যুক্তরাজ্যে লেবারদের বিজয় কেতন ওড়ালেন রূপা-রুশনারাও
অনলাইন ডেস্ক।।
যুক্তরাজ্যের সাধারণ নির্বাচনে দীর্ঘ ১৪ বছর পর জয় পেয়েছে লেবার পার্টি। ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড, ওয়েলস এবং উত্তর আয়ারল্যান্ডে একযোগে অনুষ্ঠিত ভোটে ৩৩৩টি আসন নিয়ে নিরঙ্কুশ জয় পেয়েছে কিয়ার স্টারমারের নেতৃত্বে উজ্জীবিত দলটি। বিপরীতে সবশেষ মেয়াদে নেতাদের লাগাতার ব্যর্থতায় ভরাডুবি হয়েছে কনজারভেটিভ পার্টির। মাত্র ৭১ আসন নিয়ে ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়াতে হচ্ছে দলটিকে।
লেবারদের বিশাল এ জয়ে তাদের হয়ে বিজয় কেতন উড়িয়েছেন চার বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত প্রার্থীও। যুক্তরাজ্যের হ্যাম্পস্টেড এবং হাইগেট থেকে চতুর্থবারের মতো এমপি নির্বাচিত হয়েছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাতনি টিউলিপ সিদ্দিক। এবারের নির্বাচনে ২৩,৪৩২ ভোট (৪৮ দশমিক ৩ শতাংশ) পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন তিনি। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কনজারভেটিভ প্রার্থী ডন উইলিয়ামস পেয়েছেন ৮,৪৬২ ভোট। যুক্তরাজ্য সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন টিউলিপ সিদ্দিক। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য দায়িত্ব পালন করেন শিশু ও প্রাথমিক শিক্ষাবিষয়ক শ্যাডো মন্ত্রী এবং শ্যাডো অর্থনৈতিক সচিব হিসেবে।
নির্বাচনে ১৮৫৩৫ ভোট পেয়ে দ্বিতীয়বারের মতো হাউজ অব কমন্সে বসতে যাচ্ছেন আরেক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আপসানা বেগম। যুক্তরাজ্যের পূর্ব লন্ডনে পপলার এন্ড লাইম হাউজ আসন থেকে লড়েছিলেন তিনি। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী গ্রীন পার্টির নাটালি পেয়েছেন ৫৯৭৫ ভোট। আপসানার সাবেক স্বামী অপর ব্রিটিশ-বাংলাদেশি প্রার্থী এহতেশামুল হক পেয়েছেন ৪৫৫৪ ভোট।
লেবার পার্টির হয়ে দাপুটে জয় পেয়েছেন আরেক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত রূপা হকও। ২৮১৩২ ভোট পেয়ে ইলিং সেন্ট্রাল এবং অ্যাক্টনে তার আসনটি ধরে রেখেছেন তিনি। রূপার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কনজারভেটিভ প্রার্থী জুলিয়ান গ্যালান্ট পেয়েছেন ১৪৮৩২ ভোট।
যুক্তরাজ্যের হাউজ অব কমন্সের প্রথম বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত প্রতিনিধি রুশনারা আলী জিতেছেন বেথনাল গ্রিন অ্যান্ড বো আসন থেকে। লেবার পার্টির হয়ে ৪৪ হাজার ৫২ ভোট পেয়ে রুশনারা এক রকম উড়িয়ে দিয়েছেন কনজারভেটিভদের প্রতিনিধি নিকোলাস স্টোভল্ডকে। রুশনারার বিপরীতে দাঁড়িয়ে মাত্র ৬ হাজার ৫২৮ ভোট পড়েছে তার ঝুলিতে।
যুক্তরাজ্যের এবারের নির্বাচনে রেকর্ড ৪ হাজার ৫১৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। একেকটি আসনে গড়ে প্রার্থী ছিলেন ৭ জন করে। ৩১৭টি আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়েন ৪৫৯ জন।
যুক্তরাজ্যে এবারের সাধারণ নির্বাচনে বিভিন্ন দলের মনোনয়নে প্রার্থী হন বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক। এর বাইরে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন কেউ কেউ। সব মিলিয়ে অন্তত ৩৪ জন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন এবারের নির্বাচনে।
নিয়ম অনুযায়ী, সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পাওয়া দলকে সরকার গঠন ও দলের নেতাকে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আহ্বান জানাবেন যুক্তরাজ্যের রাজা তৃতীয় চার্লস। আগামী ৯ জুলাই নতুন পার্লামেন্ট সদস্যদের শপথ গ্রহণ ও স্পিকার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ১৭ জুলাই রাজা তৃতীয় চার্লসের উদ্বোধনী বক্তব্যের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হবে নতুন সরকারের।