কুমিল্লা সিটি নির্বাচন- বদলে যাবে হিসাব নিকাশ
শান্তনু হাসান খান।।
আসন্ন কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী রয়েছেন প্রায় ১১ জন। বাকীরা স্বতন্ত্র হলেও দলীয়ভাবে নমিনেশন চাইবেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরফানুল হক রিফাত। তার পাশাপাশি দলীয়ভাবে নমিনেটেড হতে চাইবেন নূরুর রহমান তানিম, এডভোকেট আনিসুর রহমান মিঠু, মাসুদ পারভেজ খান ইমরান, কবিরুল ইসলাম শিকদার, কাজী ফারুক আহমেদ, মেজর (অব:) মামুনুর রশিদ, শাহজাহান বিপ্লব, কামরুল হাসান বাবুলসহ চলতি মেয়র মনিরুল হক সাক্কু।
এছাড়াও ২৭টি ওয়ার্ডে ২৭ জন সাধারণ কাউন্সিলর সহ সংরক্ষিত মহিলা আসনে ৯ জন প্রার্থীর পাশাপাশি প্রতিটি ওয়ার্ডে ৩ থেকে ৭ জন পর্যন্ত প্রার্থীরা মাঠে আছেন। আগামী ২দিন পর যাচাই বাছাইতে অনেকে ঝড়ে যাবেন। তারপরেও (এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত) ২১০ জনের মধ্যে দেড় শতাধিক প্রার্থী এবারের নির্বাচনে অংশ নিবেন। তবে এবার ১৭ নং ওয়ার্ডে শুধুমাত্র একজন মহিলা প্রার্থী আছেন সাধারণ কাউন্সিলর হিসেবে। তিনি প্রয়াত কাউন্সিলর সোহেলের স্ত্রী- এলাকার সবার প্রিয় রুনা আপা।
তবে আশার কথা জনপ্রিয়তার কারণে অনেক কাউন্সিলর পুনরায় নির্বাচিত হয়ে আসবেন বলে অনেকে মনে করছেন। এর মাঝে মাসুদ, জাবেদ, জম্পি, মনি, সাদি, আলমগীর, ফজল খান, কাজী মাহাবুব, শাহ আলম মজুমদার, হাসান, সাত্তার-ওঠে আসার সম্ভাবনা প্রচুর। ইভিএম-এ সুষ্ঠু নির্বাচনের মধ্যদিয়ে এবার হিসাব নিকাশ বদলে যাবে। তবে বিতর্কিত বেশ কিছু কাউন্সিলর আছেন-এলাকার মানুষ তাদের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠছেন। এ ক্ষেত্রে ২১ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কাজী মাহবুবুর রহমানের সফলতা ছিল সবচেয়ে বেশি। প্রায় ১৫ হাজার ভোটার অধ্যুষিত এই ওয়ার্ড কুমিল্লা সিটির ২৭টি সাধারণ ওয়ার্ডের মধ্যে করোনা টিকা দানের ক্ষেত্রে ১ম স্থান এবং উন্নয়নে ৩য় স্থান রয়েছে। এক সময়ের অবহেলিত ও উন্নয়ন বঞ্চিত এই ওয়ার্ড ২০১২ থেকে ২০২২ পর্যন্ত মাত্র ১০ বছরে এলাকার মানুষের কাছে তিনি নন্দিত। বর্তমানে ২১নং ওয়ার্ডের উন্নয়নে উলেখযোগ্য বেশ কিছু বড় প্রকল্পের বরাদ্দ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে শাকতলাস্থ দৌলতপুর রেল গেইট হতে লাইনের পশ্চিম পার্শ্ব হয়ে ময়নামতি রেল স্টেশন পর্যন্ত ২১ ফুট প্রস্থের রাস্তা ও ড্রেনের উন্নয়ন এবং রেল লাইনের পূর্ব পাশের কিছু অংশে ড্রেন নির্মাণ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা গেলে এলাকার মানুষ উপকৃত হবে অনেকে মন্তব্য করেন।
সিটি নির্বাচনে মানুষের মনোভাব জানা গেছে ইতিমধ্যেই। মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক রিফাত যদিও দলীয়ভাবে নৌকার প্রতীক পান-তাহলে তার উঠে আসা নিয়েও বেশ চিন্তিত দলীয় ফোরামের লোকজন। এখানে জেলা আওয়ামীলীগ ও মহানগর আওয়ামীলীগের তৃণমূল নেতাকর্মীদের দোটানা মনোভাব লক্ষ্য করা গেছে। অপরদিকে তানিমের বিষয়টি যদি চূড়ান্ত হয়ে যায়, তাহলে তার উঠে আসা নিয়ে অনেকে খুশি হবেন। তানিম, মিঠু, ইমরান, কবির শিকদার যদি দলীয় নমিনেশন না পান তাহলে কুসিক নির্বাচন মোড়টা ঘুরে যাবে নারায়নগঞ্জের আবহাওয়ার মতো। আর সে আবহাওয়াতে ঘূর্ণিপাকে ঘুরবেন সাক্কু। যদিও বিএনপি থেকে ধানের ছড়া প্রতীকে নির্বাচন করতে দেয়া হবে না তাঁকে। তারপরেও সে মাঠে থাকবে। এর মাঝে কায়সার ও বাপ্পী কয়েকদিনের জন্য মাঠ গরম করে রেখেছিলো। শেষ অবধি বাপ্পী এ প্রতিবেদককে সাফ জানিয়ে দেন-আমি নির্বাচনে থাকছি না। দলের হাই কমান্ড যে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন সেটাকে আমি শ্রদ্ধার চোখে দেখি।
এবারের নির্বাচনে প্রায় আড়াই লক্ষ ভোটারদের মধ্যে যে কোন প্রার্থী দশ থেকে বার হাজারের বেশি ভোট সংগ্রহ করতে পারবেন না বলে অনেকে মন্তব্য করেছেন। তবে যিনি পাশ করবেন তার ভোট সংগ্রহ হবে ৬০ থেকে ৬৫ হাজারের মতো। আর নিকটতম প্রার্থী থাকবেন ৪০ থেকে ৪৫ হাজারের কাছাকাছি।
সুষ্ঠু ভোটের প্রত্যাশা করেন সবাই। যেহেতু নতুন সিইসি’র এটাই হবে প্রথম চ্যালেঞ্জ। যে কোন মূল্যে কুসিক নির্বাচন তিনি সুষ্ঠু চান। কেননা এর মধ্যে নিহিত রয়েছে ২০২৩ এর জাতীয় নির্বাচনের বিষয়টি।