সোনারগাঁয়ে বৈদ্যেরবাজার ইউপি নির্বাচনে দুই স্বতন্ত্র প্রার্থীর মধ্যে হবে লড়াই
সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি।।
চতুর্থ ধাপে আগামী ২৬ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার বৈদ্যের বাজার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে এবারও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে লড়াই হবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় ভোটার ও নির্বাচন বিশ্লেষকরা।
তারা জানান ভোটাররা যদি নির্বিঘ্নে তাদের ভোট দিতে পারে তবে ২০১৬ সালের নির্বাচনের পুনরাবৃত্তি হবে এতে কোন সন্দেহ নেই। তবে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনীত প্রার্থীর নির্বাচন নিয়ে ভোটারদের মধ্যে তেমন কোনো সাড়া নেই। নৌকা প্রতিকের প্রার্থীর পক্ষে তরুনরা মাঠে নামলেও বয়োজ্যষ্ঠ্য ভোটাররা স্বতন্ত্র প্রার্থীকেই বেছে নেওয়ার পক্ষে।
জানা যায়, উপজেলার বৈদ্যেরবাজার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান ডা. আব্দুর রউফ ও মাহবুব সরকার দু’জনই শক্ত প্রার্থী হওয়ায় ভোটের লড়াই বেশ হাড্ডাহাড্ডি হবে বলে জানিয়েছেন ভোটাররা। তবে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনীত প্রার্থী আল-আমিন সরকার যদি কোন চমক দেখাতে না পারেন তবে গত নির্বাচনের মতো এবারও নৌকার ভরাডুবির আশঙ্কা করছেন স্থানীয় ভোটাররা। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের আল আমিন সরকার মনোনয়ন লাভ করলেও সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের মাঝে রয়েছে নানা অন্তর্দ্বন্দ্ব থাকায় নেতাকর্মীরা রয়েছেন নিরব ভুমিকায়।
বৈদ্যেরবাজার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে হামছাদী, হামছাদী ধনপুর, বৈদ্যের বাজার ও দামোদরদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কারিমিয়া মাদ্রাসা সহ ৬টি কেন্দ্র অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ বলে জানিয়েছেন সাধারন ভোটার ও স্বতন্ত্রপ্রার্থীরা। তারা অভিযোগ করে বলেন, নৌকার এজেন্টদের সামনে প্রকাশ্যে নৌকা প্রতিকে সিল মারতে নৌকার প্রার্থী ও সমর্থকরা ভোটারদের নানা হুমকি ও ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন।
গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী আল-আমিন সরকারের নৌকা প্রতিককে তৃতীয় অবস্থানে রেখে মাহবুব সরকারের আনারস প্রতিককে মাত্র ২৯ ভোটে পরাজিত করে বৈদ্যের বাজার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ডা. আব্দুর রউফ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
এদিকে মাহবুব সরকার দীর্ঘদিন ধরেই আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। স্থানীয় ভোটাররা জানান, নির্বাচনে নিরপক্ষে ও সুষ্ঠু হলে এবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী আল আমিন সরকার ভোটের মাঠে তৃতীয় হবে। আর স্বতন্ত্র দুই প্রার্থী ডা: আব্দুর রউফ ও মাহাবুব সরকারের মধ্যে অল্প ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হবেন। তারা দাবি করছেন, মাহাবুব হোসেন সরকার ও ডা: আব্দুর রউফ দুজনেই সাবেক চেয়ারম্যান থাকার কারনে সাধারন মানুষের মধ্যে সুসম্পর্ক রয়েছে। ভোটের মাঠে মাহাবুব সরকার ও ডা: আব্দুর রউফ আওয়ামী লীগ প্রার্থী আল আমিন সরকারের চেয়ে অনেক এগিয়ে রয়েছে।
ডা. আব্দুর রউফ বলেন, আমি সবসময় মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করেছি। আগামী দিনেও জনগণের সেবায় নিজেকে বিলিয়ে দিতে চাই। তিনি আরো জানান, বর্তমান মেয়াদে তার অসমাপ্ত এবং পরিকল্পনাধীন কাজগুলো সমাপ্ত করে বৈদ্যের বাজার ইউনিয়নকে একটি উন্নত, পরিকল্পিত ও বাসযোগ্য ইউপি হিসেবে তিনি গড়ে তুলতে চান। এ জন্য তিনি আগামী ২৬ ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে ভোটারদের দোয়া ও সমর্থন কামনা করেছেন।
মাহবুব সরকার বলেন, আমি চেয়ারম্যান থাকার সময় সুখে দু:খে মানুষের পাশে ছিলাম। গত নির্বাচনে আমি ২৯ ভোটে পরাজিত হই। সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে আমার বিজয় সুনিশ্চিত। আমি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় ভোটারদের মধ্যে যে উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা গেছে তাতে প্রমাণিত হয় আমার জয় অপ্রতিরোধ্য।
সোনারগাঁ থানার ওসি মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান বলেন, সোনারগাঁয়ে ইতিমধ্যে আমরা অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভাবে নির্বাচন করে প্রমান করেছি নির্বাচন হবে শান্তিপূর্ণ। যারা পেশি শক্তি প্রদর্শন করতে প্রস্তুতি নিচ্ছেন নির্বাচনে তাদের ছাড় দেওয়া হবে না।
সোনারগাঁ উপজেলার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা গোলাম মুস্তাফা মুন্না জানিয়েছেন, ইতিমধ্যে আমরা ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলো চিহিৃত করেছি। সুষ্ঠু নির্বাচন করতে প্রশাসন কঠোর অবস্থানে থাকবে। প্রতিটি কেন্দ্রে পর্যাপ্ত পরিমান আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়োজিত থাকবে।