করোনা মহামারির কারনে দীর্ঘ ৫৪৪দিন বন্ধের পর সারাদেশের ন্যায় দিনাজপুরের হিলিতে খুলেছে সবধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। দীর্ঘদিন পর স্কুলে যেতে পেরে ও ক্লাস করতে পেরে খুশি ছাত্র-ছাত্রীরা।এদিকে করোনার কারনে অভিভাবকদের মনে কিছুটা শংকা থাকলেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্কুল চালু রাখার দাবী।
রবিবার সকাল থেকেই ছাত্র-ছাত্রীরা পরিপাটি হয়ে স্ব স্ব স্কুলের নির্ধারীত স্কুল ড্রেস পড়ে বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়েছেন। দীর্ঘদিন পর ছাত্র-ছাত্রীদের উপস্থিতিতে তাদের কলরবে মুখরিত হয়ে পড়েছে স্কুল প্রাঙ্গন। বিদ্যালয়ে প্রবেশের সময় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও তাপমাত্রা পরিমাপ করা হচ্ছে, যাদের মাস্ক নেই তাদেরকে বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে মাস্ক দিয়ে সকলের মাস্ক পরিধান নিশ্চিত করে বিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে। ৩ফিট করে দুরত্ব রেখে বসতে দেওয়া হচ্ছে।বিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে করোনা সতর্কিত বিভিন্ন ব্যানার লাগানো হয়েছে। উপজেলায় ৪৬টি প্রাথমিক ও ৩৬টি মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান একযোগে খোলা হয়েছে।
৫ম শ্রেনীর শিক্ষার্থী সাদ্দাম হোসেন ও রিয়াজুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিন পর আবারো স্কুল খুলেছে আমরা আবার বিদ্যালয়ে আসতে পারছি ক্লাস করতে পারছি এতে আমাদের বেশ ভালোই লাগছে। আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে মাস্ক পরিধান করে বিদ্যালয়ে আসছি।এতোদিন স্কুল বন্ধ থাকার কারনে আমরা পড়ালেখায় পিছিয়ে পড়েছিলাম। এখন স্কুল খুলেছে যার কারনে পড়ালেখার ক্ষতি কাটিয়ে উঠবো এখন পরিক্ষা হলে ফলাফল ভালো আসবে।
বাংলাহিলি পাইলট স্কুল এন্ড কলেজের দশম শ্রেনীর শিক্ষার্থী সানজিদা আকতার বলেন, এতোদিন পর স্কুল খুলছে যার কারনে আমাদের বেশ ভালো লাগছে। এতোদিন স্কুল বন্ধ থাকার কারনে বাসায় বসে বোরিং ফিল করতাম পড়ালেখা ঠিকমতো হতোনা, বাড়ির বাহিরে বের হতে পারতামনা মানসিক চাপের মধ্যে পড়েছিলাম। এখন স্কুল খোলায় অনেকদিন পর স্কুলে আসতে পারছি বন্ধু বান্ধবদের সাথে দেখা হচ্ছে কথা হচ্ছে ক্লাস করছি সবমিলিয়ে খুব ভালো লাগছে।
শিক্ষার্থীদের অভিভাবক সাইদুল ইসলাম ও নাসিমা বানু বলেন, করোনার কারনে দীর্ঘ দেড়বছরের বেশী সময় ধরে স্কুল কলেজ বন্ধ ছিল বাসাই বসে সকলেই বোর হচ্ছিল পড়ালেখা একদমই করতে চাচ্ছিলোনা।দীর্ঘদিন বন্ধের পর বিদ্যালয় খুলেছে ছেলে মেয়েরা তাদের বিদ্যালয়ে আসতে পারলো আবারো নতুন করে পড়াশোনা করতে পারছে এতে আমরা খুশি তেমনি ওরাও খুব খুশি স্কুলে আসতে পারে। তারা সকলেই মাস্ক পড়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিদ্যালয়ে যাচ্ছে, তবে করোনার কারনে তাদের যে পড়ালেখার ক্ষতি হয়েছিল শিক্ষকরা যদি বাড়তি কেয়ার নেয় তাহলে অন্তত তাদের পড়ালেখার ক্ষতি কাটিয়ে উঠবে। আর বিদ্যালয় খোলার ও পাঠদানের জন্য বর্তমানে যে আয়োজন করা হয়েছে এটি বেশ সুন্দর এমন অবস্থা থাকলে আশা করি করোনার কারনে স্কুল কলেজে আর কোন প্রভাব পড়বেনা।
বাংলাহিলি ১মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আতিয়ার রহমান বলেন, দীর্ঘদিন পর স্কুল খুলবে একারনে আমরা আগে থেকেই বিদ্যালয় পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতাসহ বিদ্যালয়ে পাঠদানের জন্য সবধরনের প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। দীর্ঘ দেড়বছর পর আজ বিদ্যালয় খুলেছে, এতে করে শিক্ষকদের মাঝে যেমন আনন্দ উল্লাস বিরাজ করছে তেমনি শিক্ষার্থীদের মাঝে স্কুলে আসার জন্য একইধরনের আনন্দ বিরাজ করছে। শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ি বিদ্যালয়ে পাঠ দান করা হচ্ছে। করোনার কারনে দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার যে ক্ষতি হয়েছে সেই ঘাটতি পুরনে আমরা চেষ্টা করে যাবো।
আহসানুজ্জামান সোহেল/অননিউজ24