা নগরজুড়ে ডা. তাহসীন বাহার সূচীর বাস প্রতীকের গণজোয়ার দেখে, নির্বাচনের শান্তিপূর্ণ পরিবেশকে বিনষ্ট করার অপচেষ্টায় গত সোমবার বিকেলে রেইসকোর্স এলাকায় ঘড়ি প্রতীকের প্রার্থী তার সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে বাস প্রতীকের প্রচারনায় পরিকল্পিতভাবে হামলা চালিয়েছেন।
মঙ্গলবার ( ৫ মার্চ ) সকালে কুমিল্লা প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন। এসময় মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক আতিক উল্লাহ খোকন, যুগ্ম সাধারন সম্পাদক এড. সৈয়দ নুরুর রহমান, স্থানীয় মহিলা কাউন্সিলর কাউসারা বেগম সুমী সহ দলীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে সরকার মাহমুদ জাবেদ বলেন, “ আমি কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের ৩নং ওয়ার্ড এর তিনবারের নির্বাচিত কাউন্সিলর ও কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক। আসন্ন কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের উপ-নির্বাচনের কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগ মনোনীত একক মেয়র প্রার্থী ডা. তাহসীন বাহার সুচীর ‘বাস’ প্রতীকের কর্মী ।
গতকাল ৪ মার্চ(সোমবার) বিকাল বেলায় আমি আমার ওয়ার্ডের পুরুষ ও মহিলা নেতা -কর্মীদের নিয়ে এলাকায় ‘বাস’ মার্কা প্রতীকের প্রচারণা চালাই। বিকাল অনুমান সাড়ে ৫ ঘটিকার সময় রেইসকোর্স এলাকার পুরাতন পাসপোর্ট অফিস সংলগ্ন এলাকায় জনৈক ইমরুলের বাসার সামনে রাস্তায় পৌছিলে মেয়র প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কুর ঘড়ি প্রতীকের শতাধিক কর্মী একত্রিত হইয়া আমাদের বাস প্রতীকের কর্মীদের উপর হামলা চালায়। এলোপাথারী ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে।
এতে ‘বাস’ প্রতীকের কর্মী শাহীনুর রহমান(সাবেক সদস্য, ভিক্টোরিয়া কলেজ ছাত্রলীগ আহ্বায়ক কমিটি) ও মোঃ কামরুল ইসলাম আহত হয়। আমি আমাদের কর্মীদের রক্ষা করার চেষ্টা করিলে আমাকেও তারা আক্রমণ করে ধারালো চাপাতি দিয়ে কোপ মারিলে আমি আত্মরক্ষার্থে উক্ত কোপ ফিরানোর চেষ্টাকালে চাপাতির কোপ আমার ডান হাতের কনুইর উপরে বাহুতে পরিয়া কেটে জখম হয়। পরে আমি সহ আহত দুই কর্মীকে কুমিল্লা সদর হাসপাতালে নিয়া গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার আমাদের জখমের প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করেন।
এ হামলা ও তিনজনকে আহত করার ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতেই আমি বাদী হয়ে কুমিল্লা কোতয়ালী মডেল থানায় ১৫জন নামীয় আসামী সহ অজ্ঞাতনামা শতাধিক হামলাকারীর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি। আজকে আপনাদের মাধ্যমে হামলাকারী সন্ত্রাসী বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ ও দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি। ”
কাউন্সিলর সরকার মাহমুদ জাভেদ বলেন, “ বিভিন্ন মিডিয়ার মাধ্যমে জেনে অবাক হয়েছি যে, ঘড়ি প্রতীকের প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু রেইসকোর্স এলাকায় বাস প্রতীকের কর্মীদের উপর হামলার প্রকৃত ঘটনাকে আড়াল করতে গতকাল সোমবার রাতে তার বাসায় সাংবাদিক সম্মেলন করে মিথ্যা বানোয়াট তথ্য সাংবাদিকদের কাছে উপস্থাপন করেছেন এবং একটি আংশিক ভিডিও প্রকাশ করেছেন। এতে প্রমানিত হয় হামলার ঘটনাটি ছিল পরিকল্পিত। পুরো কুমিল্লা নগরজুড়ে ডা. তাহসীন বাহার সূচীর বাস প্রতীকের গণজোয়ার দেখে ঘড়ি প্রতীকের প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু নির্বাচনের শান্তিপূর্ণ পরিবেশকে বিনষ্ট করার অপচেষ্টায় পরিকল্পিতভাবে এসব নিন্দনীয় ঘটনা ঘটাচ্ছেন।
আপনারা জানেন,মনিরুল হক সাক্কু একজন চিহ্নিত দূর্নীতিবাজ ও সন্ত্রাসের পৃষ্টপোষক। উনার বিরুদ্ধে দূদক, স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয় ও এনবিআরএ দূর্র্র্নীতির অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে রাজনীতির নামে উনার সন্ত্রাসী বাহিনীর কর্মকান্ড কুমিল্লাবাসী ভুলেনি। বিশেষ করে ২০১০ সালের ১০ অক্টোবর কুমিল্লা টাউন হল মাঠে যুবদলের সম্মেলনে বিএনপির দুইগ্রুপের অস্ত্রবাজির সময় উনার সন্ত্রাসী বাহিনীর তান্ডব দেখেছে পুরো দেশবাসী। আমি বিশ্বাস করি,কুমিল্লার জনগণ এখন অনেক সচেতন, মনিরুল হক সাক্কু ও তার কর্মীরা এসব অপকর্মকান্ড করে নিশ্চিত পরাজয় রোধ করতে পারবে না। ”
পরে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক আতিক উল্লাহ খোকন ও কাউন্সিলর সরকার মাহমুদ জাভেদ।