ঝালকাঠিতে ভেকসিন ক্যাম্পেইনে স্বাস্থ্য সহকারীকে মারধর চেয়ারম্যানের
কাজী খলিলুর রহমান, ঝালকাঠি প্রতিনিধি।।
ঝালকাঠিতে এক ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে এনায়েত করিম (৩৫) নামে স্বাস্থ্য সহকারীকে মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন উপলক্ষে করোনার বিশেষ টিকাদান কর্মসূচি চলাকালীন সময় সদর উপজেলার পোনাবালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের হল রুমে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় টিকাদান কর্মসূচিতে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন স্বাস্থ্য পরিদর্শক। চেয়ারম্যানের দাবি, এনায়েত করিম জামায়েতের কর্মী, মিথ্যাচার করছেন। এনায়েত করিম বর্তমানে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তিনি একই ইউনিয়নের হাজরাগাতী গ্রামের ইউনুস আলী সিকদারের ছেলে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান মো. আবুল বাশার খানের বিরুদ্ধে সদর থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন এনায়েত করিম।
প্রত্যক্ষদর্শী ও সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন উপলক্ষে করোনার বিশেষ টিকাদান কর্মসূচির আওতায় সকালে পোনাবালিয়া ইউনয়ন পরিষদের হলরুমে এক হাজার ৫০০ জনকে টিকা দেওয়ার কাজ শুরু করেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। ওই কেন্দ্রের নারী বুথের দায়িত্বে ছিলেন স্বাস্থ্য সহকারী এনায়েত করিম। নারী বুথে তাকে দায়িত্ব দেওয়ায় সকালে ইউপি চেয়ারম্যান মো. আবুল বাশার খান স্বাস্থ্য পরিদর্শক মাকসুদা বেগমের ওপর ক্ষিপ্ত হন।
আরও জানা যায়, দুপুর দুইটার দিকে নারী বুথে বেশি ভিড় থাকায় এনায়েত ভিড় কমাতে নারী বুথকে দুটি ভাগে ভাগ করেন। এ সময় চেয়ারম্যান আবুল বাশার দুপুরে টিকাকেন্দ্রে এসে দুটি নারী বুথ দেখে উত্তেজিত হয়ে এনায়েত করিমকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল শুরু করেন এবং একপর্যায়ে এনায়েতকে সবার সামনে কিল, ঘুষি ও লাথি মেরে মেঝেতে ফেলে দেন চেয়ারম্যান। এতে কিছু সময়ের জন্য টিকাদান বন্ধ হয়ে যায়। পরে স্বাস্থ্য সহকারী এনায়েত করিমকে অসুস্থ অবস্থায় সহকর্মীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন।
স্বাস্থ্য সহকারী এনায়েত করিম বলেন, হঠাৎ করে চেয়ারম্যান আমার ওপর চড়াও হবেন আমি ভাবিনি। তিনি আমাকে মারধর করে শুধু লাঞ্ছিতই করেননি, সিরিঞ্জ দিয়ে আমার পেট ফুটো করে দেওয়ার হুমকিও দিয়েছেন। আমরা মানুষের জন্য ঝুঁকি নিয়ে কাজ করি। আজ টিকা দিতে গিয়ে আমাকে চেয়ারম্যানের হাতে লাঞ্ছিত হতে হলো। স্বাস্থ্য পরিদর্শক মাকসুদা বেগম বলেন, চেয়ারম্যান শত শত মানুষের সামনে আমার সহকর্মীকে মারধর করেছে। এ ঘটনার বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমরা পরবর্তীতে টিকাদান কর্মসূচিতে অংশ নেব না।
অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান মো. আবুল বাশার খান বলেন, স্বাস্থ্য সহকারী এনায়েত করিম আমার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করছেন। তার সঙ্গে আমার এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। তিনি জামায়াতের কর্মী, তাই টিকা কর্মসূচি বানচাল করে আমার ইউনিয়নের বদনাম করতে চাচ্ছে। সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খলিলুর রহমান বলেন, অভিযোগপত্র গ্রহণ করেছি, বিষয়টি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আহসানুজ্জামান সোহেল/অননিউজ24।।