পঞ্চগড়ে তিনমাস ধরে নিখোঁজ ছেলে, সাবেক রেলমন্ত্রীসহ ১৯ জনের নামে বাবার মামলা

ডিজার হোসেন বাদশা, পঞ্চগড় প্রতিনিধি।।

পঞ্চগড়ে গত তিন মাস ধরে আল আমিন নামে এক যুবক নিখোঁজ থাকায় হত্যার পর লাশ গুমের অভিযোগে তুলে সাবেক রেলপথ মন্ত্রী ও পঞ্চগড়-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নূরুল ইসলাম সুজনসহ ১৯ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেছে নিখোঁ আল আমিনের বাবা মনু মিয়া।

রোববার (১০ নভেম্বর) পঞ্চগড় সদর থানায় এই মামলা করেন পঞ্চগড় সদর উপজেলা দর্জিপাড়া এলাকায় বাসিন্দা মনু মিয়া। এছাড়া নাম না জানা আসামী রয়েছে আরও ১৫০ জন।

পরিবারের ধারণা পঞ্চগড়ে আগস্ট বিপ্লবে অংশ নেয়ায় তাকে হত্যার পর গুম করে রাখা হয়েছে। এদিকে জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের তিন মাস অতিবাহিত হলেও ছেলেকে না পাওয়ায় মামলা দায়ের করে ছেলেকে ফেরত পেতে প্রশাসনের সহায়তা কামনা করেছেন পরিবারটি।

মামলার অপর আসামীরা হলেন পঞ্চগড়-১ আসনের আওয়ামীলীগের সাবেক সাংসদ নাঈমুজ্জামান ভূইয়া, একই আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মজাহারুল হক প্রধান, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার সাদাত সম্রাট, জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফুল ইসলাম পল্লব, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আবু নোমান হাসান, সাধারণ সম্পাদক সাদমান সাদিক প্লাবন পাটোয়ারী, পঞ্চগড় পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর আশরাফুল ইসলাম, হাসনাত মো. হামিদুর রহমান, পঞ্চগড় পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি কাজী আল তারিক, সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির উজ্জলসহ ১৯ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।

মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, পঞ্চগড় সদর উপজেলা দর্জিপাড়া এলাকার বাসিন্দা মনু মিয়ার ছেলে আল আমিন পেশায় রিকশা চালক। পঞ্চগড়ে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনে জুলাই আগস্ট বিপ্লবে অংশ নিয়েছিল সে। আল আমিন ৫ আগস্ট সকালে বাড়ি থেকে বের হয়ে পঞ্চগড় চৌরঙ্গী মোড়ে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিছিলে অংশ নেয়। দুপুরে দুইজনের সাথে বাড়ি ফেরার পথে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান সাদিক পাটোয়ারী প্লাবনের বাড়ি সামনে তাকে আটক করা হয়। পরে আওয়ামীলীগের নেতাদের নির্দেশে তার উপর হামলা করা হয়। ধারালো অস্ত্র দিয়ে আল আমিনকে এলোপাথারি আঘাত করা হয়। তারপর তাকে টেনে হিচরে ছাত্রলীগ নেতা প্লাবনের বাড়ির দিকে নিয়ে যাওয়া হয়। আল আমিনের সাথে থাকা রায়হানুল ইসলাম রিফাত ও সুজন ইসলামকে আহত অবস্থায় স্থানীয়রা উদ্ধার করে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। এদিকে রাতে বাড়ি না ফিরলে খোঁজাখুঁজি শুরু করে আল আমিনের পরিবার। ১৪ আগস্ট থানায় সাধারণ ডায়েরিও করে তারা। এদিকে রিফাত ও সুজনের মাধ্যমে এই ঘটনা জানতে পেরে আওয়ামীলীগ ও তার অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের আসামী করে মামলা করে আল আমিনের বাবা।

এ বিষয়ে পঞ্চগড় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম মাসুদ পারভেজ বলেন, মামলা দায়েরের পর থেকে সকল আসামীদের গ্রেফতারে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

একে/অননিউজ24

আরো দেখুনঃ