হিলিতে ভরা মৌসুমে বৃষ্টির দেখা নেই মাঠ ফেটে চৌচির বিপাকে কৃষক
হিলি প্রতিনিধি
আমন ধান রোপনের ভরা মৌসুম আষাঢ় মাস শেষ হয়ে আসলেও দিনাজপুরের হিলিতে বেশ কিছুদিন ধরে দেখা নেই বৃষ্টির। বৃষ্টির অভাবে মাঠের পর মাঠ ফেটে চৌচির হয়ে গেছে যার কারনে ধান রোপন করতে পারছেননা কৃষকরা। একইভাবে বৃষ্টির অভাবে ধানের চারাগুলো মরে যাওয়ার ধান রোপন করা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। এদিকে সেচযন্ত্র চালুর মাধ্যমে জমিতে পানি নিয়ে ধান রোপনের পরামর্শ দিচ্ছেন কৃষি বিভাগ।
হিলির ছাতনি গ্রামের কৃষক আনসার আলী বলেন, আমন ধান রোপন করা হয় সম্পুর্ন আকাশের বৃষ্টির পানি দিয়ে। কিন্তু বেশ কিছুদিন ধরে হিলিতে কোন বৃষ্টিপাত নেই যার কারনে মাঠের জমিতে কোন পানি নেই। সময় চলে যাচ্ছে কিন্তু আমরা পানির অভাবে ধান রোপন করতে পারছিনা। এছাড়া পানির অভাবে ধানের বীজ সেগুলো মরে যাচ্ছে এতে করে আমরা খুব বিপদের মধ্যে পড়ে গেছি। এখন আমরা কি করবো সেই নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়ে গেছি। এখন তো বৃস্টিপাত হওয়ার কোন লক্ষ্যন পাওয়া যাচ্ছেনা এর কারনে আমরা জমি নিয়ে তো অসহায় অবস্থায় পড়ে গেলাম। আমরা গরীব মানুষ আমরা যদি আবাদ করতে না পারি তাহলে আমরা কিকরে খাবো।
একই গ্রামের কৃষক তসলিম উদ্দিন বলেন, বীজ থেকে শুরু করে জমিতো ধান রোপনের জন্য সম্পুর্নভাবে তৈরি করে রেখেছি এখন শুধু বৃষ্টিপাতের অপেক্ষা। কিন্তু বৃষ্টিপাত না হওয়ার কারনে তো জমি নিয়ে পড়ে আছি এখন পর্যন্ত এক বিঘা জমিতেও ধান লাগাতে পারিনি। এখন যদি বৃষ্টিপাত না হয় তাহলে তো সমস্যা বেশী আবাদ করে সমস্যা আর আবাদ যদি না হয় তাহলে সমস্যা আরো বেশী হবে। এখন তো আমাদের এলাকায় শ্যালোমেশিনের কোন পরিস্থিতি নেই ডিপটিউবয়েল আছে কিন্তু তাদের কোন যোগাযোগ নেই তারা যদি চালু করতো তাহলে তো ধান রোপন করতে পারতাম। অনেক দিন ধরে বৃষ্টিপাত নেই যার কারনে শুকানেত জমি নিয়ে পড়ে আছি।
জালালপুর গ্রামের কৃষক লুৎফর রহমান বলেন,মাঠের অবস্থা তো খুবই খারাপ বৃষ্টিপাত নেই জমি ফেটে চৌচির হয়ে গেছে প্রচুর পরিমান ঘাস গজিয়ে গেছে। বাধ্যহয়ে শুকনাতে জমি চাষ করে নিচ্ছি এখন কতদিনে বৃষ্টিপাত হবে তারপর জমিতে ধান রোপন করা হবে। যদি পানির ব্যবস্থা হতো তাহলে হয়তোবা জমিগুলোতে ধান রোপন করতে পারতাম।
অপর কৃষক মিরাজুল ইসলাম বলেন,জমিতে পানি না থাকার কারনে এখন পর্যন্ত কোন ধান রোপন করা যাচ্ছেনা। অনেক জায়গায় শোনা যাচ্ছে ডিপটিউবয়েল চালু করে তারা জমিতে ধান রোপন করছে। কিন্তু আমাদের এই দিকে তো এখন পর্যন্ত এইরকম কোন ব্যবস্থা নেই যার কারনে ধান রোপন করা সম্ভব হচ্ছেনা। আর দুয়েকদিন পরেই শ্রাবন মাস পরে যাবে এই সময় মাঠে মোটামুটি জমিতে ধান লাগানো প্রায় শেষের দিকে হয়ে যায় কিন্তু এবারে তো আমরা জমি কেউ দুচাষ করেছি কেউ চার চাষ করেছে আর কেউ দুচাষ করে ধান রোপন করবে কিন্তু বৃষ্টির কারনে সেই জমিগুলো সব পড়ে আছে কোন ধান রোপন করা যাচ্ছেনা।
হাকিমপুর উপজেলা কৃষি অফিসার ড.মমতাজ সুলতানা বলেন,চলতি মৌসুমে হাকিমপুর উপজেলায় আমন ধান রোপনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে ৮হাজার ১৫৫ হেক্টর জমিতে। ইতোমধ্যেই ১৫৫ হেক্টর জমিতে ধান রোপন করা হয়েছে। বাকি জমিতে রোপন কাজ চলছে কিন্তু বৃষ্টিপাত না হওয়ার কারনে একটু বিলম্ব হচ্ছে। আমরা কৃষকদের সম্পুরক সেচের মাধ্যমে লক্ষ্যমাত্রা পুরুন করার চেষ্টা করছি। আমরা কৃষকদের সেচ প্রদানের পরামর্শ দিচ্ছি সেই সাথে সেচযন্ত্রগুলো যেন চালু রাখা হয় সেই ব্যবস্থা গ্রহন করছি। এছাড়া আগামী একসপ্তাহের মধ্যে বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে যদি বৃষ্টিপাত হয় তাহলে কৃষকরা উপকৃত হবে তেমনি রোপন নিয়ে যে সমস্যা সেটি নিরসন হবে।