বুড়িচংয়ের শংকুচাইলে মসজিদ কমিটি নিয়ে উত্তেজনা, এলাকাবাসীর ক্ষোভ

কুমিল্লা প্রতিনিধি।।

কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার ঐতিহ্যবাহী শংকুচাইল গ্রামের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদকে ঘিরে বিরোধ ও উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। এলাকাবাসীর সর্বসম্মতিক্রমে গঠিত কমিটিকে পাশ কাটিয়ে একদল প্রভাবশালী গোপনে নতুন কমিটি গঠন করায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

এলাকাবাসী জানান, গত ১ এপ্রিল এক হাজারেরও বেশি এলাকাবাসীর স্বাক্ষর ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে মসজিদের নতুন কমিটি গঠিত হয়। এ কমিটিতে রয়েছেন বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব ডা. আব্দুস সালাম, ডা. গোলাম সারোয়ার বিদ্যুৎ, শিল্পপতি মাসুদুর রহমান, এসপি মিজানুর রহমান বেলাল, এমরান খাঁনসহ আরও অনেকে।

দায়িত্ব গ্রহণের পর নতুন কমিটি প্রথমবারের মতো মসজিদের আর্থিক স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে ঢাকাস্থ স্বনামধন্য সিএ ফার্ম বখতিয়ার ইস্রাফিল অ্যান্ড কোং এর মাধ্যমে অডিট শুরু করে। তবে পূর্ববর্তী কমিটির দায়িত্বশীল হাজী ইউনুস ভূঁইয়া ও মেম্বার মিজানকে একাধিকবার নোটিশ দেওয়া হলেও তারা কোনো হিসাব-নিকাশ জমা দেননি। বরং তাদের উদ্ধত আচরণের অভিযোগ উঠেছে।

অডিটে পূর্ববর্তী কমিটিগুলোর আয়-ব্যয়ে অনিয়ম ও অর্থ আত্মসাতের প্রমাণ মেলে। এ অবস্থায় অভিযোগ উঠেছে, পূর্ববর্তী কমিটির কয়েকজন সদস্য ও বর্তমান ইমাম মোস্তাফিজুর রহমান হেলাল গোপনে ওয়াকফ দপ্তরে আবেদন করে আরেকটি কমিটি অনুমোদন করিয়েছেন। এলাকাবাসীর দাবি, ওয়াকফ পরিদর্শককে প্রভাবিত করেই এই কমিটি অনুমোদন করানো হয়েছে।

এ ঘটনায় গ্রামের সর্বস্তরের মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করে। তারা নির্বাচিত কমিটিকে উপেক্ষা করে অনুমোদিত কমিটিকে ‘ষড়যন্ত্রমূলক’ আখ্যা দেন। এলাকাবাসীর একাধিক প্রতিনিধি জানান, “আমরা জনগণের ইচ্ছায় গঠিত কমিটির পক্ষেই আছি। দুর্নীতিবাজ চক্রকে যেকোনো মূল্যে প্রতিহত করা হবে।”

গ্রামবাসী ধর্ম মন্ত্রণালয়, ওয়াকফ প্রশাসন ও জেলা প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছে- জনগণের ইচ্ছানুযায়ী গঠিত কমিটিকে প্রজ্ঞাপন জারি করে কার্যকর করতে হবে এবং শংকুচাইল গ্রামকে সম্ভাব্য সংঘাত থেকে রক্ষা করতে হবে।

এছাড়া গ্রামবাসীর পক্ষ থেকে মো. আলাউদ্দিন বাংলাদেশ ওয়াকফ স্টেট প্রশাসকের নিকট অনুমোদিত কমিটি বাতিলের আবেদন করেছেন।

মো. আলাউদ্দিন বলেন, “এক হাজারেরও বেশি মুসল্লির স্বাক্ষরে নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছিল। দায়িত্ব নিয়ে দেখা যায়, অর্থনৈতিক অনিয়ম রয়েছে। এতে মসজিদের ইমামসহ কতিপয় দুষ্কৃতিকারীর স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় তারা গোপনে আরেকটি কমিটি গঠন করেছে। মুসল্লিদের মতামত তো দূরের কথা, তাদের সঙ্গে কোনো আলোচনা পর্যন্ত করা হয়নি।”

এ বিষয়ে শংকুচাইল কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ইমাম মুস্তাফিজুর রহমান হেলাল বলেন, “এই মসজিদের সমস্ত ভূমি আমার দাদা দান করেছেন। আমি দীর্ঘ ২৭ বছর ধরে এ মসজিদের মতোয়াল্লি, কমিটির সাধারণ সম্পাদক এবং ইমামের দায়িত্ব পালন করে আসছি। কিন্তু সম্প্রতি কিছু লোক ষড়যন্ত্র করে আমাকে বাদ দিয়ে একটি কমিটি গঠন করে। পরে বিষয়টি আমি ওয়াকফ স্টেটে আবেদন করলে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের নিয়ম অনুযায়ী আমাকে রেখেই নতুন কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়।”

jn

আরো দেখুনঃ