বাগমারায় স্কুলের নামে বিল লিজ নিয়ে মাছচাষ করছেন যুবদল নেতা

আবু বাককার সুজন, বাগমারা (রাজশাহী)

বাগমারার শ্রীপুর ইউনিয়নের গাওড়া বিল সরকারিভাবে লিজ নেওয়া হয়েছে চাঁইপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের নামে। তবে কাগজপত্রে স্কুলের নামে বিলটি লিজ নেওয়া হলেও বর্তমানে বিলটি দখল করে নিয়ে শ্রীপুর ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি রহিদুল ইসলাম মাছ চাষ করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে এখন মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
জানা গেছে, শ্রীপুর ইউনিয়নের চাঁইপাড়া মৌজায় গাওড়া বিলে সাত বিঘা সরকারি খাস জমি (জলাশয়) রয়েছে। বিলটির খাস জমির পুরো অংশ বাগমারা সীমানার মধ্যে অবস্থিত হলেও ওই বিলের কিছু অংশে পাশর্^বর্তী দুর্গাপুর উপজেলার গোপালপুর গ্রামের কিছু কৃষকের ব্যক্তি মালিকানাধীন জমিও রয়েছে। সম্প্রতি চাঁইপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে স্কুলের উন্নতিকল্পে ওই বিলে মাছ চাষের প্রতিশ্রæতি দিয়ে গাওড়া বিলের মধ্যে অবস্থিত সরকারি খাসজমি উপজেলা জলমহাল ইজারা কমিটি কর্তৃক সরকারিভাবে লিজ নেওয়া হয়। কিন্তু স্কুলের নামে বিলটির সরকারি খাসজমি লিজ নেওয়া হলেও বর্তমানে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে ওই বিলে মাছ চাষ করছেন শ্রীপুর ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি রহিদুল ইসলাম।
গতকাল সোমবার সরজমিনে ওই বিলে গিয়ে দেখা গেছে, ওই বিলে মাছ চাষের সুবিধার জন্য বিলের স্বাভাবিকভাবে পানি চলাচল ও প্রাকৃতিক মাছ প্রবেশের পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এতে জলাবদ্ধতার কারণে ওই বিলের সমস্ত জমিতে চাষবাদ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এছাড়া অতিরিক্ত জলাবদ্ধতার কারণে ওই বিল সংলগ্ন চাঁইপাড়া ও গোপালপুর গ্রামের অনেক পরিবারের বাড়িঘর এখন হুমকির মুখে পড়েছে। তাছাড়া ওই বিলের চারপাশে অবস্থিত ফলজ ও বনজ গাছের বাগানসহ অর্ধশতাকি কৃষকের পানবরজ জলাবদ্ধতার কারণে নষ্ট হয়ে গেছে। গোপালপুর গ্রামের গরীব কৃষক আহাদ আলী, আব্দুল হালিম ও ঝড়– শাহ অভিযোগ করে বলেন, স্কুল কর্তৃপক্ষ ওই বিলে মাছ চাষের বিনিময়ে বিলের চারদিকে মাটির বাঁধ দিয়ে তাদের বাড়িঘর এবং পানবরজ ও ভিটা জমি রক্ষা করে দেওয়ার প্রতিশ্রæতি দিয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীতে স্কুল কর্তৃপক্ষ তা না করায় তাদের বাড়িঘর ও পান বরজ এখন হুমকির মুখে পড়েছে।
এ বিষয়ে চাঁইপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দেলোয়ার হোসেন বলেন, সরকারি কাগজপত্র অনুযায়ী তিন বছরের জন্য বিলটি স্কুলের নামে লিজ নেওয়া হলেও পরবর্তীতে তা তিন লাখ টাকার বিনিময়ে শ্রীপুর ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি রহিদুল ইসলামের নামে স্কুলের পক্ষ থেকে সাব লিজ দেওয়া হয়েছে। ওই সময় বিলের চারদিকে মাটির বাঁধ দিয়ে কৃষকদের বাড়িঘর, পানবরজ ও ভিটা জমি রক্ষা করে দেওয়ার জন্য সাব লিজ গ্রহিতা রহিদুল ইসলামকে বলা হয়েছিল। কিন্তু তিনি তা না করায় স্থানীয় লোকজনের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। স্কুলের সভাপতি জাকিরুল ইসলামও একই ধরণের মন্তব্য করেন। তবে গাওড়া বিলের সাব লিজ গ্রহিতা রহিদুল ইসলাম এই প্রতিশ্রæতির কথা অস্বীকার করে বলেছেন, ওই বিল সাব লিজ গ্রহনের সময় এ ধরণের কথা তাকে কেউ বলেনি।
এ প্রসঙ্গে বাগমারা উপজেলা জলমহাল ইজারা কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুবুল ইসলাম বলেন, স্কুলের উন্নতিকল্পে মাছ চাষের প্রতিশ্রæতি দিয়ে খাসজমি সরকারিভাবে লিজ নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমোতি ছাড়া অন্য কাউকে সাব লিজ দেওয়ার বিধান নাই। এই নিয়ন অমান্য করলে প্রমান সাপেক্ষে সেই লিজ বাতিল করা হবে।

jn

আরো দেখুনঃ