কুমিল্লায় স্কুল ছাত্রী ধর্ষণ মামলায় একজনের যাবজ্জীবন
কুমিল্লা প্রতিনিধি।।
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলায় অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের দায়ে একজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
মঙ্গলবার কুমিল্লার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ আদালতের বিচারক জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুন আসামির উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা দেন বলে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (স্পেশাল পিপি) প্রদীপ কুমার দত্ত জানান।
দণ্ডিত মো. আলাউদ্দিন (৫২) বরিশাল সদর উপজেলার কুন্ডলীপাড়া গ্রামের বাসিন্দা।
যাবজ্জীবনের পাশাপাশি তাকে দুই লাখ টাকা জরিমানা; অনাদায়ে আরও দুই মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয় রায়ে।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, আলাউদ্দিন চৌদ্দগ্রামে কসমেটিকস ব্যবসা করবেন। ২০২০ সালের ১৮ জুলাই ১৩ বছর বয়সি ওই শিক্ষার্থী ২০ টাকা নিয়ে আলাউদ্দিনের ঘরের ভেতরে চোখের কাজল কিনতে যায়।
এ সময় তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন আলাউদ্দিন। পরে ওই কিশোরীকে প্রাণে মেরে ফেলার ভয়ভীতি দেখিয়ে ঘটনাটি কাউকে না বলার জন্য হুমকি দেন তিনি।
ঘটনার কয়েক মাস পর স্কুল ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়লে ২০২১ সালের ১১ জানুয়ারি তাকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে ২৪ সপ্তাহ ১ দিনের অন্তঃসত্ত্বা বলে চিকিৎসক জানান।
পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে পুরো ঘটনা খুলে বলে। এ ঘটনায় কিশোরীর বাবা পরদিন বাদী হয়ে আলাউদ্দিনকে আসামি করে চৌদ্দগ্রাম থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
পরে আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায় পুলিশ।
তদন্ত শেষে ২০২১ সালের ১৮ জুলাই আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন তদন্ত কর্মকর্তা। সাতজনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত তাকে দোষী সাব্যস্ত করে এ রায় দেয়।
আইনজীবী প্রদীপ বলেন, “রায়ে বলা হয়েছে, ধর্ষণের কারণে কিশোরীর গর্ভে যে ছেলে সন্তান জন্মগ্রহণ করেছে- তাকে তার মা কিংবা তার আত্মীয়-স্বজনের তত্ত্বাবধানে রাখা যাবে। সন্তানটি তার বাবা বা মা কিংবা উভয় পরিচয়ে পরিচিত হতে অধিকারী।
“সন্তানের বয়স ২১ বছর না হওয়া পর্যন্ত তার ভরণপোষণের ব্যয় রাষ্ট্র বহন করবে। সন্তানের ভরণপোষণের জন্য প্রদেয় অর্থ সরকার ধর্ষক আলাউদ্দিনের কাছ থেকে আদায় করতে পারবে। আর আসামির বিরুদ্ধে আরোপিত অর্থদণ্ডের অর্থকে ধর্ষণের শিকার ওই কিশোরীর ক্ষতিপূরণ হিসেবে গণ্য করা রয়েছে।”
তিনি বলেন, “এ ছাড়া দণ্ডিত অর্থ কিশোরী বরাবর পরিশোধ না করলে ক্ষতিপূরণের অর্থ আদায়ের নিমিত্তে আসামির স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি নিলামে বিক্রি করে বিক্রয়কৃত অর্থ তার ক্ষতিপূরণ হিসেবে পরিশোধ করার জন্য জেলা কালেক্টর, কুমিল্লাকে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।”
একে/অননিউজ২৪